বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/1907 নং ফাতাওয়ায় বলেছি যে,
আরবের জাহেলগণ যখন অভাব-অনটনের ভয়ে নিজ সন্তানকে হত্যা করত,তখন আল্লাহ তা'আলা তাদের সেই ভ্রান্ততাকে প্রকাশ করে যে আয়াত অবতীর্ণ করেন,তার সারমর্ম হল,তোমাদের এ কাজ খোদায়িয়ত এর মধ্যে হস্তক্ষেপের শামিল।
সমস্ত মাখলুকাতের রিযিকের দায়িত্ব রাব্বুল আ'লামিন নিজ দায়িত্বে নিয়ে অত্যান্ত স্পষ্টভাবে ঘোষনা দেন যে,
وَمَا مِن دَآبَّةٍ فِي الأَرْضِ إِلاَّ عَلَى اللّهِ رِزْقُهَا وَيَعْلَمُ مُسْتَقَرَّهَا وَمُسْتَوْدَعَهَا كُلٌّ فِي كِتَابٍ مُّبِينٍ
আর পৃথিবীতে কোন বিচরণশীল নেই, তবে সবার জীবিকার দায়িত্ব আল্লাহ নিয়েছেন তিনি জানেন তারা কোথায় থাকে এবং কোথায় সমাপিত হয়। সবকিছুই এক সুবিন্যস্ত কিতাবে রয়েছে।(সূরা হুদ-০৬)
এই আয়াত এবং এর মত আরো অনেক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা পরিস্কার জানিয়ে দিয়েছেন যে,যত প্রাণী এই পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করবে,তাদের রিযিকের ব্যবস্থা আল্লাহ স্বয়ং করবেন।আল্লাহ এমন ভঙ্গিতে বলতেছেন যে,সরকারী রেশন অফিসের মত কোনো অফিসে যাওয়ার প্রয়োজন নেই।বরং আল্লাহ প্রত্যেক মানুষ পর্যন্ত তাদের রিযিক পৌছে দেয়ার দায়িত্ব নিজের জিম্মায় নিয়ে নিয়েছেন। কোনো রেশন কার্ডধারী যদি স্থানান্তরিত হয়,তবে রেশন কার্ড স্থানান্তরকরণের জন্য সরকার বরাবর দরখাস্ত করতে হয়,কিন্তু আল্লাহর নিকট দরখাস্ত করতে হবে না।কেননা আল্লাহ বলেন,يعلم مستقرها و مستودعها
অর্থাৎ আল্লাহ তা'আলা প্রত্যেক প্রাণীর স্থায়ী এবং অস্থায়ী বাসস্থল সম্পর্কে জ্ঞাত।সেখানেই আল্লাহ রিযিক পাঠিয়ে দেন।
অন্য এক আয়াতে আল্লাহ বলেন,
ﻭَﺇِﻥ ﻣِّﻦ ﺷَﻲْﺀٍ ﺇِﻻَّ ﻋِﻨﺪَﻧَﺎ ﺧَﺰَﺍﺋِﻨُﻪُ ﻭَﻣَﺎ ﻧُﻨَﺰِّﻟُﻪُ ﺇِﻻَّ ﺑِﻘَﺪَﺭٍ ﻣَّﻌْﻠُﻮﻡٍ
আমার কাছে প্রত্যেক বস্তুর ভান্ডার রয়েছে। আমি নির্দিষ্ট পরিমানেই তা অবতরণ করি।
সূরা হিজর-২১
এই আয়াতের উপর ঈমান আনয়নকারীর জন্য এ কথা বিশ্বাস করতে হবে যে,আল্লাহ তা'আলা না বুঝে মাখলুকাতকে সৃষ্টিকরে ঢেলে দেননি।যে অন্য কেউ ঐ ব্যক্তির রিযিকের জন্য পেরেশান হতে হবে।(মা'আযাল্লাহ)এ কথাও সম্ভব নয় যে,দিনিদন সৃষ্টজীব দ্বারা পৃথিবীর আবাদী বাড়ছে,অন্যদিকে এই পৃথিবী এবং তার সমস্ত আসবাবপত্র সীমিত।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা'আলা প্রত্যেককে সৃষ্টি করার পূর্বে তারা থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা নির্ধারিত করে রেখেছেন।প্রাণীর পৃথিবীতে আগমের পূর্বে মাতৃগর্ভে এবং ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর মায়ের দুধে তার জন্য খাদ্য সৃষ্টি করে রেখেছেন।তার হজমশক্তি বাড়ার সাথে সাথে খাদ্যকেও আল্লাহ বদলে দিয়েছেন।শুধু মানুষ নয় বরং জঙ্গলের হিংস প্রাণীর বিষয়ে ও আল্লাহ এমন নিয়ম করে দিয়েছেন।যে সময় যে জিনিষের প্রয়োজন সে সময় সেগুলোকে বাহির করে দিচ্ছেন।এবং যেগুলোর প্রয়োজন নেই সেটাকে কমিয়ে দিচ্ছেন।অতীতকালে গ্যাস-পেট্রোল এর কোনো প্রয়োজন ছিল না,সুতরাং তার উৎপাদন ও ছিল না।কিন্তু আজকের পৃথিবী গ্যাস-পেট্রোল এর উপর নির্ভরশীল,তাই যমিন ও সেগুলো বাহির করে দিচ্ছে।................................................................................
মোট কথা: জন্মনিয়ন্ত্রণকে জাতীয়করণের মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রসার করা এবং এটাকে উন্নতি ও অগ্রগতির চাবিকাঠি মনে করা আল্লাহর নেযামের বিরোধিতার সমতুল্য।যা কোনো মুসলমানের জন্য উচিৎ না।?(শেষ)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
সন্তান জন্ম হওয়ার পর রিযিকে বরকত হওয়া স্বাভাবিক একটা বিষয়।কেননা সন্তানের রিযিকও এখন এই ঘরে যেকোনো মাধ্যমে আসবে।তাই এই কথা শিরক হবে না।