আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
169 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (2 points)

1. namaz e fatihar sathe sura milate vule gele ba foroz namazer 3 othoba 4 rakate sura miliye felle ki sahu sijda dite hbe?

2. period obosthay husband kache asle too wife er o iccha kore,,,,hadis onujayi husband jodi kapor pechiye nijeke satisfied kore tate satisfaction too sudhu husband er holo,,,,,wife ki korte pare?

1 Answer

0 votes
by (63,200 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

আল্লাহ তা'আলা নামাযে কুরআনে কারিম তেলাওয়াতের কথা বলেছেন। উসূলে ফিকহের নীতি অনুযায়ী যে কোনো আদেশকে একবার বাস্তবায়ন করে নিলে সেই আদেশকে পালন করা হয়ে যায়।সে হিসেবে নামাযে প্রথম রা'কাতে কুরআন তেলাওয়াত করে নিলেই আল্লাহ তা'আলার আদেশ-

ﻓَﺎﻗْﺮَﺅُﻭﺍ ﻣَﺎ ﺗَﻴَﺴَّﺮَ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ

কাজেই কোরআনের যতটুকু তোমাদের জন্যে সহজ, ততটুকু(নামাযে) আবৃত্তি কর। (সূরা মুযযাম্মিল-২০) -কে মান্য করা হয়ে যাবে।

চার রাকাত বিশিষ্ট্য ফরজ নামাযের শেষের দুই রাকাতে সূরা ফাতিহার পর সূরা মিলাতে হয় না। জামাতে নামায হোক বা ইনফিরাদী তথা একাকী নামায হোক।

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي قَتَادَةَ، عَنْ أَبِيهِ: «أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كَانَ يَقْرَأُ فِي الظُّهْرِ فِي الأُولَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ، وَسُورَتَيْنِ، وَفِي الرَّكْعَتَيْنِ الأُخْرَيَيْنِ بِأُمِّ الكِتَابِ وَيُسْمِعُنَا الآيَةَ، وَيُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الأُولَى مَا لاَ يُطَوِّلُ فِي الرَّكْعَةِ الثَّانِيَةِ، وَهَكَذَا فِي العَصْرِ وَهَكَذَا فِي الصُّبْحِ (صحيح البخارى، رقم-776)

আবূ কাতাদাহ্ (রাযি.) হতে বর্ণিত যে, নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যুহরের প্রথম দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা ও দু’টি সূরাহ্ পড়তেন এবং শেষ দু’রাক‘আতে সূরাহ্ আল-ফাতিহা পাঠ করতেন এবং তিনি কোন কোন আয়াত আমাদের শোনাতেন, আর তিনি প্রথম রাক‘আতে যত দীর্ঘ করতেন, দ্বিতীয় রাক‘আতে তত দীর্ঘ করতেন না। ‘আসরে এবং ফাজরেও এ রকম করতেন। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭৬]

جَابِرَ بْنَ سَمُرَةَ، قَالَ: قَالَ عُمَرُ لِسَعْدٍ: لَقَدْ شَكَوْكَ فِي كُلِّ شَيْءٍ حَتَّى الصَّلاَةِ، قَالَ: «أَمَّا أَنَا، فَأَمُدُّ فِي الأُولَيَيْنِ وَأَحْذِفُ فِي الأُخْرَيَيْنِ، وَلاَ آلُو مَا اقْتَدَيْتُ بِهِ مِنْ صَلاَةِ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ» قَالَ: صَدَقْتَ ذَاكَ الظَّنُّ بِكَ أَوْ ظَنِّي بِكَ

জাবির ইবনু সামুরাহ (রাযি.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘উমার (রাযি.) সা‘দ (রাযি.)-কে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে তারা (কূফাবাসীরা) সর্ব বিষয়ে অভিযোগ করেছে, এমনকি সালাত সম্পর্কেও। সা‘দ (রাযি.) বললেন, আমি প্রথম দু’রাক‘আতে কিরাআত দীর্ঘ করে থাকি এবং শেষের দু’ রাক‘আতে তা সংক্ষেপ করি। আমি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম -এর পিছনে যেমন সালাত আদায় করেছি, তেমনই সালাত আদায়ের ব্যাপারে আমি ত্রুটি করিনি। ‘উমার (রাযি.) বললেন, আপনি ঠিকই বলেছেন, আপনার ব্যাপারে ধারণা এমনই, কিংবা (তিনি বলেছিলেন) আপনার সম্পর্কে আমার এ রকমই ধারণা। [সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৭৭০]

কিন্তু যেহেতু প্রথম বৈঠকের পূর্বের রা'কাত গুলো সাদৃশ্যপূর্ণ,তাই ফরয নামাযের প্রথম দুই রাকাতে মতলকে তেলাওয়াত তথা কুরআনের যে কোনো অংশ থেকে শুধুমাত্র কিছু তেলাওয়াত করে নেয়া ফরয। এক্ষেত্রে কোনো শর্ত নেই। হ্যা এ দুই রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহা তেলাওয়াত করা ওয়াজিব। এবং সাথে আরও একটি সূরা মিলানো ওয়াজিব।

(বিঃদ্রঃ  ফরয ছেড়ে দিলে নামায হয় না কিন্তু ওয়াজিব ছেড়ে দিলে সেজদায়ে সাহুর সাথে নামায আদায় হয়ে যাবে)

শেষ দুই রা'কাতে তেলাওয়াত করা সুন্নাত। চায় সূরায়ে ফাতেহা হোক বা কুরআনের অন্য কোনো সূরা হোক।কেউ ইচ্ছা করলে শেষ দুই রা'কাতে সূরায়ে ফাতেহার সাথে অন্য যেকোনো সূরাকেও মিলাতে পারে।এমনকি সারা কুরআনও পড়তে পারে।এতে কোনো সমস্যা নাই।তবে শুধুমাত্র সূরায়ে ফাতেহা পড়া মুস্তাহাব।সূরায়ে ফাতেহা ব্যতীত অন্য সূরা পড়ে নিলেও এক্ষেত্রে সেজদায়ে সাহু ওয়াজিব হবে না।(আহসানুল ফাতাওয়া;৪/৫০,ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ;৭/৪১২)

হায়েয অবস্থায় সহবাস:

পবিত্র কোরআন ও হাদীসে এ সময়ে সহবাস করতে পরিস্কার নিষেধাজ্ঞা এসেছে। মহান আল্লাহ বলেন,

وَيَسْأَلُونَكَ عَنِ الْمَحِيضِ ۖ قُلْ هُوَ أَذًى فَاعْتَزِلُوا النِّسَاءَ فِي الْمَحِيضِ ۖ وَلَا تَقْرَبُوهُنَّ حَتَّىٰ يَطْهُرْنَ ۖ فَإِذَا تَطَهَّرْنَ فَأْتُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ أَمَرَكُمُ اللَّهُ ۚ إِنَّ اللَّهَ يُحِبُّ التَّوَّابِينَ وَيُحِبُّ الْمُتَطَهِّرِينَ

আর আপনার কাছে জিজ্ঞেস করে হায়েয সম্পর্কে। বলে দেন, এটা অশুচি। কাজেই তোমরা হায়েয অবস্থায় স্ত্রীগণ থেকে বিরত থাকো এবং যতক্ষন না তারা পবিত্র হয়ে যায় ততক্ষণ তাদের নিকটবর্তী হবে না। যখন উত্তমরূপে পরিশুদ্ধ হয়ে যায়, তখন গমন কর তাদের কাছে, যে ভাবে আল্লাহ হুকুম দিয়েছেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং যারা অপবিত্রতা হতে বেঁচে থাকে তাদেরকে পছন্দ করেন। (বাকারা/আয়াত-২২২)

হাদিসে এসেছে,

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنِ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم قَالَ ” مَنْ أَتَى حَائِضًا أَوِ امْرَأَةً فِي دُبُرِهَا أَوْ كَاهِنًا فَقَدْ كَفَرَ بِمَا أُنْزِلَ عَلَى مُحَمَّدٍ صلى الله عليه وسلم

আবু হুরাইরা রাযি. হতে বর্ণিত আছে, নবী বলেন, যে ব্যক্তি ঋতুবতী নারীর সাথে সহবাস করে অথবা স্ত্রীর গুহ্যদ্বারে সহবাস করে অথবা গণক ঠাকুরের নিকটে যায়- সে মুহাম্মাদ উপর যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তা (কুরআন) অবিশ্বাস করে। (তিরমিযী, হাদীস নং-১৩৫, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৬৩৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৯২৯০)

সুতরাং স্বামীর জন্য জায়েয হবে না স্ত্রী সহবাস করা যতক্ষন না স্ত্রী হায়েয থেকে মুক্ত হয়ে গোসল করে পবিত্র হয়।

এছাড়া ডাক্তারদের মতেও এ সময় স্ত্রী সহবাস করা অনুচিত। কারণ এ সময় নারীরা অসুস্থ্য বোধ করে। স্রাবের রক্তের সঙ্গে বিভিন্ন রোগের জীবানু বের হয়ে থাকে। যা সহবাসের মাধ্যমে পরস্পরের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা দেখা দেয়। তাই শরীয়তের বিধানের পাশাপাশি ডাক্তারী মতেও এ সময় সহবাস করা থেকে বিরত থাকাই কর্তব্য।

হায়েজ অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করলে এক নম্বর ক্ষতি হলো, মহান আল্লাহ ও রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের বিধানকে লঙ্ঘণ করা হয়। এর চেয়ে বড় ক্ষতি আর কিছুই হতে পারে না। যে কর্মের মাধ্যমে মহান রাব্বুল আলামীন অসন্তুষ্ট হোন। তার বিধান লঙ্ঘিত হয়। এর চেয়ে ক্ষতি আর কী হতে পারে?

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.ফরজ নামাযের তৃতীয় বা চতুর্থ রাকাতে ভুলক্রমে সূরা মিলালে সেজদায়ে সাহু আবশ্যক হয় না। ইচ্ছেকৃতভাবে সূরা মিলানো মাকরূহে তানজিহী। কারণ এটি খেলাফে সুন্নত পদ্ধতি। কিন্তু তবুও নামাযে কোন সমস্যা হবে না। আর ভুলক্রমে মিলালে মাকরূহে তানজিহীও হবে না। সেই সাথে সেজদায়ে সাহুও আবশ্যক হবে না। তবে ২য় ও ৩য় রাকাতে যেহেতু সূরা মিলানো ওয়াজিব। বিধায় কেউ ভুলে সূরা না মিলালে সাহু সিজদাহ ওয়াজিব হবে।

২.উপরের আলোচনা থেকে একথা পরিস্কার যে, হায়েয অবস্থায় স্ত্রী সহবাস করা সম্পূর্ণ হারাম। তার সঙ্গে শুধুমাত্র সহবাস ব্যতীত চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়াসহ সাংসারিক সব কাজ একসঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সঙ্গে করা যাবে। এতে কোনো বাধা নেই। কোন স্বামী কাপড়ের উপরের দিয়ে স্ত্রী থেকে উপকৃত হতে চাইলে তারও অনুমতি আছে কিন্তু সহবাস করার অনুমতি নেই। এটি আল্লাহ পাকের হুকুম যা মান্য করা আবশ্যক।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...