আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
220 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (13 points)
আসসালামু আলাইকুম।

স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে অনেক দিন যাবত মনোমালিন্যতা চলছে। স্ত্রী রাগ করে কয়েকবার এমন বলেছে যে, আমাকে মুক্তি দাও, আমাকে ছেড়ে দাও, তুমি যাকে পছন্দ কর তাকে বিয়ে করো আমাকে ছেড়ে দাও,আমি স্বেচ্ছায় চলে যাব,এ সংসার আমি আর করব না, আমি তোমাকে ছেড়ে দিব,এ সংসারে আমি আর থাকতে চাইনা। (কোন একটা বিষয় নিয়ে রাগ করে স্ত্রী বলেছে এসব শব্দ কিন্তু আসলে তাঁর মনে স্বামী কে ছাড়ার নিয়ত নাই। স্বামী যেন ঠিক হয়ে যায় তাই এবং বলে বারবার)। কিন্তু প্রতিউত্তরে স্বামী মুখে কিছু বলেননি। তিনি কোনদিন এ ধরণের বাক্য উচ্চারণ করেননি। এখন প্রশ্ন হলো

১. স্ত্রীর যদি তালাকের অধিকার দেয়া থাকে চাইলে কি উক্ত শব্দ গুলো দ্বারা তালাক হয়েছে? আর স্ত্রীর অধিকার না থাকলে কি উক্ত শব্দসমূহ দ্বারা তালাক পতিত হবে?

২. স্বামী একদিন ঝগড়ার এক পর্যায়ে রাগ করে বলেছে "যা"। যদি "যা" শব্দ দ্বারা তার মনে নিয়ত থাকে তালাক তবে এ কথার দ্বারা কি তালাক হয়েছে? আর যদি তালাকের নিয়ত না থাকে তবে কি তালাক হবে?

৩. শ্বাশুড়ি রাগ করে বলেছে আমার ছেলেকে তালাক দিয়ে দাও, স্ত্রী বলেছে আচ্ছা দিয়ে দিব। এ কথার দ্বারা কি তালাক হয়েছে?

1 Answer

0 votes
by (60,240 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ ابْنِ عَبَّاسٍ قَالَ أَتَى النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم رَجُلٌ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ إِنَّ سَيِّدِي زَوَّجَنِي أَمَتَهُ وَهُوَ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنِي وَبَيْنَهَا قَالَ فَصَعِدَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم الْمِنْبَرَ فَقَالَ يَا أَيُّهَا النَّاسُ مَا بَالُ أَحَدِكُمْ يُزَوِّجُ عَبْدَهُ أَمَتَهُ ثُمَّ يُرِيدُ أَنْ يُفَرِّقَ بَيْنَهُمَا إِنَّمَا الطَّلَاقُ لِمَنْ أَخَذَ بِالسَّاقِ

ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনএক ব্যক্তি নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর নিকটে এসে বললোহে আল্লাহর রসূল! আমার মনিব তাঁর বাদীকে আমার সাথে বিবাহ দিয়েছে। এখন সে আমার আর আমার স্ত্রীর মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়। রাবী বলেনরসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) মিম্বারে আরোহণ করলেনঅতঃপর বললেনহে লোকসকল! তোমাদের কারো এরূপ আচরণ কেন করো যেসে তার গোলামের সাথে তার বাদীর বিবাহ দেয়অতঃপর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটাতে চায়নারীর ঊরু স্পর্শ করা যার জন্য বৈধতালাকের অধিকার তার। [সুনানে ইবনে মাজাহ ২০৮১]

 

হাদীস শরীফে এসেছে-

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم " ثَلاَثٌ جِدُّهُنَّ جِدٌّ وَهَزْلُهُنَّ جِدٌّ النِّكَاحُ وَالطَّلاَقُ وَالرَّجْعَةُ " . قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ غَرِيبٌ .

আবূ হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিততিনি বলেনরাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনতিনটি বিষয় এমন যেগুলির যথার্থ তো যথার্থই এমনকি সেগুলোর কৌতুকের ব্যবহারও যথার্থ: বিবাহতালাকরাজআত। - ইবনু মাজাহ ২০৩৯তিরমিজী হাদিস নম্বরঃ ১১৮৫ ইমাম আবূ ঈসা (রহঃ) বলেনএই হাদীসটি হাসান-গারীব।

 

 বিনা কারণে তালাক আবেদন কারী মহিলা সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,

 ﺃَﻳُّﻤَﺎ ﺍﻣْﺮَﺃَﺓٍ ﺳَﺄَﻟَﺖْ ﺯَﻭْﺟَﻬَﺎ ﻃَﻼَﻗًﺎ ﻓِﻰ ﻏَﻴْﺮِ ﻣَﺎ ﺑَﺄْﺱٍ ﻓَﺤَﺮَﺍﻡٌ ﻋَﻠَﻴْﻬَﺎ ﺭَﺍﺋِﺤَﺔُ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔِ . ‘

যে মহিলা বিনা কারণে তার স্বামীর নিকটে তালাক্ব চায়তার জন্য জান্নাতের সুগন্ধিও হারাম’

[আবুদাউদ হা/২২২৬তিরমিযী হা/১১৮৭ইবনু মাজাহ হা/২০৫৫মিশকাত হা/৩২৭৯সনদ ছহীহ।].

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

. তালাক দেওয়ার অধিকার শুধু স্বামীর। তবে যদি স্বামী তার স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার অধিকার দিয়ে দেয় তাহলে সে ক্ষেত্রে স্ত্রী সে তার নিজের নফসের উপর তালাক দিতে পারবে। এভাবে বললে (আমি আমার নিজের উপর তালাক দিলাম) তালাক হবে। অন্যথায় স্ত্রী যদি স্বামীকে বলে যে, ‘আমি তোমাকে তালাক দিলাম বা ছেড়ে দিব’। তাহলে এতে কোনো তালাক পতিত হয় না।

 

২. ‘যা’ বা ‘যাও’ শব্দটা কেনায়া তালাকের অন্তর্ভূক্ত। তাই এই শব্দ দ্বারা তালাকের নিয়ত থাকলে এক তালাকে বায়েন পতিত হবে। আর তালাকের নিয়ত না থাকলে কোন তালাক পতিত হবে না।

 

৩. না, এতে কোন তালাক পতিত হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...