বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
(১)
নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত সম্পর্কে ফুকাহায়ে কিরামের ভিন্ন রকম পরস্পর বিরোধী মতামত পাওয়া যায়।
অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম প্রচলিত পদ্ধতির মুনাজাতকে বিদ'আত আখ্যায়িত করেছেন।(আহসানুল ফাতাওয়া , ৩য় খন্ড , পৃঃ ৬৯৮)
অন্যদিকে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কিরাম এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।(ইমদাদুল ফাতাওয়া-১ /৬৪৫ -৬৬৬)
মুফতী মুহাম্মাদ শফী (রাহঃ) বলেন ,
বর্তমানে অনেক মসজিদের ইমামদের অভ্যাস হয়ে গেছে যে , কিছু আবরী দু্’আ মুখস্থ করে নিয়ে সালাত শেষ করেই (দু’হাত উঠিয়ে ) ঐ মুখস্থ দু’আগুলি পড়েন । কিন্তু যাচাই করে দেখলে দেখা যাবে যে , এ দু’আগুলোর সারমর্ম তাদের অনেকেই বলতে পারে না । আর ইমামগণ বলতে পারলেও এটা নিশ্চিত যে , অনেক মুক্তাদী এ সমস্ত দু’আর অর্থ মোটেই বুঝে না । কিন্তু না জেনে না বুঝে আ-মীন , আ-মীন বলতে থাকে । এ সমস্ত তামাশার সারমর্ম হচ্ছে কিছু শব্দ পাঠ করা মাত্র । প্রার্থনার যে রুপ বা প্রকৃতি , তা এতে পাওয়া যায় না ।(মা’আরেফুল কুরআন , ৩য় খন্ড , পৃঃ ৫৭৭)
তিনি আরো বলেন , রাসূল (সাঃ) এবং সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈনে ইযাম হ’তে এবং শরীয়তের চার মাযহাবের ইমামগণ হ’তেও সালাতের পরে এ ধরনের মুনাজাতের প্রমাণ পাওয়া যায় না । সারকথা হ’ল , এ প্রথা পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রদর্শিত পন্থা ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শের পরিপন্থি । (আহকামে দু’আ , পৃঃ ১৩)
সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কথা হল,
যদি আক্বিদা বিশুদ্ধ থাকে তথা এমন থাকে যে,নামাযের পর প্রচলিত মুনাজাত পদ্ধতি জরুরী কোনো বিষয় নয়,বরং ইচ্ছাধীন,তাহলে মুনাজাত বৈধ বা জায়েয।বিদ'আত ও নয় আবার মুস্তাহাব ও নয় বরং জায়েয তথা মুবাহ,করাও যেতে পারে আবার নাও করা যেতে পারে।এই মুনাজাতের উপর পুরুস্কার-তিরস্কার কিছুই আসবে না।এজন্য ইমাম সাহেব কর্তৃক মুসাল্লিদেরকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া উচিৎ,যাতে করে তাদের আক্বিদা- বিশ্বাস বিশুদ্ধ থাকে।মাঝেমধ্যে সম্মিলিত মুনাজাত পরিত্যাগ করাও উচিৎ,যাতে করে জনসাধারণের মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হয় যে,প্রচলিত পদ্ধতির মুনাজাত (বিধান হিসেবে)ফরয বা ওয়াজিব নয়।বিশেষকরে উলামায়ে কেরামের জন্য মাঝেমধ্যে পরিত্যাগ করা উচিৎ এবং জরুরী।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/372
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
নামাযের পর দু'আ সালাতের কোনো অংশ নয়,সুতরাং যার ইচ্ছা সে দু'আয় শরীক থাকবে, আর যার ইচ্ছা সে শরীক হবে না। এটা নিয়ে এত চিন্তা করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।
(৩)
নামাযে মুখ ডাকতে নিষেধ করেছেন।কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ তো বলেননি যে, নামায হবে না। আল্লাহ মানুষকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন,কিন্তু কেউ যদি কাউকে হত্যা করে নেয়, তাহলে সে তো অবশ্যই নিহত হয়ে যাবে।