আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
468 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (1 point)
আসসালামুআলাইকুম। উস্তাদ, আমার একটি ছেলের সাথে রিলেশন ছিলো কিন্তু ইসলামে এগুলো হারাম জানার পর তার সাথে রিলেশনছিলো না ৪-৫ বছর। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমি এতগুলোবছর পর তার সাথে আবার রিলেশনে জড়িয়ে যাই। কিন্তু আমার দ্বীনের বুঝ আল্লাহ দিয়েছেন তাই তার সাথে কথা বলার পর আমি অনেক চেষ্টা করেছি তার সাথে যেনো কথা না বলি। কিন্তু সবচেষ্টাই বৃথা যাচ্ছে। ৮মাস হয়ে গেলো আমি তার সাথে কথা বলা, দেখা করা বন্দ করতে পারছি না।খুবই কষ্ট হয় দ্বীনের বুঝ থাকার পরওও সব কিছু জানার পরওও আমি এই হারাম সম্পর্ক থেকে বের হতে পারছিনা এখন।যখন দ্বীনের বুঝ ছিলো না তখন ও আমি এত বাজে ভাবে জড়াই নি।কিন্তু এখন সব কিছু জেনে বুঝে ও খুব বাজে ভাবে জড়িয়ে গিয়েছি।গোনাহ হচ্ছ, বার বার তাওবা করছি কিন্তুবার বার বার ভংঘ হচ্ছে। নিজেরসাথে পেরে উঠছিনা।ফ্যামেলি থেকে এখন বিয়ে দিবে না।আর ফ্যামেলিতে এসব জানালে সমস্যা হবে।তাই চাচ্ছি  পরিবারকে না জানিয়ে  বিয়ে করে নিতে। এতে আমি গুনাহ থেকে বাচবো এর জন্য।  কিছু প্রশ্নের উত্তর পড়েছি সেখানে বলা হয়েছে ছেলে -মেয়ে পাপত বয়স্ক হলে ২ জন সাক্ষী সামনে বিয়ে করে নিলে হবে কোনো হুজুর বা কাজি লাগবেনা।এভাবে বিয়ে করলে কি আমার বিয়েটা শরীয়তে বৈধ হবে।যদিও আমরা সহবাস করবো না বলেছি পারিবারিকভাবে বিয়ে না হওয়া পর্যন্ত।আমি যানি বাবা মাকে না জানিয়ে এভাবে বিয়ে করা আমার ঠিক হচ্ছে না।আমি বাবা মার অবাধ্য হতে চাই না। কিন্তু বাবা মার অবাধ্য হতে চাই না এই কথা ভেবেতো আমার রবের অবাধ্য হয়ে যাচ্ছি(আসতাগফিরুল্লাহ)।তাই  কথা বলা আর দেখা করার গোনাহ থেকে বাচতেই বিয়ে করতে চচ্ছি।       উস্তাদ, আমি জানি যে,তিরমিযী শরিফের হাদিস নাবীজী(স)বলেছেন, "অভিভাবক ছাড়া যে বিয়ে হয় সেই বিয়ে বাতিল বাতিল বাতিল"   । আর বিয়ের খবর প্রচার করার কথা বলা হয়েছ। উমর(র) আমলে গুপনে বিয়ে করলে শাস্তির বিধান ছিলো আমার জানা মতে।

১)))তাই উস্তাদ এভাবে গোপনে অভিভাবক ছাড়া ২ জন সাক্ষীর সামনে মহর নিধারন করে কোনো কাগজ পত্রকরা ছাড়া বিয়ে করে নিলে কি বিয়ে টা বৈধ হবে???? সাক্ষীর একজন কাজী যেসব কথা বলে বিয়ে পরায় সেগোলো বলল আমরা কবুল বলে নিলেই কি বিয়ে হয়ে যাবে????

২)))আমার বিয়ের সময়      আমার ফ্যামেলিতে সে প্রস্তাব দিবে কিন্তু আমাদের কোনো রিলেশন ছিলো বা আমরা বিয়ে করেছি এগুলো না বলে।তখন যদি ফ্যামেলি রাজি হয় তাহলি আমরা কি আবার বিয়ে করতে পারবো???আর যদি রাজি না হয় তাহলে আবার গুপনে আমরা কি বিয়ে টা ভেঙে দিতে পারবো??? মানে তালাক বললেই কি বিয়ে ভঙ্গ হয়ে যাবে???

উস্তাদ, আমি শুধু চাই গুনাহ থেকে বাচতে, ৮ মাস চেষ্টা করার পরও যখন পারছিনা ছাড়তে গুনাহাই হচ্ছে কনটিনিউ তাই বিয়ে করতে চাচ্ছি।আর পরিবারেওও এসব এখন বলতে পারছিনা।পরিবার চায় পড়াশোনা করে জব করবো দেন বিয়ে।বল্লে,,পড়াশোনা বন্ধ করে দিবে,ফোন নিয়ে নিবে,যেখানে ইচ্ছা হয়তো বিয়েও দিয়ে দিতে পারে,নানান মানুষ নানান কথা শুনাবে এগুলোর চেয়ে বড় কথা আমি দ্বীনহীন পরিবেশে থেকে দ্বীন মানর চেষ্টা করছি আমি এমন কাজ করলে মানুষ পর্দা নিয়ে ইসলাম নিয়ে কি একটা ধারণা পোষন করবে। তারপর  এসব শুনলে আমার আব্বু আম্মু প্রচন্ড কষ্ট পাবে।হারাম রিলেশনএ থেকে নিজেকে কখন দ্বীন প্যাকটিচিং বলিনা।  কিন্তু আমার পরিবার আমায়  দ্বীন প্যাকটিচিং বলে জানে। আমার কাছ থেকে এসব হারাম সম্পর্ক  আশা করা যায় না তাই পরিবারকেওও এসব শুনাতে চাচ্ছিনা।ভয়, লজ্জা,কার অবাধ্য হচ্ছি, এসব তো আল্লাহকে নিয়েই ভাবা  উচিত তাই চাচ্ছি এভাবেই বিয়ে করে নিতে আর বিয়ে করেছি শুনাবো না। না মানলে ভেঙে নিবো।

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মাতাপিতার বৈধ আদেশ মানা, তাদের সাথে উত্তম আচরণ করা শরীয়ত কর্তৃক আবশ্যক ঘোষনা করা হয়েছে।

আল্লাহ তাআলা বলেন,

وَوَصَّيْنَا الْإِنسَانَ بِوَالِدَيْهِ إِحْسَانًا ۖ حَمَلَتْهُ أُمُّهُ كُرْهًا وَوَضَعَتْهُ كُرْهًا ۖ وَحَمْلُهُ وَفِصَالُهُ ثَلَاثُونَ شَهْرًا

আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের আদেশ দিয়েছি। তার মা তাকে কষ্টসহকারে গর্ভে ধারণ করেছে এবং কষ্টসহকারে প্রসব করেছে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে ও তার স্তন্য ছাড়তে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ-১৫)

 

আল্লাহ তা'আলা আরও বলেন,

وَقَضَى رَبُّكَ أَلاَّ تَعْبُدُواْ إِلاَّ إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلاَهُمَا فَلاَ تَقُل لَّهُمَآ أُفٍّ وَلاَ تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلاً كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল-২৩)

 

সর্বদা পিতা মাতার সাথে সদ্ব্যবহার করা ও তাদের কথা মান্য করা সন্তানের দায়িত্ব৷ আল্লাহ তায়ালা বলেন-

وَقَضَىٰ رَبُّكَ أَلَّا تَعْبُدُوا إِلَّا إِيَّاهُ وَبِالْوَالِدَيْنِ إِحْسَانًا ۚ إِمَّا يَبْلُغَنَّ عِندَكَ الْكِبَرَ أَحَدُهُمَا أَوْ كِلَاهُمَا فَلَا تَقُل لَّهُمَا أُفٍّ وَلَا تَنْهَرْهُمَا وَقُل لَّهُمَا قَوْلًا كَرِيمًا

তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাঁকে ছাড়া অন্য কারও এবাদত করো না এবং পিতা-মাতার সাথে সদ্ব-ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়; তবে তাদেরকে ‘উহ’ শব্দটিও বলো না এবং তাদেরকে ধমক দিও না এবং বল তাদেরকে শিষ্ঠাচারপূর্ণ কথা। (সূরা বনী ইসরাঈল, ২৩)

 

(অভিভাবক ছাড়া বিবাহ সংক্রান্ত জানুনঃ

 https://ifatwa.info/4801/)

 

নিজে নিজে বিয়ে সম্পর্কে আরো জানুন- https://ifatwa.info/2730/

 

 সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

 

মাতাপিতা সন্তুষ্টি ও অনুমতি নিয়ে সবাইকে অগ্রসর হতে হবে এবং মাতাপিতার সন্তুষ্টিই দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের উত্তম মাধ্যম। মাতাপিতাকে কষ্ট দিয়ে জীবনে সূখী হওয়া যাবে না। তাছাড়া বৈধ ও ভালো কাজে মাতাপিতার নির্দেশ মান্য করাও ওয়াজিব। পিতা মাতা সাধারণত সন্তানদের থেকে ভালো বুঝেন৷ সর্বদা তারা সন্তানদের কল্যাণ চান৷ বিশেষ করে বিয়ে শাদীর বিষয়ে পিতা মাতার মতকেই প্রাধাণ্য দেওয়া উচিত৷ অন্যথায় অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়৷ এটা বিয়ের আগে বুঝে আসে না, তবে বিয়ের পরে ঠিকই সবাই বুঝে৷ অনেক ছেলে মেয়ে যারা নিজেদের পছন্দের ছেলে মেয়েকে আবেগবশত বিয়ে করে পরবর্তীতে অনেক কষ্টে আছে৷

 

কোনো পছন্দের-ছেলে থাকলে যেভাবে হোক পিতা মাতাকে রাজি না করিয়ে তাকে বিয়ে করা উচিৎ নয়৷

 

জাহান্নামের শাস্তি অনেক কঠিন। তাই হারাম রিলেশন থেকে বিরত থাকা চাই। আল্লাহকে ভয় করুন। প্রিয় বোন, রাতে ঘুমানোর সময় একটু ভাববেন জাহান্নামের আগুন কি আপনি সহ্য করতে পারবেন? দুই চোখে গরম শিশা ঢেলে দিলে কি সহ্য করতে পারবেন? তাই তার সাথে কথা বার্তা, শারিরিক সম্পর্ক থেকে অবশ্যই অবশ্যই বিরত থাকবেন। জাহান্নামকে ভয় করবেন।


<!--[endif]-->

পূর্বে অনেক ফাতাওয়াতে আমরা উল্লেখ করেছি যে,মাতাপিতার সম্মতি ব্যতীত কখনো কোনো মুসলমান যুবক যুবতীর জন্য একা একা বিয়ে করা সমীচীন হবে না,মঙ্গলজনক হবে না। মাতাপিতাকে না জানিয়ে বালিগ ছেলে মেয়ের বিবাহ নিয়ে উলামাদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। অনেক উলামায়ে কেরাম অভিভাবকহীন বিয়েকে বাতিল বলে মনে করেন। হানাফি মাযহাব মতে কু'ফু হিসেবে ছেলে মেয়ের সমকক্ষ বা বেশী মর্যাদার অধীকারী হলেই কেবল বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। নতুবা মেয়ের অভিভাবকের অনুমতির উপর বিয়ে মওকুফ থাকবে।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

১. বোন, এভাবে বিয়ে করা আপনার জন্য ঠিক হবে না। করলে পরে আপনাকে অনেক অনেক আফসোস করা লাগবে। মনে করবেন ছেলে যদিও আপনাকে অনেক কিছু বলে কিন্তু তা ধোঁকা। শুধু সে আপনাকে ভোগ করতে চাই। আর ভালো ছেলেরা কখনো প্রেম করে না।

 

২. কখনো এ রকম পথে পা বাড়ানো আপনার জন্য ঠিক হবে না। করলে নিজে নিজেকে অনেক বড় ক্ষতি করে ফেলবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...