আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
119 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (12 points)
১|শাইখ,আমি আজ জুমায় নামায শেষ করে দেখলাম যে কতক মুসল্লি ইমামের সাথে দোয়ায় শরীক না হয়ে নিজেরা ছোট দোয়া পড়ে উঠে চলে যাচ্ছে, আমি জানতে চাই এটা কি ইসলাম সমর্তন করে?
হাদীস কি বলে এটি নিয়ে?

২|আবার কতক একদম না করেই নামায শেষ করে চলে গেলো,এখন আমি ও যদি এমনটা করি তাহলে আমার কোন গুনাহ হবে কিনা?
হাদীসের কি আছে এটি নিয়ে?

৩|আপনাদের একটা ফতোয়ায় দেখলাম যে লজ্জা করে নামায পড়ার সময় মুখে মাস্ক পড়ে রাখলে, মাকরুহ হবে তবে নামায হয়ে যাবে।
এখন সহীহ হাদীস বলছে যে নবীজি স্পষ্ট নিষেধ করেছেন যে নামাযে মুখ না ডাকতে,
এখন কেউ যদি মুখ ডাকে তাহলে তো সে হারাম কাজ করলো,এতে তো তার নামায না হওয়ার সম্ভাবনা বেশী।

তবে আপনারা কেন বললেন যে তার নামায হয়ে যাবে,এটা মাকরুহ?
আমি বুঝি নাই এটা,আমাকে বুঝিয়ে দিন।

এ-ই হলো সেই ফতোয়ার লিংক।
https://ifatwa.info/31989/

1 Answer

0 votes
by (589,140 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ
(১)
নামাযের পর সম্মিলিত মুনাজাত সম্পর্কে ফুকাহায়ে কিরামের ভিন্ন রকম পরস্পর বিরোধী মতামত পাওয়া যায়।
অধিকাংশ উলামায়ে কিরাম প্রচলিত পদ্ধতির মুনাজাতকে বিদ'আত আখ্যায়িত করেছেন।(আহসানুল ফাতাওয়া , ৩য় খন্ড , পৃঃ ৬৯৮)
অন্যদিকে কিছুসংখ্যক উলামায়ে কিরাম এটাকে মুস্তাহাব বলেছেন।(ইমদাদুল ফাতাওয়া-১ /৬৪৫ -৬৬৬)

মুফতী মুহাম্মাদ শফী (রাহঃ) বলেন ,
বর্তমানে অনেক মসজিদের ইমামদের অভ্যাস হয়ে গেছে যে , কিছু আবরী দু্’আ মুখস্থ করে নিয়ে সালাত শেষ করেই (দু’হাত উঠিয়ে ) ঐ মুখস্থ দু’আগুলি পড়েন । কিন্তু যাচাই করে দেখলে দেখা যাবে যে , এ দু’আগুলোর সারমর্ম তাদের অনেকেই বলতে পারে না । আর ইমামগণ বলতে পারলেও এটা নিশ্চিত যে , অনেক মুক্তাদী এ সমস্ত দু’আর অর্থ মোটেই বুঝে না । কিন্তু না জেনে না বুঝে আ-মীন , আ-মীন বলতে থাকে । এ সমস্ত তামাশার সারমর্ম হচ্ছে কিছু শব্দ পাঠ করা মাত্র । প্রার্থনার যে রুপ বা প্রকৃতি , তা এতে পাওয়া যায় না ।(মা’আরেফুল কুরআন , ৩য় খন্ড , পৃঃ ৫৭৭)

তিনি আরো বলেন , রাসূল (সাঃ) এবং সাহাবায়ে কেরাম এবং তাবেঈনে ইযাম হ’তে এবং শরীয়তের চার মাযহাবের ইমামগণ হ’তেও সালাতের পরে এ ধরনের মুনাজাতের প্রমাণ পাওয়া যায় না । সারকথা হ’ল , এ প্রথা পবিত্র কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রদর্শিত পন্থা ও সাহাবায়ে কেরামের আদর্শের পরিপন্থি । (আহকামে দু’আ , পৃঃ ১৩)

সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য কথা হল,
যদি আক্বিদা বিশুদ্ধ থাকে তথা এমন থাকে যে,নামাযের পর প্রচলিত মুনাজাত পদ্ধতি জরুরী কোনো বিষয় নয়,বরং ইচ্ছাধীন,তাহলে মুনাজাত বৈধ বা জায়েয।বিদ'আত ও নয় আবার মুস্তাহাব ও নয় বরং জায়েয তথা মুবাহ,করাও যেতে পারে আবার নাও করা যেতে পারে।এই মুনাজাতের উপর পুরুস্কার-তিরস্কার কিছুই আসবে না।এজন্য ইমাম সাহেব কর্তৃক মুসাল্লিদেরকে বিষয়টি জানিয়ে দেয়া উচিৎ,যাতে করে তাদের আক্বিদা- বিশ্বাস বিশুদ্ধ থাকে।মাঝেমধ্যে সম্মিলিত মুনাজাত পরিত্যাগ করাও উচিৎ,যাতে করে জনসাধারণের মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হয় যে,প্রচলিত পদ্ধতির মুনাজাত (বিধান হিসেবে)ফরয বা ওয়াজিব নয়।বিশেষকরে উলামায়ে কেরামের জন্য মাঝেমধ্যে পরিত্যাগ করা উচিৎ এবং জরুরী।এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ক্লিক করুন-https://www.ifatwa.info/372

সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
নামাযের পর দু'আ সালাতের কোনো অংশ নয়,সুতরাং যার ইচ্ছা সে দু'আয় শরীক থাকবে, আর যার ইচ্ছা সে শরীক হবে না। এটা নিয়ে এত চিন্তা করার কোনো প্রয়োজনিয়তা নাই।

(৩)
নামাযে মুখ ডাকতে নিষেধ করেছেন।কিন্তু রাসূলুল্লাহ সাঃ তো বলেননি যে, নামায হবে না। আল্লাহ মানুষকে হত্যা করতে নিষেধ করেছেন,কিন্তু কেউ যদি কাউকে হত্যা করে নেয়, তাহলে সে তো অবশ্যই নিহত হয়ে যাবে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...