ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
https://www.ifatwa.info/2679 নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,
আজকাল মোবাইলের মাধ্যমে অনেক ভাবেই কথা বলা যায়, অডিও কলে কথা যায় ঠিকতেনিভাবে ভিডিও কলেও কথা
বলা যায়।
সর্বমোট তিনটি পদ্ধতিতেই অধিকাংশ মানুষকে কথা বলতে দেখা
যায়।
(১)ঐ পদ্ধতি যা দ্বারা শুধুমাত্র একজন মানুষ কথা বলে ও
শুনে।আর অন্য কেউ বলতেও পারে না এবং শুনতেও না।
(২)ঐ পদ্ধতি যা দ্বারা একজন কথা বললেও অন্য সবাই শুনতে
পারে।
(৩) ভিডিও কল(স্কাইফ)
যার দ্বারা লাউডস্পিকারের মাধ্যমে সবাই কথা শুনতেও পারে এবং
দেখতেও পারে এবং ইচ্ছা করলে কথাও বলতে পারে।
প্রথম প্রকার:
তথা মুবাইল কলের
মাধ্যমে বিবাহ সংগঠিত হবে না।কেননা শরীয়তে যেসব ক্ষেত্রে লেনদেন বৈধ হওয়ার জন্য
সাক্ষ্যকে শর্ত করা হয়েছে,সেক্ষেত্রে
সাক্ষীগণের শোনা শর্ত।কিন্তু এখানে সাক্ষীদয়ের শ্রবণ পাওয়া যাচ্ছে না,বিধায় সর্বসম্মতিক্রমে বিবাহ সংগঠিত হবে না।
আল্লামা হাসক্বফী রা বলেনঃ
(وَ)
شُرِطَ (حُضُورُ) شَاهِدَيْنِ(حُرَّيْنِ) أَوْ حُرٌّ وَحُرَّتَيْن (مُكَلَّفَيْنِ
سَامِعَيْنِ قَوْلَهُمَا مَعًا)
দুজন স্বাধীন পুরুষ অথবা একজন স্বাধীন পুরুষ ও দুজন স্বাধীন
মহিলা সাক্ষী হিসেবে উপস্থিত থাকতে হবে,যারা শরীয়তের বিধি-বিধান পালনে দায়বদ্ধ থাকবে,এবং একসাথে উভয় (স্বামী-স্ত্রী) র ইজাব-কবুল
শ্রবণ করবে। (আদ্দুরুল মুখতার-৩/২২)
ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে....
(ومنها)
سماع الشاهدين كلامهما معا هكذا في فتح القدير فلا ينعقد بشهادة نائمين إذا لم
يسمعا كلام العاقدين،
দুনু সাক্ষীকে স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ইজাব-কবুল শুনতে হবে,(ফাতহুল ক্বাদীর)সুতরাং না শুনার ধরুণ ঘুমন্ত
ব্যক্তির সাক্ষ্য দ্বারা বিবাহ সংগঠিত হবে না।(১/২৬৮)
দ্বিতীয় প্রকার ও তৃতীয় প্রকারেও:
অধিকাংশ উলামায়ে কেরামদের মতে বিবাহ সংগঠিত হবে না। কেননা
বিবাহের জন্য মজলিসে সাক্ষী উপস্থিত হওয়া শর্ত।
যেমন ইবনে আবেদীন শামী রাহ এ সম্পর্কে বলেনঃ
(قَوْلُهُ:
وَشُرِطَ حُضُورُ شَاهِدَيْنِ) أَيْ يَشْهَدَانِ عَلَى الْعَقْدِ، أَمَّا
الشَّهَادَةُ عَلَى التَّوْكِيلِ بِالنِّكَاحِ فَلَيْسَتْ بِشَرْطٍ لِصِحَّتِهِ
كَمَا قَدَّمْنَاهُ عَنْ الْبَحْرِ،
দুজন সাক্ষী মজলিসে উপস্থিত থাকা শর্ত।অর্থাৎ যারা মজলিসে
উপস্থিত থেকে অনুষ্ঠানকে সরাসরি প্রত্যক্ষ করবে।বিবাহের উকিল নিযুক্ত করণের সময়
সাক্ষী উপস্থিত থাকা শর্ত নয়।রদ্দুল মুহতার-৩/২১;
এবং স্বামী-স্ত্রী এর মজলিস ও এক নয়।কেননা তারা দুজন
দু-স্থানে।যদিও দেখা যাচ্ছে, শুধুমাত্র দেখা
গেলে হবে না বরং স্থিরভাবে একস্থানে বসে আলাপ করতে হবে।যেমন ইবনে আবেদীন শামী রাহ
বলেনঃ
وَلَوْ عَقَدَا وَهُمَا يَمْشِيَانِ
أَوْ يَسِيرَانِ عَلَى الدَّابَّةِ لَا يَجُوزُ،
যদি দু-জন অাকদ-অনুষ্টান সম্পন্ন করে এমতাবস্থায় যে,তারা দুজন হাটছে বা যানবাহনের উপর সওয়ার
অবস্থায় চলছে(অবশ্য দু-জন সাক্ষীর বিদ্যমানে তা হচ্ছে)তাহলে এমতাবস্থায় বিবাহ
সংগঠিত হবে রদ্দুল মুহতার৩/১৪;(দারুল ফিকর
বাইরুত, মাকতাবা থেকে ৬ খন্ডে
প্রকাশিত,১৪১২হিঃ-১৯৯২ইং।)
কিন্তু ভিডিওকল বা
অডিওকলে সাক্ষীগণ সরাসরি উপস্থিত থাকেন না। এমনি স্বামী-স্ত্রীর মজলিসও এক নয়
বিধায় বিবাহ সংগঠিত হবে না।এবং ক্রয়-বিক্রয় ও সংগঠিত হবে না কেননা ক্রয়-বিক্রয়ে ও
মজলিস এক হওয়া শর্ত।
তবে হ্যা যদি উপরোক্ত পদ্ধতিতে কাউকে উকিল বানানো হয় এবং
উকিল মুওয়াক্কেলকে পূর্ব থেকে চিনে থাকেন,তাহলে এ পদ্ধতিে
উকিল বানানো বৈধ আছে।
এবং উকিল মুওয়াক্কিলের নাম দুজনমগ সাক্ষী রেখে অন্যর(ভাবি
স্বামী-স্ত্রী যে কারো) কাছে প্রস্তাব করবে।
এভাবে হলে বিয়ে সংগঠিত হবে।কেননা উকিল বানানোর জন্য মজলিশ
শর্ত নয়।(যেমন উপরে বর্ণিত রয়েছে)
নয়ে মাসাঈল আউর উলামায়ে হিন্দ কে ফয়সালে-৯১-(গবেষণা সংগঠন
প্রধান- মুফতী মুজাহিদুল ইসলাম ক্বাসেমী-ইফা পাবলিকেশন্স, দিল্লি)
অডিও কল ভিডিও কল এর মাধ্যমে বিবাহ সংগঠিত হবে না।বিস্তারিত
জানতে..........চন্দ আহম আচরী মাসাঈল-২৩০;(দারুল উলূম
দেওবন্দের ইফতা বিভাগ কর্তৃক ১৪৩৩হিঃ মোতাঃ২০১২ ইং তে প্রকাশিত)
আল্লামা ইবনে আবেদীন শামী রাহ বলেনঃ
(قَوْلُهُ:
اتِّحَادُ الْمَجْلِسِ) قَالَ فِي الْبَحْرِ: فَلَوْ اخْتَلَفَ الْمَجْلِسُ لَمْ
يَنْعَقِدْ، ----إلي ان قال-----وَلَوْ
عَقَدَا وَهُمَا يَمْشِيَانِ أَوْ يَسِيرَانِ عَلَى الدَّابَّةِ لَا يَجُوزُ
স্বামী-স্ত্রী উভয়ের ইজাব-কবুলের মজলিস এক হতে হবে।যদি
মজলিস ভিন্ন হয় তাহলে বিবাহ সংগঠিত হবে না। প্রসঙ্গক্রমে আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি
বলেনঃস্বামী-স্ত্রী দু-জন যদি হাটতে হাটতে ইজাব-কবুল করেন,অথবা সওয়ারীর উপর সওয়ার হয়ে চলতে চলতে
ইজাব-কবুল বলেনঃ তাহলেও বিবাহ সংগঠিত হবে না।রদ্দুল মুহতার-৩/১৪;
সাক্ষী উপস্থিত না থাকার ধরুণ বিবাহ সংগঠিত হবে
না।ফাতাওয়ায়ে উসমানী-মুফতী তাক্বী উসমানী-২/৩০৫;("মাকতাবাতু মা'রিফুল কোরআন" করাচী, কর্তৃক ১৪৩৩হিঃ-২০১২ইংরেজীতে প্রকাশিত) সুওয়াল
ও জওয়াব-৪/৭৯ক্বারী আব্দুল বাসিত-দারুল এশা'আত-পাকিস্তান,কর্তৃক ৪ খন্ডে ২০০৬সালে প্রকাশিত। জাদীদ ফেকহী
মাসাঈল-১/১৯২(জমজম পাবলিশার কর্তৃক ২০১০সালে প্রকাশিত)
তবে আরব দেশের কেউ কেউ যেমন বিন বায বিয়ে সহীহ হওয়ার কথাও
বলে থাকেন। কিন্তু সতর্কতামূলক তাদের কথাকে গ্রাহ্য করা যাবে না।কেননা বিয়েতে আসল
হচ্ছে হারাম অর্থাৎ মহিলার বুজা বা স্ত্রী
লিংগ পুরুষদের জন্য হারাম কিন্তু পরবর্তীতে অনেক শর্তাদির মাধ্যমে বিয়ে নামক
পদ্ধতি দিয়ে তা পুরুষদের জন্য হালাল করা
হয়েছে।
যেমন বিশিষ্ট উসুলবিদ আল্লামা ইবনে নুজাইম রাহ বলেনঃ-
الأصل في الأبضاع التحريم
স্ত্রীলিঙ্গ সমূহে মূল হুকুম হচ্ছে হারাম হওয়া।আল-আশবাহ
ওয়ান নাযাইর১/৫৭ (দারুল কুতুব আল আলামিয়্যাহ)
ভিডিও কলে বিয়ে
সম্পর্কে জানুন- https://ifatwa.info/14487/
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. উপরে বিস্তারিত চলে এসেছে। তবে যদি প্রশ্নোক্ত
ক্ষেত্রে ঐ মেয়ে তার পিতা বা কোন অবিভাবককে ঐ ছেলের সাথে বিয়ে করিয়ে দেওয়ার জন্য উকিল
বানিয়ে দেয় এবং বিয়ের মজলিসে সরাসরি ঐ উকিল বা উকিলের অনুমতিতে ইমাম বা কাযী ঐ ছেলের
সাথে স্বাক্ষীদের সামনে বিয়ে করিয়ে দেয় তাহলে উক্ত বিয়ে সহীহ হবে। তবে
এই ক্ষেত্রে মেয়ের ঐ উকিল বা উকিলের অনুমতিতে ইমাম বা কাযীর
পক্ষ হতে বিয়ের প্রস্তাব ও ছেলের পক্ষ হতে গ্রহণ হতে হবে।
২. যেহেতু
ঐ জমা টাকাগুলো স্বামী। তাই স্বামীকে জানিয়ে
যাকাত দেওয়াই উত্তম হবে।
৩. মেয়েদের
জন্য জিন্স এর জ্যাকেট না পরে অন্য
কোনো শালীন শীতের পোষাক পরিধান করা উচিৎ ও
উত্তম।