জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম
(১.২)
★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,
শরীয়তের মাতা পিতার বৈধ আদেশ মানার আবশ্যকীয়তা সম্পর্কে,এবং মাতা পিতার খেদমতের ব্যাপারে,তাদের কষ্ট না দেওয়ার ব্যাপারে কঠোর বিধান আছে।
তবে মাতা পিতার কোনো কথা যদি বাস্তবতার বিরোধী হয়,বা মিথ্যা ধোকা মূলক হয়,সেই কথা বিশ্বাস করা যাবেনা।
সত্য সমস্ত কথাই বিশ্বাস করতে হবে।
,
মাতা পিতা যদি মিথ্যা কথা বলে,সেই মিথ্যার বিষয় যদি সন্তান জানতে পারে,তাহলে সন্তান সেটি বিশ্বাস করবেনা।
পবিত্র কুরআন শরিফে এসেছে
لَّعْنَتَ اللَّهِ عَلَى الْكَاذِبِينَ [٣:٦١
তাদের প্রতি আল্লাহর অভিসম্পাত করি যারা মিথ্যাবাদী। {সূর আলেইমরান-৬১}
হাদিস শরিফে এসেছে,
সাফওয়ান ইবন সুলাইম বলেন,
قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ ﷺ : أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ جَبَانًا ؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ بَخِيلًا؟ فَقَالَ: ( نَعَمْ ) ، فَقِيلَ لَهُ: أَيَكُونُ الْمُؤْمِنُ كَذَّابًا ؟ فَقَالَ: ( لَا )
রসুলুল্লাহ ﷺ -কে জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কাপুরুষ হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি কৃপণ হতে পারে। তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। জিজ্ঞেস করা হয়েছে, মুমিন কি মিথ্যাবাদী হতে পারে? তিনি উত্তর দিলেন, না। (মুয়াত্তা মালিক ২/৯৯০)
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ غَشَّنَا فَلَيْسَ مِنَّا»
হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যে ধোঁকা দেয়, সে আমার উম্মতের অন্তর্ভূক্ত নয়। {মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-২৩১৪৭, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৬৪, সুনানে দারেমী, হাদীস নং-২৫৮৩, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-২২২৫, সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং-৪৯০৫}
قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «الْمُسْلِمُونَ عَلَى شُرُوطِهِمْ
হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ মুসলমানগণ তার শর্তের উপর থাকবে। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৯৪, সুনানে দারা কুতনী, হাদীস নং-২৮৯০, শুয়াবুল ঈমান, হাদীস নং-৪০৩৯}
(৩.৪)
শুধুমাত্র ধারণার ভিত্তিতে কোনো আপনার জন্য বাস্তবাতার বিরোধী অন্য কিছু বিশ্বাস করতে হবেনা।
,
★আপনার আত্মীয় স্বজন যদি সত্যিই এহেন কথা বলে,ঐ সময় যদি আপনার বাবা মা বিষয়টি অস্বীকার করে,তারা যদি বলে যে আত্মীয়দের কথাই মিথ্যা,আমাদের কথাই সঠিক,নিজের সন্তান দাবীর উপরেই যদি তারা বহাল থাকে।
তাহলে এক্ষেত্রে শরীয়তের নিয়ম মেনে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
যারা দাবী করেছিলো যে আপনি এই মায়ের ঔরসজাত সন্তান নন,তারা এই দাবীর উপর প্রমান সাক্ষী হাজির করবে।
যদি তারা সত্য প্রমান সাক্ষী হাজির করতে না পারে,তাহলে আপনার বাবা মা আল্লাহর নামে শপথ করে বলবে যে আপনি তাদেরই সন্তান।
আপনার বাবা মা কসম করলে আত্মীয়দের দাবী মিথ্যা বলে সাব্যস্ত হবে।
আপনার বাবা মার কথাই সত্য বলে প্রমানীত হবে।
এটা কখনো কোনোভাবে পরিবর্তন হবেনা।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، أَنْبَأَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، وَغَيْرُهُ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ عُبَيْدِ اللَّهِ، عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ، عَنْ أَبِيهِ، عَنْ جَدِّهِ، أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم قَالَ فِي خُطْبَتِهِ " الْبَيِّنَةُ عَلَى الْمُدَّعِي وَالْيَمِينُ عَلَى الْمُدَّعَى عَلَيْهِ "
আমর ইবনু শুআইব (রাহঃ) হতে পর্যায়ক্রমে তার বাবা ও দাদার সূত্রে বর্ণিত আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার এক ভাষণে বলেছেনঃ বাদীর দায়িত্ব হচ্ছে সাক্ষী-প্রমাণ হাযির করা এবং বিবাদীর দায়িত্ব হচ্ছে শপথ করা।
(তিরমিজি ১৩৪১)
★শুধুমাত্র নিছক ধারনার বশবর্তী হয়ে আপনি কিছু করবেননা।
আপনার বাবা মার কথাকেই বিশ্বাস করবেন।
আর যদি আপনার আত্মীয় স্বজন সত্যিই এহেন কথা দাবী করে,তখন শরীয়তের উপরোক্ত নিয়ম অনুযায়ী কাজ করবেন।