আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
558 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (7 points)
হযরতের নিকট জানতে চাই, মহিলা মাদরাসায় পুরুষ শিক্ষক পর্দার আড়ালে থেকে পড়াতে পারবে কি না। পড়ানোর সময় তাদের থেকে পড়া নিতে পারবে কি না। ছাত্রীদের থেকে কুরআন তিলাওয়াত ও ইবারত শুনতে পারবে কি না। আমরা তো জানি মেয়েদের কণ্ঠ ও সতর।

পুরুষ মাদরাসায় অনেক সময় ছাত্র শিক্ষক রা নানা রকম জীবন ঘনিষ্ট কথা বার্তা বলে থাকে, অনেক সময় হাস্য রস ও হয়, মহিলা মাদরাসায় ছাত্রীদের সাথে কি এমন কথাবার্তা বলা যাবে কি না?
এসব বিষয়ে স্পষ্ট দলিল সহ আলোচনা করলে অনেক উপকৃত হতাম।
আল্লাহ আপনাকে জাজায়ে খায়ের দান করুন। আমিন।

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

      প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েদের জন্য শরীয়াতের বিধান হলো, একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া। বাড়ীতেই অবস্থান করা। কেননা নবী করীম স. ইরশাদ করেছেন: মহিলা হলো গোপনীয় বস্তু, যখন সে বাহিরে বের হয় তখন শয়তান তার দিকে দৃষ্টি দেয়; যেন তাকে এবং তার দ্বারা অন্যদেরকে বিপথগামী করা যায়।(মিরকাত 6/282)

এজন্য ফুকাহায়ে কেরাম মহিলাদের ঘর হতে বের হতে নিষেধ করেছেন। তারা দ্বীনের প্রয়োজনীয় ইলম যেমন: নামায,রোজা ও অন্যান্য মাস’য়ালা মাহরামের কাছ থেকে জেনে নিবে। তবে ঘরে শিখানোর মত কোন মাহরাম না থাকলে; যেমন,আজকাল অধিকাংশ অভিভাবকেরই এ অবস্থা যে, তারা তাদের পরিবাস্থদের দ্বীন শিখাবে তো দুরের কথা তারাই দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞ। ফলে তাদের পরিবারও দ্বীন সম্পর্কে অজ্ঞই থাকে। এমতাবস্থায় জরুরী মাস’য়ালা শিখার জন্য প্রাপ্ত বয়স্কা মেয়েরা পূর্ণশরঈ পর্দা করে নিজ এলাকায়, দুরে নয় এমন কোন মাদ্রাসায় গিয়ে ইলম শিখতে পারবে।

মহিলা মাদ্রাসায় প্রাপ্তবয়স্ক মেয়েদের পড়ানোর ক্ষেত্রে পুরুষ শিক্ষকের শিক্ষকতা অনেক ইসলামী স্কলারদের মতে সম্পুর্ন নাজায়েজ। তবে কিছু কিছু ইসলামী স্কলারগন কতিপয় শর্তের ভিত্তিতে জায়েজ বলেছেন।

মহিলা মহিলা শিক্ষকের নিকট দ্বীনী ইলম ও বিভিন্ন বিষয়ে জ্ঞানার্জন করবে- এটাই সব চেয়ে নিরাপদ ও সঠিক পদ্ধতি। কিন্তু যদি মহিলা শিক্ষক না পাওয়া যায় তখন পর পুরুষের নিকট শর্ত সাপেক্ষে শিক্ষার্জন করা জায়েয আছে। যেমন,

১. নির্জনতা অবলম্বন করা যাবে না।

২.পূর্ণ পর্দা রক্ষা করতে হবে।

৩.নিয়ত শুদ্ব করা।

৪.মাদ্রাসায় যাতায়াতের সময় অভিভাবক সাথে থাকা।

৫.মহিলাকে অন্তরালে থাকতে হবে।

৬.মহিলা কোমল কণ্ঠে কথা বলা থেকে দূরে থাকবে।

৭.তারা উভয়ে প্রয়োজনের অতিরিক্ত কথা বলবে না

৮.এবং সর্বোপরি ফেতনা থেকে দুরে থাকতে হবে।

৯.ফিতনার বিন্দুমাত্র আশংকা না থাকা,ইত্যাদি।

এ সব শর্ত সাপেক্ষে পরপুরুষের নিকট দ্বীনী ইলম বা দুনিয়াবি প্রয়োজনীয় বিষয় শিক্ষা অর্জন করা জায়েয আছে।

ইবারত পড়া বা সবক শুনানোর ক্ষেত্রে কমল কন্ঠ পরিহার করতে হবে।

আল্লাহ তাআলা বলেন:

إِنِ اتَّقَيْتُنَّ فَلَا تَخْضَعْنَ بِالْقَوْلِ فَيَطْمَعَ الَّذِي فِي قَلْبِهِ مَرَضٌ

অর্থ:“যদি তোমরা আল্লাহকে ভয় কর, তবে পরপুরুষের সাথে কোমল ও আকর্ষণীয় ভঙ্গিতে কথা বলো না, ফলে সেই ব্যক্তি কুবাসনা করে, যার অন্তরে ব্যাধি রয়েছে।” (সূরা আহযাব: ৩২)”

আরো বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন:

https://ifatwa.info/25340/?show=25340#q25340

https://www.ifatwa.info/212

সুতরাং প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!

সবচেয়ে উত্তম হলো মেয়েরা মহিলা শিক্ষকের নিকটে পড়বে আর বর্তমান সময়ে ফেতনা থেকে বাচার জন্য ইহাই সবচেয়ে নিরাপদ পন্থা। তবে যোগ্য মহিলা শিক্ষক না পাওয়া গেলে বিশেষ প্রয়োজনে পুরুষ শিক্ষকের নিকটেও পড়ার অনুমতি রয়েছে। তবে সে ক্ষেত্রে অবশ্যয় উপরে উল্লেখিত শর্তসমূহ মেনে চলতে হবে । অন্যথায় তা বৈধ হবে না। কোন পুরুষ শিক্ষক মেয়েদের সাথে জীবন ঘনিষ্ট কথা বার্তা বা হাস্য রসমূলক কথা বার্তা পরিহার করাই শ্রেয়। কেননা এতে ফেতনার আশঙ্কা থাকে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...