আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
222 views
in ঈমান ও বিশ্বাস (Faith and Belief) by (17 points)
সন্তান হলে পরিবারের রিজিক বাড়ে, তাই সন্তান হওয়ার পর যেকোন পারিবারিক উন্নতিতে যদি মনে করা হয় এটি বাচ্চার জন্য হয়েছে, তাহলে শিরক হবে?

একজনের বাসায় নতুন বাবু হওয়ার পর বাসায় কিছু কিছু উন্নতি হয়েছে। যেমন হাস মুরগির ডিম পাড়া। বাবুর বাবার চাকুরি হওয়া, ওর ফুপির বিয়ে হওয়া। বাচ্চারা নিজেদের রিজিক সাথে নিয়ে আসে। এখন পারিবারিক যেকোনো উন্নতি বাবু হওয়ার কারনে হয়েছে.. চিন্তা করা কি যুক্তিসম্মত? বা এতে কোনো গুনাহ বা ভ্রান্তির আশংকা আছে?

1 Answer

0 votes
by (715,680 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1907 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
আরবের জাহেলগণ যখন অভাব-অনটনের ভয়ে নিজ সন্তানকে হত্যা করত,তখন আল্লাহ তা'আলা তাদের সেই ভ্রান্ততাকে প্রকাশ করে যে আয়াত অবতীর্ণ করেন,তার সারমর্ম হল,তোমাদের এ কাজ খোদায়িয়ত এর মধ্যে হস্তক্ষেপের শামিল।
সমস্ত মাখলুকাতের রিযিকের দায়িত্ব রাব্বুল আ'লামিন নিজ দায়িত্বে নিয়ে অত্যান্ত স্পষ্টভাবে ঘোষনা দেন যে,
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ إِلاَّ عَلَى اللّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে।(সূরা হুদ-০৬)

এই আয়াত এবং এর মত আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে,যত প্রাণী এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করবে,তাদের রিযিকের ব্যবস্থা আল্লাহ স্বয়ং করবেন।আল্লাহ এমন ভঙ্গিতে বলতেছেন যে,সরকারী রেশন অফিসের মত কোনো অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।বরং আল্লাহ প্রত্যেক মানুষ পর্যন্ত তাদের রিযিক পৌছে দেয়ার দায়িত্ব নিজের জিম্মায় নিয়ে নিয়েছেন। কোনো রেশন কার্ডধারী যদি স্থানান্তরিত হয়,তবে রেশন কার্ড স্থানান্তরকরণের জন্য সরকার বরাবর দরখাস্ত করতে হয়,কিন্তু আল্লাহর নিকট দরখাস্ত করতে হবে না।কেননা আল্লাহ বলেন,يعلم مستقرها و مستودعها

অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক প্রাণীর স্থায়ী এবং অস্থায়ী বাসস্থল সম্পর্কে জ্ঞাত।সেখানেই আল্লাহ রিযিক পাঠিয়ে দেন।

অন্য এক আয়াতে আল্লাহ বলেন,
ﻭَﺇِﻥ ﻣِّﻦ ﺷَﻲْﺀٍ ﺇِﻻَّ ﻋِﻨﺪَﻧَﺎ ﺧَﺰَﺍﺋِﻨُﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﻧُﻨَﺰِّﻟُﻪُ ﺇِﻻَّ ﺑِﻘَﺪَﺭٍ ﻣَّﻌْﻠُﻮﻡٍ
আমার কাছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি।
সূরা হিজর-২১

এই আয়াতের উপর ঈমান আনয়নকারীর জন্য এ কথা বিশ্বাস করতে হবে যে,আল্লাহ তা'আলা না বুঝে মাখলুকাতকে সৃষ্টিকরে ঢেলে দেননি।যে অন্য কেউ ঐ ব্যক্তির রিযিকের জন্য পেরেশান হতে হবে।(মা'আযাল্লাহ)এ কথাও সম্ভব নয় যে,দিনিদন সৃষ্টজীব দ্বারা পৃথিবীর আবাদী বাড়ছে,অন্যদিকে এই পৃথিবী এবং তার সমস্ত আসবাবপত্র সীমিত।

আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা প্রত্যেককে সৃষ্টি করার পূর্বে তারা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নির্ধারিত করে রেখেছেন।প্রাণীর পৃথিবীতে আগমের পূর্বে মাতৃগর্ভে এবং ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মায়ের দুধে তার জন্য খাদ্য সৃষ্টি করে রেখেছেন।তার হজমশক্তি বাড়ার সাথে সাথে খাদ্যকেও আল্লাহ বদলে দিয়েছেন।শুধু মানুষ নয় বরং জঙ্গলের হিংস প্রাণীর বিষয়ে ও আল্লাহ এমন নিয়ম করে দিয়েছেন।যে সময় যে জিনিষের প্রয়োজন সে সময় সেগুলোকে বাহির করে দিচ্ছেন।এবং যেগুলোর প্রয়োজন নেই সেটাকে কমিয়ে দিচ্ছেন।অতীতকালে গ্যাস-পেট্রোল এর কোনো প্রয়োজন ছিল না,সুতরাং তার উৎপাদন ও ছিল না।কিন্তু আজকের পৃথিবী গ্যাস-পেট্রোল এর উপর নির্ভরশীল,তাই যমিন ও সেগুলো বাহির করে দিচ্ছে।................................................................................
মোট কথা: জন্মনিয়ন্ত্রণকে জাতীয়করণের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রসার করা এবং এটাকে উন্নতি ও অগ্রগতির চাবিকাঠি মনে করা আল্লাহর নেযামের বিরোধিতার সমতুল্য।যা কোনো মুসলমানের জন্য উচিৎ না।?(শেষ)

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সন্তান জন্ম হওয়ার পর রিযিকে বরকত হওয়া স্বাভাবিক একটা বিষয়।কেননা সন্তানের রিযিকও এখন এই ঘরে যেকোনো মাধ্যমে আসবে।তাই এই কথা শিরক হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...