আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
309 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (6 points)
আসসালামুয়ালাইকুম

ইমাম আবু হানিফা রহ. " হানাফি " ছিলেন না
ইমাম শাফিঈ রহ. "শাফিঈ" ছিলেন না
ইমাম বিন হাম্বল রহ. "হাম্বলি" ছিলেন না
ইমাম মালিকি রহ. "মালিকি" ছিলেন না।

তারা সবাই রাসুল (স) কে অনুসরণ করতেন। তাহলে আমাদের মাঝে মাযহাব নিয়ে এত বাড়াবাড়ি কেন করি।

চার ইমাম যদি দক্ষ ও বিপুল জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন তাহলে আমরা কে চার টা মাজহাব ই না মেনে শুধু মাত্র একটা একটা করেই মানি,,,,,

চার মাজহাবের আকীদা সম্পর্কে যদি কিছু জ্ঞান দিতেন
আর কেন আমরা একটা মানি চারটাই না।

আর আহালে হাদিস কি যারা নিজেদের কে আহালে হাদিস দাবি করে এদের আকিদা কেমন

1 Answer

0 votes
by (58,500 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

https://ifatwa.info/25889/  নং ফাতাওয়াতে আমরা বলেছি যে,

মহান আল্লাহ তা'আলা ইরশাদ করেনঃ

فَاسْأَلُواْ أَهْلَ الذِّكْرِ إِن كُنتُمْ لاَ تَعْلَمُونَ

জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞেস কর, যদি তোমাদের জানা না থাকে।(সূরা নাহল-৪৩)

 

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ أَطِيعُواْ اللّهَ وَأَطِيعُواْ الرَّسُولَ وَأُوْلِي الأَمْرِ مِنكُمْ 

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহর নির্দেশ মান্য কর, নির্দেশ মান্য কর রসূলের এবং তোমাদের মধ্যে যারা বিচারক তাদের। (সূরা নিসা-৫৯)

 

উক্ত আয়াতে اولي الامرউলূল আমর এর ব্যখ্যায় হযরত জাবের রাযি, হযরত ইবনে আব্বাস রাযি,'তা রাহ,মুজাহিদ রাহ,যাহহাক,আবুল আলিয়া রাহ,হাসান বসরি রাহ সহ অসংখ্য সাহাবা, তাবেঈন ও তাবে তাবেঈন উল্লেখ করেন যে,এখানে উলূল আমর দ্বারা খুলাফা,উলামা,ফুকাহা উদ্দেশ্য।স্বয়ং আহলে হাদীসদের ইমাম নাওয়াব সিদ্দিক হাসান খান রাহও এ ব্যখ্যাকে নিজ তাফসীরের কিতাবে উল্লেখ করেছেন।

তাছাড়া হাদীসে এসেছে,

انما شفاء العي السوال 

বক্রতা বা অজ্ঞদের শে'ফা হল,তারা জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা করবে।

এখন প্রশ্ন হল জ্ঞানী কারা?সমাজে যাদেরকে আলেম বলা হয়,তারাই কি জ্ঞানী?না এর জন্য বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্যর প্রয়োজন রয়েছে?

 

যার তাকলীদ করা হবে, তার বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে উলামায়ে কেরাম একটা পরিমাণ নির্ধারণ করে দিয়েঝেন।

শাহ ওয়ালী উল্লাহ মুহাদ্দিসে দেহলভী রাহ, উনার অমর গ্রন্থ আকিদাতুল-জায়্যিদ এ সম্পর্কে বিস্তারিত লিখেছেন।মোটকথাঃ এ সমস্ত শর্তসমূহ আজকাল প্রায় বিরল।

 

 তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে যথাঃ-

(১)তাকলীদে শাখসী বা ব্যক্তি তাকলীদ।অর্থাৎ শরীয়তের প্রত্যেকটি মাস'আলায় নির্দিষ্ট কোনো একজনকে তাকলীদ করা।

(২)তাকলীদে গায়রে শাখসী বা স্বাধীন তাকলীদ, অর্থাৎ যেকোনো মাস'আলায় যেকোনো একজনকে তাকলীদ করা।সহজ কথা নিজের ইচ্ছানুযায়ী একেক মাস'আলায় একেকজনের তাকলীদ করা।

 

মুতাওয়াতির পর্যায়ের বর্ণনার মাধ্যমে প্রমাণিত রয়েছে যে, কারো কোনো মাস'আলা জানা না থাকলে না,তিনি বিজ্ঞজনের তাকলীদ করবেন।তাকলীদ করা ফরয।এটা হলো মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদের বিধান।সমস্ত উলামায়ে কেরাম এমনকি আহলে হাদীসের মুহাক্বিক ইমামগনও মতলকে তাকলীদ তথা সাধারণ তাকলীদকে স্বীকার করে থাকেন।অধিকাংশ আহলে হাদীস সাধারণ তাকলীদের ফরযিয়্যাতেরও প্রবক্তা।

 

সুতরাং অজ্ঞদের জন্য বিজ্ঞজনের তাকলীদ করা যে ফরয,এতে কারো দ্বিমত নেই,মতবিরোধ নেই।

 

তাকলীদের পদ্ধতি নিয়ে মতবিরোধ রয়েছে।

তাকলীদে শাখসী করা হবে না গায়রে শাখসী করা হকে।

আহলে সুন্নাহ ওয়াল জামাত তাকলীদে শাখসী গ্রহণযোগ্য মনে করেন।এবং এ ব্যাপারে তারা ওয়াজিবের বিধান প্রয়োগ করেন।ফরযের বিধান এজন্য আরোপ করেন না।

,

কেননা সাধারণ তাকলীদের দু'টি শাখা রয়েছে।(ক)তাকলীদে শাখসী(খ)তাকলীদে গায়রে শাখসী।যেহেতু সর্বসম্মতভাবে মতলকে তাকলীদ ফরয।এবং তার দু'টি শাখা রয়েছে।তাই কোনো একটাকে মেনে নিলেই ফরয বিধান যে তাকলীদ রয়েছে,সেটা পালন হয়ে যাবে। চায় শাখসীকে পালন করা হোক বা গায়রে শাখসীকে পালন করা হোক।সুতরাং তাকলীদে গায়রে শাখসী করা দ্বারা ঠিক সেভাবেই ফরয দায়িত্ব আদায় হবে,যেভাবে তাকলীদে শাখসী দ্বারা ফরয দায়িত্ব আদায় হয়। 

,

বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/1936

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,বোন,

চার মাযহাবের সকল মতই সহীহ।

তাই আপনি যেকোনো এক মাযহাব মানতে পারেন।

 

সরাসরি ক্বুরআন ও সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করতে হলে নিজের ভিতর বেশ কিছু যোগ্যতার প্রয়োজন রয়েছে,সেগুলো অর্জন করতে পারলে সরাসরি ক্বুরআন ও সহীহ সুন্নাহ অনুযায়ী আমল করতে পারবেন।

 

বিস্তারিত জানুনঃ  

https://ifatwa.info/21398/

 

একটি বিষয় জেনে রাখা প্রয়োজনঃ-

 

যখন বাহ্যিক বিপরিত মুখি আয়াত ও হাদীস হয়,বা বাহ্যিক বিপরিত মুখি দুই হাদীস হয়,বা কুরআন হাদীসে স্পষ্ট আকারে বিধান না পাওয়া যায়,ইত্যাদি সময়েই ইজতিহাদ করে ইমাম গন মাসয়ালা পেশ করে থাকেন।

,

যদি প্রশ্নে উল্লেখিত মাসয়ালার ক্ষেত্রে বাহ্যিক বিপরিত মুখি আয়াত ও হাদীস হয়,বা বাহ্যিক বিপরিত মুখি দুই হাদীস না হতো,তাহলে উভয় মাযহাবে কোনো মতবিরোধ হতোনা।

,

এক্ষেত্রে ইজতিহাদে কাহারো ভুল হলেও ছওয়াব আছে। 

 

মুজতাহিদ ভুল করলেও একটি সওয়াব।

عَنْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ -صلى الله عليه وسلم- « إِذَا حَكَمَ الْحَاكِمُ فَاجْتَهَدَ فَأَصَابَ فَلَهُ أَجْرَانِ وَإِذَا حَكَمَ فَاجْتَهَدَ فَأَخْطَأَ فَلَهُ أَجْرٌ

হযরত আমর বিন আস রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ যখন কোন বিশেষজ্ঞ হুকুম বলতে গিয়ে ইজতিহাদ করে, আর তার ইজতিহাদ সঠিক হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে দু’টি সওয়াব। আর যদি ইজতিহাদে ভুল হয়, তাহলে তার জন্য রয়েছে একটি সওয়াব। {সহীহ বুখারী, হাদীস নং-৬৯১৯, সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-৪৫৮৪, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৫৭৬}

 

আরো জানুনhttps://ifatwa.info/23881/?show=23881#q23881

আরো জানুন  - https://ifatwa.info/8250/?show=8250#q8250


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...