بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/3571/ নং ফাতওয়াতে আমরা উল্লেখ
করেছি যে, হুরমতে মুসাহারাত স্পর্শ এর মাধ্যমেও হয়,আবার শুধুমাত্র
দৃষ্টিপাতের মাধমেও হয়।
হুরমতে মুসাহারাত সংক্রান্ত বিস্তারিত
আলোচনার আগে একটি বিষয় স্পষ্ট করছি যে উপরে উল্লেখিত প্রশ্নে যেই লিংক দেওয়া
আছে,সেটা মাসিক
আদর্শ নারীর প্রকাশিত একটি লেখা,যেখানে হুরমতে মুসাহারাত সম্পর্কে
গুরুত্বপূর্ণ কিছু মাসয়ালা মাসায়েল লেখা হয়েছে।
যার পুরোপুরিই সঠিক এবং এটাই ইসলামী শরীয়তের বিধান।
মাসিক আদর্শ নারীর আলোচ্য লেখাটি সহ এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা
নিম্নে তুলে ধরা হলোঃ
★শরীয়তের বিধান মতে, নিজ কন্যার সাথে যিনা করলে বা কামভাব নিয়ে উত্তেজনার
সাথে আবরণ ছাড়া স্পর্শ করলে নিজ স্ত্রী তথা ওই মেয়ের মায়ের সাথে স্পর্শকারীর বৈবাহিক
সম্পর্ক সম্পূর্ণ ভেঙ্গে যায় এবং স্ত্রী তার জন্যে চিরতরে হারাম হয়ে যায়।
তাই কন্যা বালেগা হবার নিকটবর্তী (সাধারণত কমপক্ষে ৯ বছর) হয়ে
গেলে তাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে পিতার এবং ছেলে বালেগ (সাধারণত কমপক্ষে ১২ বছর) হয়ে গেলে তাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে মায়ের
খুবই সর্তক থাকা উচিৎ।
★প্রথম মাসআলাটি ছিল পিতা-মাতার
দিক থেকে। একই কাজ যদি সন্তানের দিক থেকে হয় তবুও পিতা মাতার বিবাহ ভেঙ্গে পরস্পর চিরতরে
হারাম হয়ে যাবে। কাজেই মা-কে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে পুত্র ও বাবাকে স্পর্শ করার ক্ষেত্রে
কন্যার খুব সতর্কতা আবশ্যক।
★উপরোক্ত দুটি মাসআলার
মতই শ্বশুর কর্তৃক পুত্রবধূ এবং শাশুড়ি কর্তৃক জামাইকে স্পর্শ করার বিধান। অর্থাৎ শর্তগুলি
পাওয়া গেলে স্বামী স্ত্রী পরস্পর হারাম হয়ে যাবে।
★যদি কোন পুরুষ কোন মহিলার
সাথে ব্যভিচারে লিপ্ত হয় অথবা কামভাব নিয়ে আবরণহীন তাকে স্পর্শ করে অথবা কামভাব সহকারে
মহিলার লজ্জাস্থানের খানিকটা ভিতরাংশে তাকায় অথবা নারী পুরুষের লজ্জাস্থানে তাকায় তাহলে
ঐ পুরুষের জন্য ওই মহিলার মা এবং মেয়ে সম্পূর্ণ হারাম হয়ে যায়। আর যদি সেই ব্যক্তি
পূর্ব থেকেই ঐ মহিলার মেয়েকে বিবাহ করে থাকে, তাহলে তার সেই স্ত্রী চিরতরের জন্য হারাম হয়ে
যাবে।
★হুরমতে মুসাহারার দ্বারা
অটোমেটিক বৈবাহিক সম্পর্ক ছিন্ন হয়ে স্বামী স্ত্রী পরস্পর হারাম হয়ে যায়। আর এই হারামটা
সারা জীবনের জন্য বহাল থাকে। অর্থাৎ পুনরায় বিবাহের কোন উপায় আর থাকে না। কাজেই তালাকের
কোন ব্যাপার এখানে নেই।
হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবার জন্য কয়েকটি শর্ত রয়েছে। শর্তগুলো
হল,
১–সরাসরি খালি গায়ে বা এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে, যা এতটাই পাতলা যে,
শরীরের উষ্ণতা অনুভব হয়। যদি এমন মোটা কাপড় পরিধান করে থাকে যে,
শরীরের উষ্ণতা অনুভূত না হয়, তাহলে নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত
হবে না।
فى الدر المختار- أو لمس ) ولو بحائل لا يمنع الحرارة
وقال ابن عبدين– ( قوله : بحائل لا يمنع الحرارة ) أي
ولو بحائل إلخ ، فلو كان مانعا لا تثبت الحرمة ، كذا في أكثر الكتب (الفتاوى
الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-3/107-108)
যার সারমর্ম হলো যদি এমন কাপড়ের উপর দিয়ে স্পর্শ করে,যেটা শরীরের গরমি ভাব
অনুভব হয়,তাহলে হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবে।
২–স্পর্শ করলে পুরুষ মহিলা যেকোন একজনের উত্তেজনা অনুভুত হওয়া। পুরুষের উত্তেজনা
অনুভূত হওয়ার লক্ষণ হল গোপনাঙ্গ দাঁড়িয়ে যাওয়া, আর পূর্ব থেকে দাঁড়িয়ে থাকলে স্পর্শ করার পর
উত্তেজনা বৃদ্ধি পাওয়া।
وفى رد المحتار- قوله (بشهوة) اي ولو من احدهما،
وفى الدر المختار- وحدها فيهما تحرك آلته أو زيادته به
يفتى
وفي امرأة ونحو شيخ كبير تحرك قلبه أو زيادته (الفتاوى
الشامية، كتاب النكاح، فصل فى المحرمات-4/107-109)
৩–স্পর্শ করার সময় উত্তেজিত হতে হবে। যদি স্পর্শ করার সময় কেউ উত্তেজিত না হয়, তাহলেও নিষিদ্ধতা
প্রমাণিত হবে না। সেই সাথে স্পর্শ করার আগে বা শেষে, হাত ছেড়ে
দেওয়ার আগে বা পর যদি উত্তেজনা অনুভূত হয় তাহলেও নিষিদ্ধতার সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- والعبرة للشهوة عند المس والنظر لا
بعدهما
وفى رد المحتار- ( قوله : والعبرة إلخ ) قال في الفتح :
وقوله : بشهوة في موضع الحال ، فيفيد اشتراط الشهوة حال المس ، فلو مس بغير شهوة ،
ثم اشتهى عن ذلك المس لا تحرم عليه (رد المحتار-كتاب النكاح، فصل فى
المحرمات-4/108)
যার সারমর্ম হলো স্পর্শ,দৃষ্টিপাত করার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে।
৪–স্পর্শ করার পর উদ্ভূত উত্তেজনা স্থীর হওয়ার পূর্বেই বীর্যপাত না হতে হবে। যদি
উত্তেজনা হওয়ার সাথে সাথেই বীর্যপাত হয়ে যায়, তাহলেও নিষিদ্ধতা সাব্যস্ত হবে না।
وفى الدر المختار- هذا إذا لم ينزل فلو أنزل مع مس أو
نظر فلا حرمة به بفتى
وفى رد المحتار- قوله : فلا حرمة ) لأنه بالإنزال تبين
أنه غير مفض إلى الوطء هداية .
قال في العناية : ومعنى قولهم إنه لا يوجب الحرمة
بالإنزال أن الحرمة عند ابتداء المس بشهوة كان حكمها موقوفا إلى أن يتبين بالإنزال
، فإن أنزل لم تثبت ، وإلا ثبت(الفتاوى الشامية، كتاب النكاح، فصل فى
المحرمات-4/109
যার সারমর্ম হলো যদি
যদি দেখা বা স্পর্শ করার দ্বারায় বির্যপাত
হয়ে যায়,তাহলে
হুরমতে মুসাহারাত প্রমানীত হবেনা।
৫–মহিলার বয়স ৯ বছর থেকে কম না হতে হবে। আর পুরুষের বয়স ১২ বছর থেকে কম না হতে হবে। {হুরমতে মুসাহারাত-১৯}
উপরোক্ত ৫টি শর্ত পাওয়া গেলে হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হয়ে
যাবে।
وكذا المقبلات، أو الممسوسات بشهوة لأصوله، أو فروعه
(رد المحتار-4/100)
لأن حرمة المصاهرة إذا ثبتت لا تسقط أبدا (رد
المحتار-4/109)
অনুবাদ হুরমতে মুসাহারাত এক বার প্রমানীত হলে সেটার হুকুম সারাজীবন
থাকে। এই হুকুম তার থেকে দূর হবেনা।
ই'লাউস সুনান গ্রন্থে এসেছে
أخبرنا أبوحنیفة، عن حماد، عن إبراهیم، قال: إذا قبل
الرجل أم أمرأته أو لمسها من شهوةٍ حرمت علیه امرأته، أخرجه محمد في الحجج ورجاله
ثقات (إعلاء السنن: ۱۱/۱۳۱)
যার সারমর্ম হলো কেহ যদি তার শাশুড়িকে চুম্বন করে,অথবা উত্তেজনার সাথে
স্পর্শ করে,তাহলে স্ত্রী তার উপর চিরজীবনের জন্য হারাম হয়ে যাবে।
আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন: https://www.ifatwa.info/1233
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.স্পর্শ করার সময় যদি উপরে বর্ণিত শর্তগুলি পাওয়া যায় তাহলে
হুরমতে মুসাহারাত সাব্যস্ত হবে অন্যথায় হবে না।
২.ঘুমন্ত অবস্থায় চুম্বন ও স্পর্শ করার দ্বারা ছেলে মেয়ে কারো মঝেই যদি কোন উত্তেজনা অনুভব হয় না তাহলে হুরমত প্রমাণিত হবে না।