আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
279 views
in সালাত(Prayer) by (8 points)
আসসালমুআলাইকুম উস্তাদ,,,,

ফিকহে ২২ তম দরসে যে সমস্ত নামায মাকরুহ, এই পয়েন্টে পেলাম,অন্যের ভূমিতে তার সম্মতি ছাড়া নামায পড়া মাকরুহ।প্রশ্ন হল,১)কেন তা মাকরুহ ??

কিন্তু অনেক সময় ভূমির মালিককে পাওয়া যায় না তার সম্মতি নেয়ার জন্য, ২) এমন অবস্থায় নামায পড়লে করনীয় কি যেখানে আশে পাশে মসজিদ নেই?

৩) আমার কি পাপ হবে??

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

মহানবী () বলেন, “---আর সারা পৃথিবীকে আমার জন্য মসজিদ (নামাযের জায়গা) এবং পবিত্রতার উপকরণ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সুতরাং আমার উম্মতের মধ্যে যে ব্যক্তির নিকট যে কোন স্থানে নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে , সে যেন সেখানেই নামায পড়ে নেয়।” (বুখারী ৪৩৮নং, মুসলিম প্রমুখ)

কবরস্থান ও গোসলখানা ছাড়া সারা পৃথিবীর (সমস্ত জায়গাই) মসজিদ (নামায ও সিজদার স্থান)। (আবূদাঊদ, সুনান, তিরমিযী, সুনান, দারেমী, সুনান, মিশকাত ৭৩৭নং)

একদা আবূ যার (রাঃ) মহানবী () কে জিজ্ঞাসা করলেন, পৃথিবীতে সর্বপ্রথম কোন্ মসজিদ স্থাপিত হয়? উত্তরে তিনি বললেন, “হারাম (কা’বার) মসজিদ।” আবূ যার বললেন, তারপর কোন্টি? তিনি বললেন, “তারপর মসজিদুল আকসা।” আবূ যার বললেন, দুই মসজিদ স্থাপনের মাঝে ব্যবধান কত ছিল? তিনি বললেন, “চল্লিশ বছর। আর শোন, সারা পৃথিবী তোমার জন্য মসজিদ। সুতরাং যেখানেই নামাযের সময় এসে উপস্থিত হবে, সেখানেই নামায পড়ে নেবে।” (বুখারী, মুসলিম, মিশকাত ৭৫৩নং)

হাদিসের আলোকে কিছু স্থানে নামাজ পড়া যাবে না। সেগুলো হলো-

১. ময়লা-আবর্জনার স্থান বা অন্ধকার কুপ। যেখানে ঝাড়ু কিংবা পরিষ্কার করার পরও নাপাকি থেকে যাবে। অপবিত্র জায়গায় নামাজের জন্য উপযুক্ত নয়।

২. কসাইখানা। যেখানে পশু জবেহ করা হয়। রক্ত ও ময়লা দ্বারা যে স্থান দুষিত ও অপবিত্র হয়; সে স্থানও নামাজের জন্য উপযুক্ত নয়।

৩. কবরস্থানে নামাজ পড়া যাবে না। তবে জানাজা পড়া যাবে। এ সম্পর্কে হাদিসে পাকে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা এসেছে।

৪. মানুষের চলাচলের রাস্তায় নামাজ পড়া যাবে না। যেখানে নামাজ পড়লে মানুষের চলাচলে অসুবিধা হয়। কিংবা মানুষের পথ চলায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। যে কারণে নামাজি ব্যক্তি নামাজে বিভ্রান্তির শিকার হয়। তবে জুমআর নামাজের জন্য যদি পথচারী চলাচল বন্ধ থাকে তবে সেখানে জুমআ পড়া যেতে পারে।

৫. গোসলখানা বা বাথরুম। এটি গোসল, অজু ও পবিত্রতা অর্জনের জন্য নির্ধারিত স্থান বলে বিবেচিত। এতে নামাজ নিষিদ্ধ হওয়ার কারণ হলো- এখানে শয়তান আশ্রয় নেয়।

৬. উটের (আস্তাবল) আশ্রয়স্থল। যেখানে উট রাখা হয়। এ স্থানে নামাজ পড়ার নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে হাদিসের সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে।

৭. কাবা শরিফের উপরে বা ছাদে নামাজ পড়া যাবে না। কারণ এখানে কেবলার দিক নেই। আবার কিছু অংশ থাকলেও কিছু অংশ বাদ পড়ে যায়। এ কারণেই ইসলামিক স্কলাররা কাবা শরিফের উপরে তথা ছাদে নামাজ পড়া যাবে না মর্মে মত দিয়েছেন।

৮. দখলকৃত জমিতে নামাজ পড়া যাবে না। অবৈধভাবে কারো জমি দখল করে সেখানে নামাজ পড়াও নিষিদ্ধ।

৯. ‘বাবিল’ নামক অভিশপ্ত নগরী। কিংবা যেসব স্থানকে অভিশপ্ত বলে হাদিসে উল্লেখ করা হয়েছে; সেসব স্থানেও নামাজ পড়া যাবে না মর্মে হাদিসের দুর্বল বর্ণনায় ওঠে এসেছে।

সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, হাদিসে উল্লেখিত এ স্থানগুলো ছাড়া নামাজের ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মসজিদ না থাকলেও নামাজ আদায় করে নেওয়া। নামাজের ওয়াক্তের প্রতি যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করা।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে যথাসময়ে নামাজ পড়ার তাওফিক দান করুন। হাদিসের ওপর যথাযথ আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

দখলকৃত জমিতে নামাজ পড়া যাবে না। অবৈধভাবে কারো জমি দখল করে সেখানে নামাজ পড়াও নিষিদ্ধ।তবে স্বাভাবিকভাবে নির্মিত মসজিদ ছাড়া অন্য স্থানে নামায পড়ার বৈধতা উম্মতে মুহাম্মাদিয়ার জন্য এক স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য। বিধায় উক্ত স্থানে নামাজ পড়ার কারণে আপনার কোন হবে না। তবে উত্তম হলো জমীনের মালিক উপস্থিত থাকলে তার কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই নামাজ পড়া।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...