আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
792 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (34 points)

 37 minutes ago by Jinnat (0 points)

 

 আসসালামু আলাইকুম।হুজুর, আমার মনে কিছু বিষয় নিয়ে অশান্তি হচ্ছে।শর্তযুক্ত তালাকের শর্ত একবার পাওয়া যাওয়ার পর ১ তালাকে বায়েন পতিত হলে, পুনরায় বিয়ে পরানোর আগে আবার শর্ত পাওয়া গেলে আবারও ১ তালাকে বায়েন পতিত হবে? নাকি আগের ১ টাই বহাল থাকবে? আমি শুনেছি ১ তালাকে বায়েন পতিত হলে পুনরায় বিয়ের আগে আর তালাকে বায়েন পতিত হয়না,  শর্তযুক্ত তালাকের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কিনা। দয়া করে উত্তর দিবেন।

#একদিন আমার স্বামী আমাকে বলেন একটা বিষয় নিয়ে কথা না বলতে,  বলেন যে এই বিষয়ে আর কোনোদিন কিছু বলবা না আমার কাছে, বললে ভাববা ওইদিনই সব শেষ। এই কথা বলার সময় সে তালাক বুঝায় নি বা নিয়তও করেনি। রাগ করে বলেছেন।  কিন্তু আমার ওয়াসওয়াসার কারণে আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, তুমি এই কথার মাধ্যমে অন্য ধরনের কিছু বুঝালে কিন্তু শর্ত আরোপ হয়ে যাবে। তুমি ওই ধরনের কিছু ভেবে বলোনি তো? সে আসলে এই বিষয়ে জানতোই না শর্ত দেওয়া যায় বা তালাকের নিয়ত করতে হয় তাই আমার প্রশ্নে সে খুবই বিরক্ত হয়। তারপর আমি আবার জিজ্ঞেস করি তুমি সিরিয়াস কিছু ভেবে বলোনি তো? সে রাগ করে বলে হ্যাঁ বলেছি, তো কি হয়েছে?এইটুকুও বুঝে নিতে পারো না যে আমি ওই ধরনের কিছু ভাবিনি, কেন বার বার জিজ্ঞেস করো? 

এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে তার এই রাগ করে হ্যাঁ বলেছি, বলার কারনে কি তালাকের মিথ্যা স্বীকারোক্তি দেওয়া হয়েছে আর আমার উপর তালাকের শর্ত আরোপ হয়ে গেছে? যে বিষয়ে কথা বললে সব শেষ বলেছিল সে বিষয়ে কথা হলে কি তালাক পতিত হবে? 

ওইদিন এর পর সে বিষয়ে আমার স্বামী নিজেও আমার সাথে কথা বলেছেন কয়েকবার। এখন আমি ভয়ে আছি আমার উপর কি শর্ত আরোপ হয়েছিল কিনা আর ওই বিষয়ে কথা বলার কারনে  প্রতিবারই কি আমার উপর তালাকে বায়েন পতিত হবে? নাকি ১ বার কথা বলার পর শর্ত শেষ হয়ে যাবে? দয়া করে উত্তর দিবেন।

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
শর্তের মাধ্যমে তালাক প্রদাণের জন্য নিম্নোক্ত হরফ ব্যবহার করা হয়ে থাকে।যথা-
(১)إنْ-যদি
(২)َإِذَا-যখন
(৩)َإِذْمَا-যখন
(৪)َكُلُّ-সব
(৫)َكُلَّمَا-যখনই
(৬)مَتَى-যখন
(৭)مَتَى مَا-যখন
বাক্যর প্রারম্ভে এ সকল শব্দ প্রয়োগ করে কোনো কাজের সাথে সম্পর্কিত করে তালাক প্রদাণ করলে যখনি উক্ত শর্ত পাওয়া যাবে,তখন তাৎক্ষণাৎ তালাক পতিত হয়ে উক্ত শর্তযুক্ত বাক্য বিনষ্ট হয়ে যাবে।পরবর্তীতে একাজের পূনরাবৃত্তি ঘটলে আর তালাক পতিত হবে না।তবে শুধুমাত্র ৫ নং বাক্য এর বিপরিত।এটা ব্যবহার করলে যখনই শর্ত পাওয়া যাবে তখনই তালাক পতিত হতে থাকবে।যতক্ষণ না উক্ত বিয়ে বন্ধন শেষ হচ্ছে।শরীয়া মোতাবেক দ্বিতীয়বার উক্ত স্বামী উক্ত স্ত্রীকে বিয়ে করলে তখন আর তালাক পতিত হবে না।(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৪১৫) বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন- https://www.ifatwa.info/1237

https://www.ifatwa.info/1049 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,

ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়ায় বর্ণিত রয়েছে,
وفي حالة الغضب يصدق في جميع ذلك لاحتمال الرد والسب إلا فيما يصلح للطلاق ولا يصلح للرد والشتم كقوله اعتدي واختاري وأمرك بيدك فإنه لا يصدق فيها كذا في الهداية...............  وفي الينابيع ألحق أبو يوسف - رحمه الله تعالى - بالخمسة ستة أخرى وهي الأربعة المتقدمة وزاد خالعتك والحقي بأهلك هكذا في غاية السروجي.
রাগের অবস্থাঃ-
রাগের অবস্থায় স্বামী তালাকের নিয়তকে অস্বীকার করলে স্বামীর উক্ত বক্তব্য-কে সত্যায়ন করা হবে।কেননা সেই শব্দ সমূহে গালিগালাজ ও স্ত্রীর তালাকের আবেদন-কে  ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।
তবে যেই সমস্ত শব্দাবলীতে শুধুমাত্র তালাকের অর্থ বিদ্যমান রয়েছে।গালিগালাজ বা (স্ত্রীর তালাকের আবেদন) ফিরিয়ে দেয়ার অর্থ বিদ্যমান না থাকে,তাহলে সেই সমস্ত শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকার-কে সত্যায়ন করা হবে না।বরং তালাক পতিত হবে।
যেমন- তুমি ইদ্দত গণনা করো,তুমি পছন্দ করো,তোমার বিষয় তোমার হাতে, ইত্যাদি।সুতরাং এমন শব্দাবলীর বেলায় স্বামীর অস্বীকারকে সত্যায়ন করা যাবে না,বরং তালাক পতিত হবে।(হেদায়া) ইমাম আবু ইউসুফ রাহ পূর্ববর্তী পাঁচের সাথে আরো দুইটি শব্দ সংযোগ করেন,তখন সর্বমোট ছয়টি শব্দ হয়।সেই দুইটি হল,আমি তোমার সাথে খোলা করলাম,তুমি তোমার পরিবারবর্গের সাথে মিলিত হয়ে যাও।(গায়াতুস-সুরুজী))(ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/৩৭৫)

'গার্জিয়ানকে ডাকো, তোর আর সাথে সংসার করবো না'
এরকম কথাবার্তা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। সুতরা এমন কথা স্বামী তালাকের নিয়তে বললে তালাকে বায়েন বায়েন পতিত হবে।এক তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাক,আর তিন তালাকের নিয়ত থাকলে তিন তালাক পতিত হবে।আর ভয়প্রদর্শনের নিয়তে বললে অবশ্যই তালাক পতিত হবে না(কিতাবুন-নাওয়াযিল-৯/৪৫১)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
আপনার স্বামীর শর্তযুক্ত কথা "শেষ করে দেবো" এটা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভুক্ত। কেনায়া তালাকের জন্য নিয়ত প্রয়োজন, সুতরাং প্রশ্নের বিবরণমতে যেহেতু স্বামীর ইচ্ছা বা তালাকের নিয়ত নাই, তাই তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (597,330 points)
–1
সংযোজন ও সংশোধন করা হয়েছে।
by (34 points)
–1
আসসালামু আলাইকুম।  অপরাধ নিবেন না৷ আমার স্বামীর নিয়ত ছিল না কথা টা বলার সময়, কিন্তু আমি বার বার জিজ্ঞেস করার কারণে সে  "  হ্যাঁ বলেছি",  মানে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম তুমি সিরিয়াস কোনো কিছু ভেবে বলো নি তো তাহলে কিন্তু সমস্যা হবে। এই কথা টা কয়েকবাএ জিজ্ঞেস করার কারণে সে এই কথা বলেছে। এই  কথা বলার কারনে কোনো সমস্যা হবে না তো? মানে এই কথার জন্য কি তার আগের কথার সাথে নিয়ত যুক্ত হয়ে যাবে বা শর্ত আরোপ হবে?  সে প্রথমে নিয়ত করেনি কথাটা বলার সময়৷ কষ্ট করে উত্তর দিবেন দয়া করে। 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...