আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
137 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (56 points)
edited by
আচ্ছালামু আ'লাইকুম হুজুর,
১.সার্বভৌমত্ব সম্পর্কে ইসলামিক শরীয়াহ কি বলে? আর দেশের নির্দিষ্ট সীমারেখা করে ফেলা এইগুলো সম্পর্কে শরিয়াহ কি বলে?
২. লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ এই কালিমার শর্ত কি কি?
৩. কেউ লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বললো বা শুধু আল্লাহ বললো(যেমন: হিন্দু, খ্রিস্টান ক্লাসমেট) তাহলে এই বলার দ্বারা কি জাররা পরিমাণ ঈমান সাব্যস্ত হবে কি?
জাররা পরিমাণ ঈমান কিভাবে বুঝা যাবে?
কেউ যদি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে তাহলে কি সেটা জাররা পরিমাণ ঈমানের অন্তর্ভুক্ত হবে কি?

1 Answer

+1 vote
by (678,880 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


(০১)
‘সার্বভৌমত্ব’ আধুনিক বিশ্বে বহুল ব্যবহৃত একটি শব্দ। শব্দটি ‘সার্বভৌম’ শব্দের গুণবাচক বিশেষ্য। ‘সার্বভৌম’ শব্দটি সর্ব ও ভূমি শব্দদ্বয়ের সমন্বয়ে গঠিত। এর মূল আভিধানিক অর্থ হলো সমুদয় ভূমির অধীশ্বর, সম্রাট (প্রভু)। (সূত্র : বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা-১১৪৯; বাংলা উচ্চারণ অভিধান, পৃষ্ঠা-৪৮৬)। এ ব্যুত্পত্তিগত অর্থে আল্লাহ তাআলাই হলেন একমাত্র সার্বভৌম। তিনি ছাড়া গোটা পৃথিবীর প্রভু ও মালিক বলতে আর কেউ নেই, হতেও পারে না।

قَالَ مُوۡسٰی لِقَوۡمِہِ اسۡتَعِیۡنُوۡا بِاللّٰہِ وَ اصۡبِرُوۡا ۚ اِنَّ الۡاَرۡضَ لِلّٰہِ ۟ۙ یُوۡرِثُہَا مَنۡ یَّشَآءُ مِنۡ عِبَادِہٖ ؕ وَ الۡعَاقِبَۃُ لِلۡمُتَّقِیۡنَ ﴿۱۲۸﴾ 

মূসা তার সম্প্রদায়কে বললেন, আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও এবং ধৈর্য ধর; নিশ্চয় যমীন আল্লাহরই। তিনি তার বান্দাদের মধ্যে যাকে ইচ্ছে তার ওয়ারিশ বানান। আর শুভ পরিণাম তো মুত্তাকীদের জন্যই।
(সুরা আ'রাফ ১২৮)

অর্থাৎ ‘গোটা পৃথিবীর একচ্ছত্র মালিক হলেন আল্লাহ।’

اللّٰہِ الَّذِیۡ لَہٗ مَا فِی السَّمٰوٰتِ وَ مَا فِی الۡاَرۡضِ ؕ وَ وَیۡلٌ لِّلۡکٰفِرِیۡنَ مِنۡ عَذَابٍ شَدِیۡدِۣ ۙ﴿۲﴾

আল্লাহর পথে—আসমানসমূহে যা কিছু রয়েছে ও যমীনে যা কিছু রয়েছে তা তাঁরই। আর কাফিরদের জন্য রয়েছে কঠিন শাস্তির দুর্ভোগ।
(সুরা ইবরাহিম ০২)

★শরীয়াহ মতে শহর/এলাকার নির্দিষ্ট নাম, সীমারেখা হবে।
তবে দেশ একই থাকবে।
পুরো মুসলিম বিশ্বের একজন আমীর হবে।
তার নেতৃত্বে সকলেই চলবে।

(০২)
কালেমার শর্তঃ
সাতটি শর্ত ব্যতীত লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ গ্রহণযোগ্য নয়, সেগুলো হচ্ছে:
১. কালেমার অর্থ জানা, অর্থাৎ কালেমার ভেতর কী অস্বীকার ও কী সাব্যস্ত করা হয়েছে তা জানা জরুরি, যা তার অর্থ সম্পর্কে অজ্ঞতার বিপরীত।
২. কালেমার ভেতর যা সাব্যস্ত করা হয়েছে তা মনে-প্রাণে বিশ্বাস করা জরুরি, যা কালেমা সম্পর্কে সংশয় ও সন্দেহ পোষণ করার বিপরীত।
৩. কালেমার প্রতি পূর্ণ ইখলাস প্রদর্শন করা জরুরি, যা তার অর্থ ও দাবি বাস্তবায়ন করার সময় শির্ক ও রিয়াকে প্রশ্রয় দেওয়ার বিপরীত।
৪. কালেমাকে মনে-প্রাণে সত্য জানা জরুরি, যা তার প্রতি মিথ্যারোপ করার বিপরীত।
৫. কালেমায় সাব্যস্ত সত্তাকে (আল্লাহকে) মহব্বত করা জরুরি, যা তার প্রতি কোনো প্রকার বিদ্বেষ ও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করার বিপরীত।
৬. কালেমার অর্থ ও দাবির প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করা জরুরি, যা তার অর্থ ও দাবিকে ত্যাগ করার বিপরীত।
৭. কালেমার অর্থ ও দাবি মনে-প্রাণে গ্রহণ করা জরুরি, যা তার অর্থ ও দাবির বাস্তবায়নকে প্রতিরোধ করার বিপরীত।

(০৩)
কেউ যদি লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু বলে,রাসুল সাঃ এর প্রতি বিশ্বাস না রাখে,  তাহলে সেটা জাররা পরিমাণ ঈমানের অন্তর্ভুক্ত হবেনা।

আল্লাহ তা‘আলা মুমিনদের গুণাবলির আলোচনায় বলেন,

﴿إِنَّمَا ٱلۡمُؤۡمِنُونَ ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ بِٱللَّهِ وَرَسُولِهِۦ ثُمَّ لَمۡ يَرۡتَابُواْ وَجَٰهَدُواْ بِأَمۡوَٰلِهِمۡ وَأَنفُسِهِمۡ فِي سَبِيلِ ٱللَّهِۚ أُوْلَٰٓئِكَ هُمُ ٱلصَّٰدِقُونَ ١٥﴾ [الحجرات: ١٥]

“মুমিন কেবল তারাই যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি ঈমান এনেছে, তারপর সন্দেহ পোষণ করে নি। আর নিজেদের সম্পদ ও নিজদের জীবন দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করেছে। এরাই সত্যনিষ্ঠ”। [সূরা আল-হুজুরাত, আয়াত: ১৫]


আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:
«أَشْهَدُ أَنْ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ وَأَنِّي رَسُولُ اللَّهِ، لَا يَلْقَى اللَّهَ بِهِمَا عَبْدٌ غَيْرَ شَاكٍّ فِيهِمَا، إِلَّا دَخَلَ الْجَنَّةَ»

“আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই এবং আমি তার রাসূল। যে কোনো বান্দা এ দু’টি বিষয় সম্পর্কে সন্দেহ পোষণ করা ব্যতীত আল্লাহর সাথে সাক্ষাত করবে সে জান্নাতে যাবে”।
সহীহ মুসলিম, হাদীস নং ২৭

★★জাররা পরিমান ঈমান দ্বারা উদ্দেশ্যঃ- 
কোনো ব্যক্তি যদি ঈমান আনার পর আমল না করে; বরং গুনাহর ভেতরে ডুবে থাকে তাহলে তার ঈমানের অবস্থা দেখে জাররা পরিমান মাপ করা যাবে।
এটি মহান আল্লাহই করবেন।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

0 votes
1 answer 126 views
...