ওয়া আলাইকুম আসসালাম
জবাবঃ-
আল্লাহ তা'আলা বলেন,
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ إِنَّمَا الْخَمْرُ وَالْمَيْسِرُ وَالأَنصَابُ وَالأَزْلاَمُ رِجْسٌ مِّنْ عَمَلِ الشَّيْطَانِ فَاجْتَنِبُوهُ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ
হে মুমিনগণ, এই যে মদ, জুয়া, প্রতিমা এবং ভাগ্য-নির্ধারক শরসমূহ এসব শয়তানের অপবিত্র কার্য বৈ তো নয়। অতএব, এগুলো থেকে বেঁচে থাক-যাতে তোমরা কল্যাণপ্রাপ্ত হও।(সূরা মায়েদা-৯০)
إِنَّمَا يُرِيدُ الشَّيْطَانُ أَن يُوقِعَ بَيْنَكُمُ الْعَدَاوَةَ وَالْبَغْضَاء فِي الْخَمْرِ وَالْمَيْسِرِ وَيَصُدَّكُمْ عَن ذِكْرِ اللّهِ وَعَنِ الصَّلاَةِ فَهَلْ أَنتُم مُّنتَهُونَ
শয়তান তো চায়, মদ ও জুয়ার মাধ্যমে তোমাদের পরস্পরের মাঝে শুত্রুতা ও বিদ্বেষ সঞ্চারিত করে দিতে এবং আল্লাহর স্মরণ ও নামায থেকে তোমাদেরকে বিরত রাখতে। অতএব, তোমরা এখন ও কি নিবৃত্ত হবে?(সূরা মায়েদা-৯১)
ঐ সমস্ত লটারী হারাম যা দ্বারা কোনো হক্ব বা যোগ্যতা অথবা মালিকানা নির্ধারণ করা হয়ে থাকে।
কিন্তু যদি পূর্ব থেকেই হক্ব বা অধিকার প্রতিষ্টিত থাকে।কিন্তু উভয় সমান সমান হওয়ার ধরুণ কাউকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাচ্ছেনা।এমতাবস্তায় একজনকে অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য লটারির মাধ্যমে তাকে নির্ধারণ করা হচ্ছে। এ প্রকার লটারী বৈধ রয়েছে ।বিস্তারিত জানুন-
1505
সু-প্রিয় পাঠকবর্গ ও প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
এখানে যে টাকা নেয়া হচ্ছে,সেই টাকা থেকে সবাইকে যদিও দেয়া হবে,তথাপি কমবেশ করে দেয়া হবে।অর্থাৎ যদি ১০টাকার কুপন কেটে লটারী দেয়া হয়,তাহলে হয়তো একজনকে ১টা ল্যাপটপ দেয়া হবে।কিন্তু বাকী সবাইকে ১০টাকা মূল্যর জিনিষ দেয়া হবে না।বরং হয়তো কাউকে ৫টাকা এবং কাউকে ৭টাকা মূল্যর জিনিষ দেয়া হবে।
হ্যা যদি সবাইকে ঐ মূল্যই দেয়া হয়, যা তার কাছ থেকে নেয়া হয়েছিলো,তাহলে প্রশ্ন জাগবে,লটারী দাতার এক্ষেত্রে লাভ কি? যদি লটারী দাতা ঐ টাকাকে নিজের কাছে রেখে কোনো ফায়দা গ্রহণ করে,এবং গ্রাহকদেরকে লটারীর মাধ্যমে পুরুস্কার প্রদাণের প্রলোভন দেখায়,তাহলে এমতাবস্থায় ঋণের বিনিময়ে পুরুস্কারের ওয়াদা করা হচ্ছে,যা মূলত সুদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম হবে।
কানযুদ্দাক্বাইক্বের ব্যখ্যা গ্রন্থ তাবয়িনে হাক্বাইক্ব এ লিখিত হাশিয়া(টিকা) "হাশিয়ায়ে শিলবীেত"
বর্ণিত আছে.
(قَوْلُهُ: وَمَنْ وَضَعَ دِرْهَمًا عِنْدَ بَقَّالٍ إلَخْ
) قَالَ الْكَرْخِيُّ فِي مُخْتَصَرِهِ فِي كِتَابِ الصَّرْفِ وَكُلُّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً لَا يَجُوزُ مِثْلَ أَنْ يُقْرِضَ دَرَاهِمَ غَلَّةٍ عَلَى أَنْ يُعْطِيَهُ صِحَاحًا أَوْ يُقْرِضَ قَرْضًا عَلَى أَنْ يَبِيعَ بِهِ بَيْعًا؛ لِأَنَّهُ رُوِيَ أَنَّ كُلَّ قَرْضٍ جَرَّ مَنْفَعَةً فَهُوَ رِبًا، وَتَأْوِيلُ هَذَا عِنْدَنَا أَنْ تَكُونَ الْمَنْفَعَةُ مُوجِبَةً بِعَقْدِ الْقَرْضِ مَشْرُوطَةً فِيهِ، وَإِنْ كَانَتْ غَيْرَ مَشْرُوطَةٍ فِيهِ فَاسْتَقْرَضَ غَلَّةً فَقَضَاهُ صِحَاحًا مِنْ غَيْرِ أَنْ يَشْتَرِطَ عَلَيْهِ جَازَ،
ইমাম কারকী রাহ.উনার "মুখতাছার" গ্রন্থের কিতাবুস সারফ বা সরফ অধ্যায়ে বর্ণনা করেনঃ
প্রত্যেক ঐ ঋণ যা মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসে তা রিবা'র অন্তর্ভুক্ত হয়ে নাজায়েয।
যেমনঃ- এক ব্যক্তি কাউকে কিছু অপ্রচলিত টাকা ঋণ দিল ঐ শর্তে যে,সে তাকে কিছু প্রচলিত টাকা ঋণ দিবে।
অথবা কেউ কাউকে ঐ শর্তে ঋণ দিল যে,ঋণগ্রহিতা তার কাছে কিছু বিক্রি করবে।
(এ সমস্ত লেনদেন নাজায়েয হিসেবে বিবেচিত হবে)
কেননা নীতিসিদ্ধ মূলনীতি হল।
"প্রত্যেক ঐ ঋণ যা কোনো মুনাফাকে টেনে নিয়ে আসবে তা রি'বা হিসেবেই গণ্য হবে"।
আমাদের মাযহাব অনুসারে উক্ত মূলনীতির সুস্পষ্টও বিস্তারিত ব্যখ্যা হচ্ছে,
ঋন দেওয়ার সময়ে যদি অন্যকিছুর শর্ত থাকে তাহলে তা নাজায়েয।
কিন্তু যদি শর্ত না থাকে বরং এমনিতেই ঋণগ্রহিতা ঋণদাতাকে কোনো কিছু ঋণ দেয়,অথবা তার কাছে কোনো কিছু বিক্রি করে তাহলে তা বৈধ আছে।
সুতরাং কোনোক্রমেই লটারী উপরোক্ত পদ্ধতিতে লটারী জায়েয হবে না।