বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম।
জবাবঃ-
(০১)
রোগের জন্য সুস্থতার জন্য দুআ করার পাশাপাশি বৈধ পন্থায় চিকিৎসা গ্রহণ করা মুমিনদের জন্য করনীয়।
কেননা,
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন:
مَا أَنْزَلَ اللهُ عَزَّ وَجَلَّ دَاءً، إِلَّا أَنْزَلَ لَهُ دَوَاءً، عَلِمَهُ مَنْ عَلِمَهُ، وَجَهِلَهُ مَنْ جَهِلَهُ
“আল্লাহ তাআলা এমন কোন রোগ অবতীর্ণ করেন নি যার ওষুধ অবতীর্ণ করেন নি। (অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা প্রতিটি রোগ-ব্যাধির সাথে সাথে সেগুলোর প্রতিষেধকও অবতীর্ণ করেছেন। সেগুলো কেউ জানে আর কেউ জানে না।” (মুসনাদ আহমাদ, ইমাম আলাবানী হাদিসটিকে হাসান বলেছেন)
হযরত আবু দারদা রা. থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, আল্লাহ তাআলাই রোগ ও ঔষধ সৃষ্টি করেছেন এবং প্রত্যেক রোগের চিকিৎসাও তিনি সৃষ্টি করেছেন। অতএব তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ কর।-সুনানে আবু দাউদ, হাদীস : ৩৮৬৪
হযরত উসামা ইবনে শুরাইক বলেন, কতিপয় মরুবাসী রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলেন, আমরা কি অসুস্থ হলে চিকিৎসা নিব? রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর বান্দারা! তোমরা চিকিৎসা গ্রহণ করো।-জামে তিরমিযী
এক আনসারী সাহাবী বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এক আহত ব্যক্তিকে দেখতে গেলেন। দেখে বললেন, তার জন্য অমুক গোত্রের চিকিৎসককে ডেকে আন।-মুসনাদে আহমদ ৫/৩৭১
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সিঙা লাগিয়েছেন এবং নাকে বিশেষ ঔষধ দিয়েছেন যেন হাঁচির মাধ্যমে রোগ সেরে যায়।-সহীহ বুখারী, হাদীস : ৫৬৯১
এসব হাদীস থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, চিকিৎসা গ্রহণ করা জায়েয এবং এটি তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়।
চিকিৎসা গ্রহণ যেহেতু তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়,তাই করোনার টিকা নেওয়াও তাওয়াক্কুলের পরিপন্থী নয়।
তবে মহান আল্লাহই অসুস্থতা ও সুস্থতা দানকারী,এমন বিশ্বাস থেকে সরে আসা যাবেনা।
(০২)
পাক ভেজা কাপড় দিয়ে ভালোভাবে মুছে নিলে পাক হবে।
তবে এমনিতেই শুকনো তুলা বা অন্য কিছু দিয়ে মুছে দিলেও যেহেতু সেখানে রক্তের পরিমাণ এক দিরহাম থেকে কম হয়,তাই এক্ষেত্রে হাতের ওই জায়গা না ধুয়ে নামাজ আদায় করলেও নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
তবে হাতের উক্ত জায়গাউ রক্ত যদি এক দিরহাম সমপরিমাণ বা তার চেয়ে বেশি হয়,তাহলে অবশ্যই সেই স্থান পাক করে নামাজ আদায় করতে হবে।
,
(০৩)
প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে মুক্তাদির নামাজ সহীহ হয়্র যাবে।
কোনো সমস্যা নেই।
,
الدر المختار وحاشية ابن عابدين (رد المحتار) (1/ 525):
"ولو أتمه قبل إمامه فتكلم جاز وكره۔
(قوله: لو أتمه إلخ) أي لو أتم المؤتم التشهد، بأن أسرع فيه وفرغ منه قبل إتمام إمامه فأتى بما يخرجه من الصلاة كسلام أو كلام أو قيام جاز: أي صحت صلاته؛ لحصوله بعد تمام الأركان
সারমর্মঃ
কেহ যদি ইমামের নামাজ পূর্ণ হওয়ার আগেই নিজ নামাজ পূর্ণ করে ,কথাবার্তা বলে,তাহলে তাহা জায়েজ আছে।
(এক্ষেত্রে তাশাহুদ পূর্ণ করার পর সালাম ফিরানো হলে এই বিধান।)
কেননা সমস্ত রুকুর আদায়ের পর সে এটি করছে।
তবে এটি মাকরুহ হবে।
তাই ওযর ছাড়া এমনটি করা ঠিক নয়।
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
أَخْبَرَنَا عَلِيُّ بْنُ حُجْرٍ، قَالَ حَدَّثَنَا عَلِيُّ بْنُ مُسْهِرٍ، عَنِ الْمُخْتَارِ بْنِ فُلْفُلٍ، عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم ذَاتَ يَوْمٍ ثُمَّ أَقْبَلَ عَلَيْنَا بِوَجْهِهِ فَقَالَ " إِنِّي إِمَامُكُمْ فَلاَ تُبَادِرُونِي بِالرُّكُوعِ وَلاَ بِالسُّجُودِ وَلاَ بِالْقِيَامِ وَلاَ بِالاِنْصِرَافِ فَإِنِّي أَرَاكُمْ مِنْ أَمَامِي وَمِنْ خَلْفِي " . ثُمَّ قَالَ " وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ لَوْ رَأَيْتُمْ مَا رَأَيْتُ لَضَحِكْتُمْ قَلِيلاً وَلَبَكَيْتُمْ كَثِيرًا " . قُلْنَا مَا رَأَيْتَ يَا رَسُولَ اللَّهِ قَالَ " رَأَيْتُ الْجَنَّةَ وَالنَّارَ " .
আলী ইবনু হুজর (রহঃ) ... আনাস ইবনু মালিক (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম একদিন আমাদের নিয়ে সালাত আদায় করলেন, তারপর তিনি আমাদের দিকে তার চেহারা ফিরিয়ে বললেন, আমি হলাম তোমাদের ইমাম। অতএব, তোমরা রুকুতে আমার আগে যাবে না। সিজদাতেও না, দাঁড়ানোতেও না এবং ফিরে যাবার সময়েও না। কেননা, আমি তোমাদের আমার সামনের দিক থেকেও দেখি এবং পেছনের দিক থেকেও। তারপর তিনি বললেন, ঐ আল্লাহর শপথ যার হাতে আমার প্রাণ! যদি তোমরা ঐ জিনিস দেখতে যা আমি দেখেছি, তাহলে তোমরা অবশ্যই কম হাসতে এবং অধিক কাঁদতে। আমরা বললাম, আপনি কি দেখেছেন ইয়া রাসুলাল্লাহ! তিনি বললেন, জান্নাত এবং জাহান্নাম।
সহিহ, সহিহ আবু দাউদ হাঃ ৩৬৫, মুসলিম (ইসলামিক সেঃ) হাঃ ৮৫৬