بسم الله
الرحمن الرحيم
জবাব,
আরব মুশরিকদের একটা বদ অভ্যাস ছিল, কোনো বিপদ বা পরীক্ষায় পতিত হলে সময়কে গালি দিত। সম্প্রতি দেখা
যাচ্ছে,
করোনাসহ নানা প্রতিকূল পরিস্থিতি আসার কারণে অনেকে ২০২১ সালকে
অভিশপ্ত বলে গালি দিচ্ছে। এটি গুনাহের কাজ। কেননা সময়ের ভালো ও মন্দ পরিবর্তন করেন
স্বয়ং মহান আল্লাহ। তাই সময়কে গালি দিলে সেটা আল্লাহকে গালি দেওয়ার নামান্তর।
মহান আল্লাহ পৃথিবীসহ প্রত্যেক গ্রহ-নক্ষত্রের
জন্য সময়ের ভিন্ন ভিন্ন সীমা নির্ধারণ করেছেন, তেমনি পরকালের জন্য স্বতন্ত্র সময়কাল সৃষ্টি করেছেন। আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ বলেছেন, মানুষ সময়কে গালি দিয়ে
আমাকে কষ্ট দেয়। অথচ আমিই সময় (সময়ের স্রষ্টা), সব কিছুর নিয়ন্ত্রণ আমার হাতে, আমি রাত-দিনের পরিবর্তন করি।’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ৭৪৯১)
হাদীস শরীফে আছে,
قَالَ أَبُو
هُرَيْرَةَ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم يَقُولُ " قَالَ
اللَّهُ عَزَّ وَجَلَّ يَسُبُّ ابْنُ آدَمَ الدَّهْرَ وَأَنَا الدَّهْرُ بِيَدِيَ
اللَّيْلُ وَالنَّهَارُ " .
আবূ হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি
বলেন,
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে আমি বলতে শুনেছি, মহীয়ান গরীয়ান আল্লাহ বলেনঃ আদম সন্তান সময় ও কালকে গাল-মন্দ
করে,
অথচ আমিই সময়, আমার হাতেই রাত ও দিন (-এর বিবর্তন সাধিত হয়)। (সহিহ মুসলিম- ২২৪৬)
প্রশ্নকারী প্রিয় দ্বীনী ভাই/বোন!
১. যে কোন মন্দ বা খারাপ কোন বিষেয়কে যুগের সাথে
সম্পৃক্ত করে কোন গালি দেওয়াকে নিষেধ করা হয়েছে। সুতরাং প্রশ্নেল্লিখিত কথাগুলি না
বলাই শ্রেয়।
২. যদি সালাম ফেরানোর পরে এমন কোন কাজ না করেন যার
দ্বারা নামাজ নষ্ট হয়ে যায়, তাহলে প্রশ্নে বর্ণিত পন্থায় দুই সিজদা করলে আপনার নামাজ
হয়ে যাবে।
৩.ফরয নামাযের প্রথম রাকাতে সূরা নাস
পড়ে ফেললে, দ্বিতীয় রাকাতেও সূরা
নাস পড়া উচিত। তবে ইচ্ছাকৃত ভাবে ফরযের উভয় রাকাতে একই সূরা পড়া অনুত্তম। (আততাজনীস ১/৪৬৭; ফাতাওয়া বাযযাযিয়া ৪/৪০; রদ্দুল মুহতার ১/৫৪৬, তাতারখানিয়া: ২/৬৮)
৪.স্বাভাবিক নিয়মে আমরা সকালবেলা বলতে
ফজর নামাজের পর থেকে সুর্য ওঠা পর্যন্ত বুঝি। কিন্তু সন্ধ্যা বলতে আসলে কোন সময়টুকু
সেটা বুঝতে সমস্যা হয়। এই সময়টা আসরের পর নাকি মাগরিবের পর- এটা নিয়ে এক ধরণের দ্বিধায়
ভোগেন অনেকে।
এর সামধানে ইসলামি স্কলাররা বলেছেন, সন্ধ্যা বলতে সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্তকেই বুঝানো হয়। সূর্যাস্তের
পর থেকে রাত শুরু হয়ে যায়। তাই সন্ধ্যার জিকিরের সুন্নাহসম্মত সময় হলো- সূর্যাস্তের
পূর্ব মুহূর্তে।
আল্লাহওয়ালা বুজুর্গরা এ সময়েই সান্ধ্যকালীন
জিকির করার কথা বলেছেন, তাগাদাও দিয়েছেন। কিন্তু
এ সময়ে যদি কেউ জিকিরগুলো আদায় করতে না পারেন- তাহলে তার ক্ষেত্রে মাগরিবের নামাজের
তা আদায় করার সুযোগ রয়েছে। কোরআনের কারিমের বিভিন্ন আয়াত ও হাদিস থেকে এটাই প্রমাণিত
হয়।