আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
613 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম।
আমার সমস্যার বিষয় টি হোলো..

 আমি একটি হারাম সম্পর্কে জড়িত ছিলাম।  হারাম সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার জন্য আমি আমার বাবা মা কে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলি। কারণ আমার বড় বোনের বিয়ে হয়নি, আর বাবা মা আমাকে এখন কোনোভাবেই বিয়ে দিবে না। আমার বয়স ২৮ এর কাছাকাছি।  আমি বিয়ের জন্য পরিবার কে অনেক মানানোর চেষ্টা করলেও তারা বড় বোন কে বিয়ে না দিয়ে আমাকে বিয়ে দিবেনা। আর বড় বোনের ও বিয়ে কবে হবে তার কোনো সময় দিন বোঝার উপায় নেই। তাই বাধ্য হয়ে বাবা মা কে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলেছি। উল্লেখ্য যে আমি হানাফি মাযহাব এর ভিত্তিতে বিয়ে টা করেছি। তবে বিয়ের শুরু থেকেই মনে হচ্ছিল কাজ টা ঠিক করছি কিনা। বাবা মা কে কখনও কষ্ট দিতে চাইনা। আপুর বিয়ে হয়ে গেলে আমি বাবা মা কে তখন রাজী করিয়ে আবারো উনার সাথেই দ্বিতীয় বার পুনরায় বিয়ে করবো বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এখন আমার ভেতরে পু্র্বের তুলনায় আরো বেশি অনুশোচনা কাজ করছে। আল্লাহ কে নারাজ করে ফেললাম কিনা। হানাফি মাজহাব এর ভিত্তিতে বিয়ে করলেও এই বিয়ে তে স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক অধিকার চাহিদা গুলো আদায় করা ঠিক হচ্ছে কিনা এটা নিয়ে একটু confusion এ আছি। আমার প্রশ্ন হচ্ছে আমি তো বিয়ে টা করে ফেলেছি যেহেতু বাবা মা বিয়ে দিবেনা এখন দিলেও অনেক দেরীতে দিতো। আমার বয়স ২৮ হয়ে যাচ্ছে,  বিয়ে করার চাহিদা,  আর হারাম সম্পর্ক থেকে বের হওয়ার জন্য বাধ্য হয়ে যে করেছি, এখন যে অনুশোচনা কাজ করছে। এটার জন্য করনীয় কি আমার.? আমার কি বিয়ে টা একদম হয়নি? উল্লেখ্য যে ছেলের পরিবার বিয়ের বিষয়ে জানে এবং মেনে নিয়েছে। ছেলের পরিবার থেকে মোহরানা আংশিক শোধ হয়েছে। কিন্তু আমার মনে অনুশোচনা কাজ করছে, এই বিয়ে তে স্বামী-স্ত্রীর অধিকার আদায় করা ঠিক হবে কি..? প্রচন্ড হতাশা কাজ করছে।  এমতাবস্থায় আমার করনীয় কি.?

দয়া করে জানাবেন।
জাযাকিল্লাহু খইরন।
by
আমি এক তালাকপ্রাপ্তা মেয়েকে তার ইদ্দত পালন অর্থাৎ ৩ হায়েজ পার না হওয়ার আগেই বিয়ে করেছি।সেক্ষেত্রে বিয়ে কি শুদ্ধ হয়েছে? শুদ্ধ না হলে আমার কি করণীয়?  আমার ভিতরে খুব হতাশা কাজ করছে কি করব ভেবে পাচ্ছি না।বিয়ে কি আবার করব?  তার ফ্যামিলি বলছে তার মেয়ের বিয়ে দিবে না আর আমার সাথে।

1 Answer

0 votes
by (573,870 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


শরীয়তের বিধান হলো যদি দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সমঝদার সাক্ষ্যির সামনে প্রাপ্ত বয়স্ক পাত্র ও পাত্রি যদি প্রস্তাব দেয় এবং অপরপক্ষ তা গ্রহণ করে নেয়, তাহলে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যায়। অভিভাবকের সম্মতি থাকুক বা না থাকুক। অভিভাবক জানুক বা না জানুক।

তবে যদি গায়রে কুফুতে বিবাহ করে, তথা এমন পাত্রীকে বিবাহ করে, যার কারণে ছেলে বা মেয়ের পারিবারিক সম্মান বিনষ্ট হয়, তাহলে পিতা সে বিয়ে আদালতের মাধ্যমে ভেঙ্গে দিতে পারে। যদি কুফুতে বিবাহ করে, তাহলে পিতা এ অধিকারও পাবে না।
,
রাসুল সাঃ কুফু মিলাইতে বলেছেনঃ
 
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «تُنْكَحُ الْمَرْأَةُ لِأَرْبَعٍ : لِمَالِهَا وَلِحَسَبِهَا وَلِجَمَالِهَا وَلِدِينِهَا فَاظْفَرْ بِذَاتِ الدَّيْنِ تَرِبَتْ يَدَاكَ»

আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ (মূলত) চারটি গুণের কারণে নারীকে বিবাহ করা হয়- নারীর ধন-সম্পদ, অথবা বংশ-মর্যাদা, অথবা রূপ-সৌন্দর্য, অথবা তার ধর্মভীরুর কারণে। (রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন) সুতরাং ধর্মভীরুকে প্রাধান্য দিয়ে বিবাহ করে সফল হও। আর যদি এরূপ না কর তাহলে তোমার দু’ হাত ধূলায় ধূসরিত হোক (ধর্মভীরু মহিলাকে প্রাধান্য না দিলে ধ্বংস অবধারিত)!
(সহীহ বুখারী ৫০৯০, মুসলিম ১৪৬৬, নাসায়ী ৩২৩০, আবূ দাঊদ ২০৪৭, ইবনু মাজাহ ১৮৫৮, আহমাদ ৯৫২১, ইরওয়া ১৭৮৩, সহীহ আল জামি‘ ৩০০৩।)

কুফু সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ  https://www.ifatwa.info/4541/

★সুতরাং আপনারা উভয়ে যদি প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক সাক্ষ্যির উপস্থিতিতে বিয়ের প্রস্তাব ও প্রস্তাব গ্রহণ সম্পন্ন করেন, তাহলে আপনাদের বিয়ে ইসলামী শরীয়াহ মুতাবিক শুদ্ধ হয়ে যাবে।
যদিও আপনাদের পরিবার কিছুই না জানে বা রাজি না থাকে। কিংবা তারা অনুমতি নাও দিয়ে থাকে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ  

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَبَّاسٍ؛ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم، قَالَ: «الْأَيِّمُ أَحَقُّ بِنَفْسِهَا مِنْ وَلِيِّهَا.

হযরত আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মেয়ে তার ব্যক্তিগত বিষয়ে অভিভাবকের চেয়ে অধিক হকদার। {মুয়াত্তা মালিক, হাদীস নং-৮৮৮, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪২১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-১৮৮৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-২০৯৮, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২২৩৪, সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-১১০৮, সুনানে নাসায়ী, হাদীস নং-৩২৬০, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪০৮৪, সুনানে দারাকুতনী, হাদীস নং-৩৫৭৬}

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে আপনারা যদি দুইজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সাক্ষীর সামনে ইজাব (বিবাহের প্রস্তাব পেশ) কবুল করে থাকেন,তাহলে আপনাদের এই বিবাহ শুদ্ধ হয়ে হিয়েছে।
এই বিবাহের স্বামী স্ত্রী অধিকার আদায় পুরোপুরি ঠিক হবে।
কোনো সমস্যা নেই।
এই ঘর সংসার বৈধ।
,
এখন যাবতীয় টেনশন ঝেড়ে ফেলে দিয়ে সিংসারে মনোযোগী হোন,এবং সময় সুযোগ নিয়ে আস্তে-ধীরে বিষয়টি আপনার পরিবারকে জানাবেন।       


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...