আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
533 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (87 points)
আসসালামুয়ালাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারকাতুহু শেইখ।
আপনাদের বিরক্ত করার জন্য দুঃখিত। আসলে মুসলিমদের যাই হউক না কেন আলীম এর প্রয়োজন কিন্তু আমার অবস্থা এমন যে আমি মুসলমান আছি কি না জানি না। কোন কিছুতেই কোন ফায়দা হচ্ছে না আমার। তবুও জানি না কিসের আশায় আপনাদের কাছে নসীহাহ চেতে এসেছি।  সম্পুর্ণ টা পড়ে বিস্তারিত উত্তর দেওয়ার একান্ত অনুরোধ রইল।

আমি ভয়াবহ এক গুনাহ তে আসক্ত। সেই গুনাহ অন্য গুনাহ এর ও দুয়ার খুলে দিয়েছে। সেটা হল হস্তমৈথুন। আমি পর্ন আসক্ত আমি গান ও শুনি, আমি মা বাবার অবাধ্য, আমি নামাজ ছেড়ে দিয়েছি প্রায় দেড় মাস এর ও বেশি আমি মা বাবার সাথে প্রায় ই খারাপ ব্যবহার করি। কিন্তু আমি তাওবা ও করি না।
আমার দুনিয়া ও ঠিক নেই। পড়ালেখা হয় না, অতিরিক্ত ওজন এর জন্য অনেক কতা শুনতে হয়। কোন কিছুতেই সফলতা আসে না। এখন তো সব সময় ঈ হতাশ থাকি, কাওকে বলার পাই না। সব কিছুতেই সমস্যা হয় আমার।

আমি আগে তাওবা করতাম। নামাজ ও ঠিক ছিল প্রায় ১ বছর ৭ মাস এর মত হবে। চেষ্টা থাকত গুনাহ ছাড়ার , সুন্নাহ পালনের। কিন্তু এখন ফরয পালনেই অনীহা। আমি জানি আল্লাহ মাফ করে দিবেন, আমি জানি আল্লাহ সব সহজ করে দিবেন, তাওবা এর গুরুত্ব এর ব্যপারেও জানি অনেক কিছুই কিন্তু কোন আমল করি না।

আমার এমন মনে হয় যে লাভ হবে না। আমই যেই খারাপ সেই খারাপ ঈ থেকে যাব। কারণ শয়তান আমাকে বশ করে ফেলেছে। আর তার আমার মধ্যে মিল ও অনেক। সে সব কিছু জেনে বুঝেও নাফরমান আমিও তাই। সে সর্বদাই হতাশ আমিও তাই। পার্থক্য হচ্ছে সে তার কাজে ধৈর্যশীল এবং অধ্যবসায়ী কিন্তু আমার মধ্যে এই গুণ নেই।

সামনে ইন্টার পরীক্ষা তাই আলীম এর শরণাপন্ন হওয়ার সুযোগ নেই। আর আমার দুনিয়া এর জীবন ও ঠিক নেই। অনেক প্রচেষ্টা করেও লাভ হয় নি। আমার মত কারোও উদাহরণ হয়ত থাকতে পারে যে জ্ঞান থাকা সত্ত্বেও, একসময় আল্লাহ এর বাধ্য থাকা সত্ত্বেও পরে নাফরমান হয়ে যায় এবং হতাশায় পড়ে জাহান্নামে যায়।

আমি অনেক কিছুই চেষ্টা করেছি, কিন্তু লাআভ হয়নি। সামনে জীবন আরো কঠিন। এখনি আত্মহত্যা করতে ইচ্ছা করে সামনে হয়ত করেই ফেলব। মাঝে মাঝে হঠাৎ ইচ্ছা করে ফিরে যাব , তাওবা করব ইসলাম পালন করব, কিন্তু পরবর্তিতে অন্য কিছু তে ঢূকে গেলে আর হয় ন। বুঝি তখন যে এটাও শয়তান এর পক্ষ থেকেই এসেছে। সে আমাকে নিয়ে খেলছে। আমাকে যেমনে খুশি তেমনে চালাচ্ছে আর আমিও চলছি। আমার তো সব শেষ এমনিতেও।
শেইখ আপনাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করার কারণেও হয়ত এখন আমার পাপ হতেই আছে। কারণ আমি কিছু সুন্দর চিন্তা করতেই পারি না। আর আমি ধরেই নিয়েছি আমার সব কিছুতেই সমস্যা। আমি নিজেকে সবচেয়ে বেশি ঘৃণা করি। আমার নিজেকে শেষ করতে ইচ্ছা করে। যদিও আমি আল্লাহ এর। আমি জানি আমার ইমান আছে, কিন্তু তাতে কি লাভ, ফিরাউন ও বুঝত আল্লাহ কে।
আমার নতুন কিছু করার আছে কি? সম্ভব আমার শুধরানো?? কারো পক্ষে আমাকে শুধরানো এর চেয়ে একটা গাফেল সম্প্রদায় কে শুধরানো বেশি সহজ মনে হয়। আমাকে দয়া করে বিস্তারিত নসীহাহ দিবেন সম্পূর্ন টা পড়ে। ইন শা আল্লাহ আপনি আল্লাহ এর পক্ষ থেকে উত্তম প্রতিদান পাবেন, আল্লাহ আপনাকে বরকত দিবেন।  আমি দুনিয়া এর হারাম কাজ এও বিখ্যাত হতে পারি না আমার যোগ্যতা নেই জন্য, আবার ইসলাম থেকেও খারীজ। আমার অন্তর কতটা যে মুনাফিক সেটা বলে বুঝানো যাবে না।
জাজাকাল্লাহু খইরন শেইখ.........।

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
edited by
ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু। 
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-

মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
    
إِنَّمَا التَّوْبَةُ عَلَى اللَّهِ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السُّوءَ بِجَهَالَةٍ ثُمَّ يَتُوبُونَ مِنْ قَرِيبٍ فَأُولَٰئِكَ يَتُوبُ اللَّهُ عَلَيْهِمْ ۗ وَكَانَ اللَّهُ عَلِيمًا حَكِيمًا [٤:١٧] وَلَيْسَتِ التَّوْبَةُ لِلَّذِينَ يَعْمَلُونَ السَّيِّئَاتِ حَتَّىٰ إِذَا حَضَرَ أَحَدَهُمُ الْمَوْتُ قَالَ إِنِّي تُبْتُ الْآنَ وَلَا الَّذِينَ يَمُوتُونَ وَهُمْ كُفَّارٌ ۚ أُولَٰئِكَ أَعْتَدْنَا لَهُمْ عَذَابًا أَلِيمًا [٤:١٨

অবশ্যই আল্লাহ তাদের তওবা কবুল করবেন,যারা ভূলবশতঃ মন্দ কাজ করে,অতঃপর অনতিবিলম্বে তওবা করে; এরাই হল সেসব লোক যাদেরকে আল্লাহ ক্ষমা করে দেন। আল্লাহ মহাজ্ঞানী,রহস্যবিদ। আর এমন লোকদের জন্য কোন ক্ষমা নেই, যারা মন্দ কাজ করতেই থাকে,এমন কি যখন তাদের কারো মাথার উপর মৃত্যু উপস্থিত হয়,তখন বলতে থাকেঃ আমি এখন তওবা করছি। আর তওবা নেই তাদের জন্য, যারা কুফরী অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে। আমি তাদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছি। {সূরা নিসা-১৭-১৮}

عَنْ أَبِي عُبَيْدَةَ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، عَنْ أَبِيهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «التَّائِبُ مِنَ الذَّنْبِ، كَمَنْ لَا ذَنْبَ لَهُ»

হযরত ইবাদা বিন আব্দুল্লাহ তার পিতা থেকে বর্ণনা করেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, গোনাহ থেকে তওবাকারী গোনাহ করে নাই ব্যক্তির মত হয়ে যায়। {সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৪২৫০] 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই!
হতাশ হবেননা,
খাঁটিভাবে তাওবা করলে আল্লাহ্ তাআলা অতীতের ছোট বড় সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তবে বান্দার কোন হক নষ্ট করে থাকলে তাওবার পাশাপাশি তাকে তার হক তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া জরুরী।

 তওবা তিনটি জিনিসের সমন্বয়-
(বান্দার হক থাকলে আগে সেটি আদায় করে আসতে হবে,বা তার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে আসতে হবে।)

এক. পূর্বের গোনাহের জন্য লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়া। আর অপরের হক নষ্ট করলে তা তাকে বুঝিয়ে দেওয়া বা মাফ চেয়ে নেওয়া।

দুই. ভবিষ্যতে গোনাহ না করার ব্যাপারে দৃঢ় সংকল্প করা।

তিন. আল্লাহ্ তাআলার নিকট ক্ষমা প্রার্থনা করা।


★★সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই.
পর্ণগ্রাফী দেখা,হস্থমৈথুন কিভাবে ছেড়ে দেওয়া যায়,সে সংক্রান্ত বিস্তারিত একটি ফতোয়া আমরা প্রকাশ করেছি। 
আল্লাহর রহমত,এবং মনবল শক্ত করার পাশাপাশি সেই অনুযায়ী আমল করলে অবশ্যই আপনি এহেন গুনাহ থেকে হেফাজতে থাকবেন।
ইনশাআল্লাহ।  

সে সংক্রান্ত বিস্তারিত জানুনঃ   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...