আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
292 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (30 points)
আস সালামু আলাইকুম প্রিয় উস্তাদ!
আগামীকাল আমার নিকটস্থ এক প্রতিবেশী ছোটো বাচ্চার খতনা উপলক্ষে অনুষ্টান আয়োজন করেছেন। উক্ত অনুষ্টানে আমার বাড়ির সকলেই দাওয়াত দিয়েছে। বর্তমানে যেমন বিবাহের অনুষ্টান হয় ঠিক তেমনি।
উস্তাদ! উক্ত অনুষ্টানে আমার যাওয়া কি ঠিক হবে?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


খতনা করা গুরুত্বপূর্ণ সুন্নত। এটি শিআরে ইসলাম অর্থাৎ ইসলামের মৌলিক নিদর্শনের অন্তর্ভুক্ত। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ফিতরাত (তথা নবীগণের সুন্নত) পাঁচটি : খতনা করা, নাভীর নিচের পশম পরিষ্কার করা, বগলের পশম উঠানো, মোঁচ ছোট করা এবং নখ কাটা। [সহীহ বুখারী, হাদীস : ৬২৯৭]

ইবনে শিহাব যুহরী রাহ. বলেন, কোনো ব্যক্তি যখন ইসলাম গ্রহণ করত তখন সে বড় হলেও তাকে খতনা করার আদেশ করা হত। -আলআদাবুল মুফরাদ, হাদীস : ১২৫২

হাদিয়ার ফযিলত সম্পর্কে হযরত আয়েশা রাযি থেকে বর্ণিত রয়েছে

ﻭﻋﻦ ﻋﺎﺋﺸﺔ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻬﺎ ﻗﺎﻟﺖ : « ﻛﺎﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳَﻘﺒﻞُ ﺍﻟﻬﺪﻳﺔ ﻭﻳُﺜﻴﺐُ ﻋﻠﻴﻬﺎ »

তিনি বলেন,রাসূলুল্লাহ সাঃ হাদিয়া গ্রহণ করতেন।এবং তার বিনিময়/প্রতিদান ও দিতেন।(সহীহ বুখারী-২৪৪৫)

ﻭﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻗﺎﻝ : « ﻟﻮ ﺃُﻫـﺪﻳـﺖ ﺇﻟـﻲَّ ﺫﺭﺍﻉٌ ﻟﻘﺒـﻠﺖُ، ﻭﻟﻮ ﺩُﻋﻴﺖُ ﺇﻟﻰ ﻛُﺮﺍﻉٍ ﻷَﺟﺒﺖُ »

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যদি কেউ আমার নিকট জন্তুর বাহু হাদিয়া পাঠায়,তাহলে আমি তা কবুল করব।আর যদি কেউ আমাকে পায়ের খুরা রেঁধেও দাওয়াত দেয়, তাহলেও আমি জবাব দিবো।(সহীহ বুখারী-৪৮৮৩)


প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 

খাতনার অনুষ্ঠান সম্পর্কে ইসলামী স্কলারদের মাঝে বিভিন্ন মতামত পাওয়া যায়।   

অনেক ইসলামী স্কলার গন বলেনঃ  
খতনা উপলক্ষ্যে কোনো অনুষ্ঠানের আয়োজন করার প্রমাণ নেই। তাছাড়া বর্তমানে যে জাঁকজমকপূর্ণ অনুষ্ঠানের রেওয়াজ শুরু হয়েছে তা অবশ্যই বর্জনীয়। এছাড়া এতে গান-বাদ্য ইত্যাদি শরীয়তবিরোধী কোনো কিছু থাকলে তা তো সম্পূর্ণ নাজায়েয হবে।

বর্তমানে এ জাতীয় অনুষ্ঠানে গান-বাজনা, নারী-পুরুষের অবাধ মেলামেশা ও বেপর্দা ব্যাপক। তাই এ ধরনের দাওয়াতে অংশগ্রহণ না করাই কর্তব্য।

আবার কিছু ইসলামী স্কলারগন বলেনঃ
  
খতনা উপলক্ষে আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করা ইসলামি শরিয়তের দাবী। যেহেতু খতনা ইসলামপ্রিয় বিষয়ের অন্তর্ভুক্ত। আল্লাহ তাআলা বলেছেন: “বল, আল্লাহর অনুগ্রহ ও রহমতে। সুতরাং এ নিয়েই যেন তারা খুশি হয়। এটি যা তারা সঞ্চয় করে রাখে তা থেকে উত্তম।” [সূরা ইউনুছ, আয়াত: ৫৮]। 

নিঃসন্দেহে খতনা আল্লাহর রহমত ও অনুগ্রহের অন্তর্ভুক্ত। অতএব, আল্লাহর কৃতজ্ঞতাস্বরূপ এ উপলক্ষে ভোজ অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে কোন আপত্তি নেই। সমাপ্ত [ফাতাওয়াল্ লাজনাহ আদ্দায়িমা (ফতোয়া বিষয়ক স্থায়ী কমিটির ফতোয়া সমগ্র), খণ্ড-৫; পৃষ্ঠা-১৪২]

আরো জানুনঃ 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন, 
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে যদি সেই খাতনার অনুষ্ঠানে গান বাজনা,নারী পুরুষের অবাধ মেলামেশা/বেপর্দা না থাকে,বরং নারী পুরুষ সকলের জন্য পর্দা সহকারে খাওয়ার ব্যবস্থা করা থাকে,আর এই অনুষ্ঠান যদি সামাজিক কাহারো চাপে না করে সন্তুষ্টি চিত্তে উক্ত ব্যাক্তি করে থাকে,তাহলে তাহলে আপনি সেই দাওয়াতে যেতে পারবেন।
নতুবা যাবেননা। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...