আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
160 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (101 points)
আসসালামুআলাইকুম,

১)হাতের কোথাও যদি এত অল্প কেটে যায় যে,রক্ত বের হওয়া বন্ধ হয়েছে কিন্তু ভিতরের লাল মাংস দেখা যাচ্ছে।এমতাবস্থায় হাত ধোয়ার পর তা যদি কোনো গামছাতে মোছা হয় তাহলে ঐ গামছাটি কি নাপাক হবে?

২)হারাম প্রাণী যেমনঃ ইঁদুরের লালা কি নাপাক? আমাদের প্লাস্টিকের টেবিলে একবার একটা হাড্ডি পেয়েছিলাম কুচি কুচি করা।দেখে মনে হয়েছিল যে ইঁদুর করেছে কিন্তু কোনো আদ্রতা পাইনি তাই কেবল ঝেড়ে ময়লাটি ফেলে দিয়েছি।কিন্তু এখন সন্দেহ হচ্ছে যে ইদুরের লালা পড়েছিল কি না।করণীয় কি?

৩)অনেক বেশি বীর্য লাগা কাপড়কে ভালোভাবে নিংড়িয়ে ধোয়ার পর যদি দেখি যে সাদা সাদা শুক্রানু দেখা যাচ্ছে,তাহলে কাপড়কে পাক ধরবো কি?

৪)ভেজা সিমেন্টে ইঁদুরের পায়খানা পড়ার পর সিমেন্ট টা যদি পুরোপুরি না তবে এতটুকু শুকিয়ে যায় যে পায়খানাটি ও শুকিয়ে গেছে এবং তা তুলে ফেলা যাচ্ছে তাহলে কি সিমেন্টটি পাক হবে?

৫) জমিনের এক অংশে ইঁদুরের পায়খানা আছে।এখন অপর পাশ থেকে পানি গড়িয়ে সে পায়খানাকে স্পর্শ করলে ঐ পানির ধারার সাথে অপর পাশের যে অংশ স্পর্শে ছিল তা নাপাক হবে কি?

৬)ওযু বা ফরজ গোসলে কি নাকের ভিতর পর্যন্ত পানি পৌঁছানোর বাধ্যতামূলক?নাকি সামনের অংশে পানি দিলেই হবে?

৭)ফরজ গোসলে কান কি মাসাহ করা যথেষ্ট? আর পুরুষাঙ্গের মুত্রনালির ভিতরের দিকে পানি পৌঁছানো কি বাধ্যতামূলক?

৮)আর স্ত্রীর ক্লাইটোরিস আর জি-স্পটে হাত দিয়ে ঘষে স্ত্রীকে উত্তেজিত করা জায়েজ কি?

৯) স্ত্রীর পায়ুপথে তো পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানো হারাম।কিন্তু নিতম্ব দিয়ে মজা নেয়া কি জায়েজ? আর স্ত্রীর নিতম্বের সাথে পুরুষাঙ্গ ঘর্ষণ করে বীর্যপাত করা কি হারাম?

1 Answer

0 votes
by (678,880 points)
edited by
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا أَحْمَدُ بْنُ عَلِيِّ بْنِ الْعَلَاءِ ، ثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ شَوْكَرِ بْنِ رَافِعٍ الطُّوسِيُّ ، نَا أَبُو إِسْحَاقَ الضَّرِيرُ إِبْرَاهِيمُ بْنُ زَكَرِيَّا ، نَا ثَابِتُ بْنُ حَمَّادٍ ، عَنْ عَلِيِّ بْنِ زَيْدٍ ، عَنْ سَعِيدِ بْنِ الْمُسَيَّبِ ، عَنْ عَمَّارِ بْنِ يَاسِرٍ ، قَالَ : أَتَى عَلَيَّ رَسُولُ اللَّهِ - صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ - وَأَنَا عَلَى بِئْرٍ أَدْلُو مَاءً فِي رِكْوَةٍ لِي ، فَقَالَ : يَا عَمَّارُ ، مَا تَصْنَعُ ؟ قُلْتُ : يَا رَسُولَ اللَّهِ ، بِأَبِي وَأُمِّي ، أَغْسِلُ ثَوْبِي مِنْ نُخَامَةٍ أَصَابَتْهُ . فَقَالَ " يَا عَمَّارُ ، إِنَّمَا يُغْسَلُ الثَّوْبُ مِنْ خَمْسٍ : مِنَ الْغَائِطِ ، وَالْبَوْلِ ، وَالْقَيْءِ ، وَالدَّمِ ، وَالْمَنِيِّ ، يَا عَمَّارُ ، مَا نُخَامَتُكَ وَدُمُوعُ عَيْنَيْكَ وَالْمَاءُ الَّذِي فِي رِكْوَتِكَ إِلَّا سَوَاءٌ "

আহমাদ ইবনে আলী ইবনুল 'আলা (রহঃ) ... আম্মার ইবনে ইয়াসির (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমার নিকট এলেন, তখন আমি একটি কূপ থেকে বালতি দিয়ে পানি তুলে আমার একটি পানির পাত্রে ভর্তি করছিলাম। তিনি জিজ্ঞেস করলেন, হে আম্মার! তুমি কি করছো? আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কোরবান হোক। আমি আমার পরিধেয় বস্ত্রে লেগে যাওয়া শ্লেষ্মা পরিষ্কার করছি। তিনি বলেনঃ হে আম্মার! পাঁচটি জিনিস থেকে কাপড় ধৌত করা প্রয়োজনঃ বিষ্ঠা, পেশাব, বমি, রক্ত ও বীর্য। হে আম্মার! তোমার নাকের শ্লেষ্মা, তোমার উভয় চোখের অশ্রু এবং তোমার এই পানির পাত্রের পানি একই সমান (পাক-নাপাকীর হুকুমের ক্ষেত্রে)।
(সুনানে দারা কুতনি ৪৫০)

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
যেহেতু রক্ত বের হওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে,তাই গামছায় রক্ত লাগার সম্ভাবনা নেই।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত গামছাটি নাপাক হবেনা।
পাক থাকবে।
,
(০২)
ঈদুরের লালা নাপাক নয়।
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে কোনো সমস্যা নেই।
কিছুই নাপাক হয়ে যায়নি।
,
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
  
حَدَّثَنَا عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْلَمَةَ الْقَعْنَبِيُّ، عَنْ مَالِكٍ، عَنْ إِسْحَاقَ بْنِ عَبْدِ اللهِ بْنِ أَبِي طَلْحَةَ، عَنْ حُمَيْدَةَ بِنْتِ عُبَيْدِ بْنِ رِفَاعَةَ، عَنْ كَبْشَةَ بِنْتِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ- وَكَانَتْ تَحْتَ ابْنِ أَبِي قَتَادَةَ - أَنَّ أَبَا قَتَادَةَ، دَخَلَ فَسَكَبَتْ لَهُ وَضُوءًا، فَجَاءَتْ هِرَّةٌ فَشَرِبَتْ مِنْهُ، فَأَصْغَى لَهَا الإِنَاءَ حَتَّى شَرِبَتْ، قَالَتْ كَبْشَةُ: فَرَآنِي أَنْظُرُ إِلَيْهِ، فَقَالَ: أَتَعْجَبِينَ يَا ابْنَةَ أَخِي؟ فَقُلْتُ: نَعَمْ . فَقَالَ: إِنَّ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم قَالَ " إِنَّهَا لَيْسَتْ بِنَجَسٍ إِنَّهَا مِنَ الطَّوَّافِينَ عَلَيْكُمْ وَالطَّوَّافَاتِ "

কাবশাহ বিনতু কা‘ব ইবনু মালিক (রহঃ) সূত্রে বর্ণিত। তিনি ছিলেন আবূ ক্বাতাদাহ (রাঃ)-এর পুত্রবধূ। তিনি বলেন, একদা আবূ ক্বাতাদাহ (বাহির থেকে) আসলে আমি তার জন্য অযুর পানি দিলাম। এমন সময় একটি বিড়াল এসে তা থেকে পানি পান করতে লাগল। আবূ ক্বাতাদাহ বিড়ালের জন্য পাত্রটি কাত করে ধরলেন। ফলে বিড়ালটি তৃপ্তি সহকারে পান করল। কাবশাহ বলেন, আবূ ক্বাতাদাহ দেখলেন, আমি তার দিকে তাকিয়ে আছি। তিনি বললেন, হে ভাতিজী! তুমি কি আশ্চর্যবোধ করছ? আমি বললাম, হ্যাঁ। তিনি বললেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ বিড়াল নাপাক নয়। এরা সর্বদা তোমাদের কাছে ঘুরাফেরাকারী প্রাণী।

[তিরমিযী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট সম্পর্কে, হাঃ ৯২), নাসায়ী (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, অনুঃ বিড়ালের উচ্ছিষ্ট, হাঃ ৬৮), ইবনু মাজাহ (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ৩৬৭), আহমাদ (৫/২৯৬, ৩০৩, ৩০৯), মালিক (অধ্যায়ঃ পবিত্রতা, হাঃ ১৩)।]

(০৩)
সাদা সাদা দেখা গেলে সেটি নাপাক থাকবে।
,
(০৪)
হ্যাঁ সিমেন্ট পাক হবে।
,
(০৫)
শুকিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সেই পানিকে নাপাক ধরবেন।
,
(০৬)
নাকের ভিতর  সম্মুখ অংশে পানি দিলেই গোসলের ফরজ আদায় হয়ে যাবে। 
একেবারে নাকের নরম অংশ পর্যন্ত পানি দেওয়া ফরজ/ওয়াজিব নয়।
এটি সুন্নাত।
,
(০৭)
কানের বাহিরের অংশে পানি দিতে হবে।
ভিতরে মাসাহ করতে হবে।
পুরুষাঙ্গের মুত্রনালির ভিতরের দিকে পানি পৌঁছানো  বাধ্যতামূলক নয়।

(০৮)
হ্যাঁ জায়েজ আছে।
এটি ফোরপ্লের অন্তর্ভুক্ত। 
,
(০৯)
স্ত্রীর পায়ুপথে পুরুষাঙ্গ প্রবেশ করানো হারাম। নিতম্ব দিয়ে মজা নেয়া জায়েজ আছে।
স্ত্রীর নিতম্বের সাথে পুরুষাঙ্গ ঘর্ষণ করে বীর্যপাত করা হারাম নয়।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...