আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
1,222 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (17 points)
আমার বিয়ের সময় শশুরবাড়ি থেকে কোন যৌতুক বা উপহার চায় নি। তারা এর বিরুদ্ধে। আমার বাবা বেঁচে নেই। তিনি আমার বিয়ের জন্য ৩ লাখ টাকা রেখে যান। বিয়েতে ১ লাখের মত খরচ হয় বাকি টাকা আম্মু বিয়ের দিন আমার শশুর বাড়ির লোকের হাতে উপহার স্বরুপ দিয়ে দেন।  এই টাকা আমার হাসবেন্ড নিতে অস্বীকৃতি জানালে আমি এই টাকা আম্মুকে ফিরত দিতে পারতেছিলাম না তাই আমার হাসবেন্ড নিজে টাকা না নিয়ে  টাকাটা আমাকে দিয়ে দেন।
এখন এই টাকা আমার ভোগ করা জায়েজ কিনা?

1 Answer

0 votes
by (574,260 points)
উত্তর
بسمالله الرحمن الرحيم 

শরীয়তের বিধান  অনুযায়ী যৌতুকের বিধানঃ 
বর বা অন্যান্য মানুষের চাপে কনে পক্ষ থেকে বিভিন্ন জিনিসপত্র যেমন কনের জেওর, কাপড়, আসবাবপত্র ইত্যাদিসহ কোনো টাকা গ্রহন বৈধ নয়। বরং এটি এক প্রকার জুলুম। এ ধরনের সংস্কৃতি হিন্দু সম্প্রদায়ের মাঝে দেখা যেত।

যদি বর বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে এমন শর্ত করা হয় যে কনে বা তার গার্জিয়ানের পক্ষ থেকে হাদিয়া তুহফা বা টাকা-পয়সা ইত্যাদি উপঢৌকন না দিলে, উক্ত কনেকে বিবাহই করবে না, তাহলে শর্ত সাপেক্ষে কনের পক্ষ থেকে উক্ত জিনিসপত্র দেওয়া সুদ হিসেবে হারাম হবে। চাই তা নিজের দিক বা অন্য কারো কাছ থেকে নিয়েই দিক। কেননা বিবাহ বন্ধন হল এমন একটি বেচা-কেনা যেখানে বিনিময়ে কিছু পাওয়া যায় না। যেমন- অন্যান্য বেচা-কেনার টাকার বিনিময়ে কাপড়, ধান ইত্যাদি কোনো বস্তু পাওয়া যায়। তাই বিবাহ নামক বেচা-কেনার মধ্যে শরীয়তের দাবী (যেমন মহর ইত্যাদি) ব্যতীত যে কোনো পক্ষ থেকে টাকা-পয়সা দেওয়া ও নেওয়া ঘুষ হিসাবে হারাম হবে।

আর বিবাহের পূর্বে, মেয়ের পিতা ছেলের অসন্তুষ্টিতে, তার নিকট থেকে দাবীর মাধ্যমে যে টাকা গ্রহণ করে, তাও সুদ।  হ্যাঁ ছেলের নিকট দাবী করা ব্যতীত সে সন্তুষ্টচিত্তে যদি দিয়ে থাকে তাহলে সেটা জায়েয হবে।
,

হাদীস শরীফে আছে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বিদায় হজ্বের ঐতিহাসিক ভাষণে বলেছেন-
ألا ولا يحل لامرئ من مال أخيه شيء إلا بطيب نفس منه
সাবধান! কারো জন্য তার ভাইয়ের কিছুমাত্র সম্পদও বৈধ নয়, যদি তার স্বতঃস্ফূর্ত সম্মতি না থাকে।-মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১৫৪৮৮; সুনানে দারাকুতনী, হাদীস : ২৮৮৩; শুআবুল ঈমান বায়হাকী, হাদীস : ৫৪৯২

অর্থাৎ কেউ কিছু দিলেই তা ভোগ করা হালাল হয় না, যে পর্যন্ত না খুশি মনে দেয়। 

কুরআন মজীদে একাধিক আয়াতে আল্লাহ তাআলা বলেছেন-
لا تأكلوا اموالكم بينكم بالباطل
তোমরা বাতিল উপায়ে একে অন্যের সম্পদ গ্রাস করো না।-সূরা বাকারা : ১৮৮; সূরা নিসা : ২৯
,
সুতরাং আপনার স্বামী যেহেতু যৌতুকের টাকা চাননি,বরং  আপনার পরিবার খুশি হয়েই তাকে এই টাক দিয়েছিলো,তাই তার জন্য এই টাকা নেওয়া বৈধ ছিলো।

তবে তিনি সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে সেই টাকা গ্রহন করেননি।
,
এখন তিনি যদি সেই টাকা নিজ ইচ্ছায় আপনাকে মালিক বানিয়ে দেয়,তাহলে আপনি এই টাকার মালিক হয়ে যাবেন।

তবে সতর্কতামূলক আপনার মাকে জানিয়ে মার সম্মতিতে এই কাজ করা উচিত। 
,
যদিও কিছুদিন পরে হোক,তারপরেও আপনার মাকে সময় সুযোগ মোতাবেক এই বিষয়টি  জানানো ভালো।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...