আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
2,017 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (15 points)
১. যদি কেউ দাবি করে কোনো মাজহাব পুরোপুরি সঠিক না, তবে তার দাবি কি যুক্তিযুক্ত?
২. হানাফি মাজহাবে কি কোনো ভুল আছে?

৩. (আমি জানি, যে কোনো এক মাজহাব ফলো করলেই হয়ে যাবে। কিন্তু কেউ যদি বলে হানাফি মাজহাবে সব ঠিক নেই, তবে কি করা যায়?)
by (31 points)
আস সালামু আলাইকুম ভাই,

এই দুটি পিডিএফ পড়ুন। ইনশা আল্লাহ মাজহাব সম্পর্কে সকল প্রশ্নের অবসান ঘটবে। 

1 Answer

0 votes
by (597,330 points)
জবাবঃ-
ইবনে ‘উমর (রাযি.) হতে বর্ণিত।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم صلى الله عليه وسلم لَنَا لَمَّا رَجَعَ مِنَ الأَحْزَابِ " لاَ يُصَلِّيَنَّ أَحَدٌ الْعَصْرَ إِلاَّ فِي بَنِي قُرَيْظَةَ ". فَأَدْرَكَ بَعْضُهُمُ الْعَصْرَ فِي الطَّرِيقِ فَقَالَ بَعْضُهُمْ لاَ نُصَلِّي حَتَّى نَأْتِيَهَا، وَقَالَ بَعْضُهُمْ بَلْ نُصَلِّي لَمْ يُرَدْ مِنَّا ذَلِكَ. فَذُكِرَ لِلنَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم فَلَمْ يُعَنِّفْ وَاحِدًا مِنْهُمْ.
তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আহযাব যুদ্ধ হতে ফিরার পথে আমাদেরকে বললেন, বনূ কুরাইযাহ এলাকায় পৌঁছার পূর্বে কেউ যেন ‘আসর সালাত আদায় না করে। কিন্তু অনেকের রাস্তাতেই আসরের সময় হয়ে গেল, তখন তাদের কেউ কেউ বললেন, আমরা সেখানে না পৌঁছে সালাত আদায় করব না। আবার কেউ কেউ বললেন, আমরা সালাত আদায় করে নেব, আমাদের নিষেধ করার এ উদ্দেশ্য ছিল না (বরং উদ্দেশ্য ছিল তাড়াতাড়ি যাওয়া) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর নিকট এ কথা উল্লেখ করা হলে, তিনি তাঁদের কারোর ব্যাপারে কড়াকড়ি করেননি।(সহীহ বুখারী-৯৪৬)

উক্ত হাদীস দ্বারা বুঝা যায় যে, একই মাস'আলায় বিভিন্ন মুজতাহিদের বিভিন্ন মতামত গ্রহণযোগ্য। কেননা রাসূলুল্লাহ সাঃ কোনো দলকেই তিরস্কার করেননি।

একই মাস'আলায় আল্লাহ নিকট সকল মুজতাহিদ হক? না কি একজনের মতামত হক এবং বাদবাকী অন্যান্যর মতামত অগ্রহণীয়?

এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম মনে করেন,আল্লাহর নিকট একজনের টা গ্রহণযোগ্য আর বাদবাকীদের টা গ্রহণযোগ্য নয়।তবে এর উপর যারা আমল করবে তারা সবাই সওয়াব পাবে।

মাওয়ারদি রাহ লিখেন,
وذهب أبو حنيفة ومالك والشافعي وأكثر الفقهاء إلى أن الحق في أحد الأقوال، ولم يتعين لنا وهوعند الله متعين لاستحالة أن يكون الشيء الواحد حلالاً وحراماً 
ইমাম আবু হানিফা রাহ,মালিক রাহ, শা'ফেয়ী রাহ,এবং অধিকাংশ ফুকাহায়ে কেরাম বলেন,সমস্ত মতামতের মধ্যে আল্লাহর নিকট হক একটিই।তবে সেটা আমাদের জন্য নির্দিষ্ট নয়।কেননা এক জিনিষ হালাল এবং হারাম উভয় হতে পারে না।(কেননা কখনো এক জিনিষকে কোনো এক ইমাম হালাল বললেও অন্য ইমাম হারাম বলে থাকেন)
(ইরশাদুল ফুহুল-শাওকানী-৩৮৫)

অন্যদিকে কিছু সংখ্যক উলামায়ে কেরাম মনে করেন,সকল মতামতই আল্লাহর কাছে হক ও গ্রহণযোগ্য।


আমর ইবনে আস রাযি থেকে বর্ণিত
عن عمرو بن العاص، أنه سمع رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول: «إذا حكم الحاكم فاجتهد ثم أصاب فله أجران، وإذا حكم فاجتهد ثم أخطأ فله أجر»، 
তিনি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছেন,যদি কোনো বিচারক বিচার করেন,এবং ইজতেহাদে সঠিক করে থাকেন,তাহলে তিনি দু'টি সওয়াব পাবেন।আর যদি ইজতেহাদে ভূল করে থাকেন,তাহলে তিনি একটি সওয়াব পাবেন।(সহীহ বুখারী-৭৩৫২)


(১)
কোনো মাযহাব পুরোপুরি সঠিক নয়,এমন কথা ঠিক নয়।বরং সকল মাযহাবই পুরোপুরি সঠিক।প্রশ্ন হতে পারে মতবিরোধ কেন?উত্তরে বলা হবে,যেভাবে সাহাবায়ে কেরাম মতবিরোধ করেছিলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ কোনো দলকেই তিরস্কার করেননি,ঠিক সেভাবে সকল মাযহাবের সমস্ত ইজতেহাদই সঠিক।

(২)
যে কোনো মাযহাবের ইজতেহাদগত খাতা বা ভূল থাকতে পারে।এটা তিরস্কারযোগ্য নয়।কেননা হাদীসে এসেছে,মুজতাহিদ ভূল করলেও এক সওয়াব পান।আর সঠিক করলে দুই সওয়াব পান।


(৩)
উলামায়ে কেরামের ইজমা রয়েছে একথার উপর যে,চার মাযহাবের যেকোনো এক মাযহাবকে ফলো করলে হয়ে যাবে।কেউ যদি বলে হানাফি মাযহাবে ভূল রয়েছে,তাকে বলবেন,হানাফি মাযহাবের কয়খানা কিতাব নিজ চোখে দেখেছেন ও পড়েছেন।অযথা বেহুদা কথা বলা উচিৎ নয়।হানাফি মাযহাব নয় যেকোনো মাযহাবে ইজতেহাদগত ভূল থাকতে পারে,সেটা ক্ষমাযোগ্য। কেননা মুজতাহিদ ভূল করলে এক সওয়াব পান।আর সঠিক করলে দুই সওয়াব পান।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...