আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
227 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
৩)ধরুন,কারো কলেজের পাশে একটা 100 বছরের পুরনো বটগাছ ছিল। সে ক্লাস শেষে ওই বট গাছের সামনে দাঁড়িয়ে দোয়া করতো গাছের কাছে। মানে শিরক করত।
এরপর সে তওবা করে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করে আর কোনদিন ওই গাছের কাছে দোয়া করবে না
কিন্তু কিছুদিন পর আবারও সে ওই গাছের সামনে গাছের কাছে দোয়া করে ফেলেন
এরপর আবার আল্লাহর কাছে তওবা করে আর ওয়াদা করে যে আর যদি কোনদিন ওই গাছের সামনে গিয়ে গাছের কাছে দোয়া করবে না
এবং আল্লাহর কাছে এটাও ওয়াদা করে যে আর যদি কোনদিন ওই গাছের কাছে দোয়া করে ফেলে তবে সারা জীবনের জন্য কলেজ যাওয়া বন্ধ করে দিবে
এরপর একদিন সে সিলেটে বেড়াতে গেল এবং একটা মাজারে সিজদা করল
এখন তার একটা কথা মনে হল যে যেহেতু এখানে শিরক করল,তাই এখন শুধু তওবা করলেই চলবে কিন্তু যদি ঐ গাছের সামনে গিয়ে গাছের কাছে দুয়া করার মাধ্যমে শির্ক করত তাহলে তাকে তওবা করার সাথে সাথে কলেজ যাওয়াও বাদ দেওয়া লাগতো। এই ভেবে তার কাছে মনে হইল যে আল্লাহ বাচাইছে।


ওই গাছের সামনে গিয়ে গাছের কাছে দুয়া করার মাধ্যমে শিরক করার চেয়ে এখানে শিরক করা  ভালো, কেননা এতে শুধু তওবা করলেই চলবে, কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে না।
এবং সে সিলেটের মাজারে সিজদা করার জন্য আল্লাহর কাছে মাফ চাইল।


এখন আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, এই ছেলে কোনোভাবেই শিরক করা পছন্দ করেনা।
এবং শিরক করতে চায়ও না।
কিন্তু যখনই কোন শির্ক করে ফেলে তখন সে মনে করে যে গাছের কাছে দুয়া করার চেয়ে এই ভাবে শিরক তুলনামুলক ভাবে ভালো কেননা এতে তওবা করলেই চলে কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগেনা
এই যে সে অন্যান্য শিরক কে গাছের সামনে গিয়ে শিরক করা থেকে তুলনামূলক ভাবে ভালো হিসেবে নিচ্ছে এতে কি শিরক হবে??
(সে কোন শিরকই করতে চায় না,আর হয়ে গেলে সাথে সাথে তাওবা করে)

1 Answer

0 votes
by (574,170 points)
edited by
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-


শিরক দুই প্রকার: এক. শিরকে জলী, দুই. শিরকে খফী। শিরকে জলী সবচেয়ে মারাত্মক। শিরকে জলীর অনেক প্রকার রয়েছে। 
যেমন ইবাদত, যা একমাত্র আল্লাহ তাআলার হক, তাতে আল্লাহ ছাড়া কাউকে শরীক করা, উপায়-উপকরণের ঊর্ধ্বের বিষয়ে গাইরুল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা, উপায়-উপকরণকে উপায়-উপকরণের সৃষ্টিকর্তার মান দেওয়া, গাইরুল্লাহকে উপকার ও ক্ষতির ক্ষমতাধারী মনে করা ইত্যাদি। 
,

,
শিরকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন।
আল্লাহর কাছে সবচে’ ঘৃণ্য ও জঘন্যতম পাপ হল শিরক। কুরআন মাজীদে পুত্রের প্রতি লুকমান হাকীমের ওসিয়তগুলো বিশেষ গুরুত্বের সাথে উল্লেখ করা হয়েছে। তাতে তিনি নিজ পুত্রকে ওসিয়ত করে বলেন-

وَ اِذْ قَالَ لُقْمٰنُ لِابْنِهٖ وَ هُوَ یَعِظُهٗ یٰبُنَیَّ لَا تُشْرِكْ بِاللهِ  اِنَّ الشِّرْكَ لَظُلْمٌ عَظِیْمٌ.

স্মরণ কর, যখন লুকমান উপদেশচ্ছলে নিজ পুত্রকে বলেছিল, বৎস! তুমি আল্লাহ্র সাথে শরীক করো না। কেননা র্শিক নিশ্চয় মারাত্মক অবিচার ও পাপ। -সূরা লুকমান (৩১) : ১৩

আল্লাহ তাআলা নবীকে সতর্ক করে বলেছেন-
وَ لَقَدْ اُوْحِیَ اِلَیْكَ وَ اِلَی الَّذِیْنَ مِنْ قَبْلِكَ  لَىِٕنْ اَشْرَكْتَ لَیَحْبَطَنَّ عَمَلُكَ وَ لَتَكُوْنَنَّ مِنَ الْخٰسِرِیْنَ.
নিশ্চয় আপনার প্রতি এবং আপনার পূর্ববর্তীদের প্রতি এই ওহী প্রেরণ করা হয়েছে যে, যদি আপনি শিরক করেন তাহলে অবশ্যই আপনার সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে এবং নিশ্চিত আপনি ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবেন। -সূরা যুমার (৩৯) : ৬৫

অন্যত্র আল্লাহ আরো বলেছেন-
اِنَّهٗ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَیْهِ الْجَنَّةَ وَ مَاْوٰىهُ النَّارُ.
আর যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেন এবং তার ঠিকানা হবে জাহান্নাম। -সূরা মায়েদা (৫) : ৭২

আরেক আয়াতে আল্লাহ বলেছেন-
اِنَّ اللهَ لَا یَغْفِرُ اَنْ یُّشْرَكَ بِهٖ وَ یَغْفِرُ مَا دُوْنَ ذٰلِكَ لِمَنْ یَّشَآءُ وَ مَنْ یُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدِ افْتَرٰۤی اِثْمًا عَظِیْمًا.
নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর সাথে শরীক করা ক্ষমা করেন না। এ ছাড়া অন্যান্য অপরাধ যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন। এবং যে আল্লাহর সাথে শরীক করে সে এক মহাপাপ করে। -সূরা নিসা (৪) : ৪৮

একজন মানুষ যত ভালো কাজই করুক কিন্তু সে যদি র্শিক করে আল্লাহ তাআলার কাছে তার কোনো কিছুরই মূল্য নেই। এজন্য কিয়ামতের দিবসে মুশরিকরা যত ভালো কাজই নিয়ে আসুক আল্লাহ তাআলা সেগুলোকে ধুলিকণা-রূপ করে দিবেন। 

আল্লাহ বলেন-

وَ قَدِمْنَاۤ اِلٰی مَا عَمِلُوْا مِنْ عَمَلٍ فَجَعَلْنٰهُ هَبَآءً مَّنْثُوْرًا.

তারা (দুনিয়ায়) যা-কিছু আমল করেছে, আমি তার ফায়সালা করতে আসব এবং সেগুলোকে শূন্যে বিক্ষিপ্ত ধুলোবালি (-এর মত মূল্যহীন) করে দেব।  -সূরা ফুরকান (২৫) : ২৩

★★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,   
প্রশ্নে উল্লেখিত ব্যাক্তির নতুন করে কালেমায়ে শাহাদত পাঠ করে ঈমান আনতে হবে।    
বিবাহিত হলে নতুন করে আবার বিবাহ পড়িয়ে কিতে হবে। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by
reshown
কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে??? 
মানে মাজারে সিজদা দেওয়া শিরক সেটা জানি।সে এটার জন্য তাওবা করেছে। 
আবার গাছের কাছে দুয়া করাও শিরক।সে এটার জন্যও তাওবা করেছে।


কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, ওই লোক কলেজ এর পাশের গাছের কাছে দুয়া করার মাধ্যমে শিরক করার চেয়ে অন্য শিরক কে একটু কম অপছন্দ করে, কেননা ওইসব শিরকে শুধু তওবা করলেই চলে,কিন্তু গাছের সামনে গিয়ে শিরক করলে তাকে কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে, যেহেতু সে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছে যে যদি কলেজ এর পাশের ওই গাছের সামনে গিয়ে শিরক করে, তবে কলেজ যাওয়া বাদ দিবে।
তার এই মনভাব কি শিরক হবে?? 

যদি এই মনভাব শিরক হয়েই থাকে তবে করনিও কি??
কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে? 
by (574,170 points)
না,বাদ দিতে হবেনা।
by (18 points)
reshown by
কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে যে, ওই লোক কলেজ এর পাশের গাছের কাছে দুয়া করার মাধ্যমে শিরক করার চেয়ে অন্য শিরক কে একটু কম অপছন্দ করে, কেননা ওইসব শিরকে শুধু তওবা করলেই চলে,কিন্তু গাছের সামনে গিয়ে শিরক করলে তাকে কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে, যেহেতু সে আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছে যে যদি কলেজ এর পাশের ওই গাছের সামনে গিয়ে শিরক করে, তবে কলেজ যাওয়া বাদ দিবে।
তার এই মনভাব কি শিরক হবে?? 

যদি এই মনভাব শিরক হয়েই থাকে তবে করনিও কি??
কলেজ যাওয়া বাদ দেওয়া লাগবে? 

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...