স্বামী ও শাশুড়ি দুনিয়াবী পড়াশোনা করতে দিতে না চাইলে কি করণীয় I

Question

আমি  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান নিয়ে পড়ছি।

আমি পর্দা করি আর ফ্রি মিক্সিং যতটা পারি এড়িয়ে চলি। কোনো পড়ার বিষয় দরকার হলে আগে মেয়েদের হেল্প নিই। যদি একান্তই না হয় তখন ছেলেদের হেল্প নিই। তা ছাড়া কারও সাথেই তেমন মিশি না। ক্লাস করি, ক্লাস এর বিরতিতে একাই থাকি ক্লাস সেরে চলে আসি।

সকালে উঠে বাচ্চার রান্না ম্যাক্সিমাম দিন করে রেখে যাওয়ার চেষ্টা করি। ফিরতে দেরি হলে শাশুড়ি খাওয়ায় দেন। জামাইয়ের খাবার করে রাখি বা করে রেখে সবসময় যেতে পারি না। শাশুড়ি করেন সেক্ষেত্রে। ক্লাস শেষে অকারণে ভার্সিটিতে স্টে করিনা বাচ্চার কাছে যেতে দেরি হবে তাই। নামাজের সময় হলে পড়েও নিই।

আমার শাশুড়ি লেখাপড়া পছন্দ করেন না। উনি বলেন মেয়েদের দুনিয়াবি পড়াশোনা না-জায়েজ। এটা নিয়ে প্রায় অশান্তিও করেন।
এখন আমার প্রশ্ন হল, আমার এই পড়াশোনা কি শ রীয়াহ বিরোধী? বা আমার কি এটা ছেড়ে দেওয়া উচিত
??
এদিকে আমারো মা বাবা চান  আমি পড়া ছেড়ে না দেই I আমারো মা বলছেন  যদি পড়া  ছেড়ে দেই তাহলে আমাকে কখনো উনি ক্ষমা  করবেন  না I

Answer 1

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

স্ত্রী তার স্বামীর আনুগত্য করবে যদি সে হারাম এবং সাধ্যের অতিরিক্ত কোন কাজের আদেশ না করে। সেই সাথে যথাসাধ্য তার সেবা করবে।

হাদীস শরীফে এসেছেঃ

عَنْ أَنَسٍ قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللّٰهِ ﷺ : «الْمَرْأَةُ إِذَا صَلَّتْ خَمْسَهَا وَصَامَتْ شَهْرَهَا وَأَحْصَنَتْ فَرْجَهَا وَأَطَاعَتْ بَعْلَهَا فَلْتَدْخُلْ مِنْ أَىِّ أَبْوَابِ الْجَنَّةِ شَاءَتْ»

আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মহিলা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সলাত আদায় করে, রমাযানের সিয়াম পালন করে, গুপ্তাঙ্গের হিফাযাত করে, স্বামীর একান্ত অনুগত হয়। তার জন্য জান্নাতের যে কোনো দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশের সুযোগ থাকবে। (মিশকাত ৩২৫৪.হিলইয়াতুল আওলিয়া ৬/৩০৮।)

أَخْبَرَنَا قُتَيْبَةُ قَالَ حَدَّثَنَا اللَّيْثُ عَنْ ابْنِ عَجْلَانَ عَنْ سَعِيدٍ الْمَقْبُرِيِّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قِيلَ لِرَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أَيُّ النِّسَاءِ خَيْرٌ قَالَ الَّتِي تَسُرُّهُ إِذَا نَظَرَ وَتُطِيعُهُ إِذَا أَمَرَ وَلَا تُخَالِفُهُ فِي نَفْسِهَا وَمَالِهَا بِمَا يَكْرَهُ

কুতায়বা (রহঃ) ... আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেনঃ একদা রাসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে প্রশ্ন করা হলো, কোন মহিলা উত্তম? তিনি বললেনঃ যে মহিলার প্রতি দৃষ্টিপাত স্বামীকে সন্তুষ্ট করে। সে আদেশ করলে তা সম্পন্ন করে, এবং তার বাড়ীর ও তার মালের ব্যাপারে যা অপছন্দ করে, সে তার বিরোধিতা করে। (সুনানে নাসায়ী ৩২৩৪.মিশকাত ৩২৭২, সহীহাহ ১৮৩৮।)

আরো জানুনঃ https://ifatwa.info/13963/

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি বোন,

শরীয়তের খেলাফ স্বামীর কোনো আদেশ মান্য করা জরুরি নয়। তবে শরঈ কোন হুকুম করলে স্বামীর আনুগত্য করা আবশ্যক। প্রশ্নেল্লিখিত ছুরতে স্বামীর অনুমতিক্রমে পরিপূর্ণ পর্দা মেইনটেইন করে পড়াশুনা করা জায়েয আছে। তবে স্বামীর বিনা অনুমতিতে পড়াশুনা করা জায়েয হবে না। আপনার মাকে বুঝানোর চেষ্টা করবেন যে, তিনি যেন এজাতীয় কথা না বলেন। কারণ, বিয়ের পরে স্বামীর অনুমতি ছাড়া নফল নামাজ পড়তেও হাদিসে নিষেধ করা হয়েছে,  সেখানে দুনিয়াবি পড়াশুনার তো কোন প্রশ্নই উঠে না। তবে হ্যাঁ আপনার স্বামী ও শাশুড়ীকে বুঝিয়ে পড়াশুনা চালানো যদি আপনার পক্ষে সম্ভবপর হয় তাহলে তা করতে পারেন। অন্যথায় আপনার সন্তান,স্বামী ও সংসারের দিকে বিবেচনা করে পড়াশুনা না করাই শ্রেয়।