بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব ,
মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
اَلۡیَوۡمَ اُحِلَّ لَکُمُ الطَّیِّبٰتُ
ؕ وَ طَعَامُ الَّذِیۡنَ اُوۡتُوا الۡکِتٰبَ حِلٌّ لَّکُمۡ ۪ وَ طَعَامُکُمۡ حِلٌّ
لَّہُمۡ ۫
আজ তোমাদের জন্য সমস্ত ভাল জিনিস হালাল করা হল ও যাদেরকে কিতাব
দেয়া হয়েছে তাদের খাদ্যদ্রব্য তোমাদের জন্য হলাল এবং তোমাদের খাদ্যদ্রব্য তাদের জন্য
বৈধ। (সুরা মায়েদা ০৫)
অধিক মুনাফার আশায় খাদ্যদ্রব্য মজুদের মাধ্যমে কৃত্রিম সংকট
সৃষ্টি করে মানুষকে কষ্ট দেয়া ইসলামের দৃষ্টিতে সম্পূর্ণ হারাম। এ ধরনের লোকের কোনো
ইবাদত কবুল হয় না বলে হাদিসে স্পষ্ট বর্ণনা এসেছে। মজুদকৃত দ্রব্য সরকার নিজের জিম্মায়
নিয়ে বিক্রি করে দেয়ার অধিকারও রাখে।
আরো সহজ ভাষায় বলা যায়,
খাদ্যদ্রব্য মজুদ করে অথবা তা বাজার থেকে তুলে নিয়ে দাম বাড়িয়ে মানুষকে
কষ্ট দেয়া ইসলামে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
হানাফি মাজহাব মতে মাকরূহে তাহরিমি (হারাম সমতুল্য)। তবে অন্যান্য
মাজহাবে হারাম করা হয়েছে।
এসম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, আল্লাহপাক তার ওপর দরিদ্রতা চাপিয়ে দেন। (আবু দাউদ, হাদিস
নম্বর: ৫৫)।
অপর আরেকটি হাদিসে আছে,
যে ব্যক্তি খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অভিশপ্ত। ‘ (ইবনে মাজাহ)।
এসম্পর্কে আরেকটি হাদিসে আছে, যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার মজুদ রাখে, সে
আল্লাহর জিম্মা থেকে বেরিয়ে যায়। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা : ২০৩৯৬)।
এ ধরনের কাজে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাস পায় এবং অনেক
মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। তাদের কষ্ট বাড়িয়ে দেয়। তাই ইসলাম এ প্রকার কাজকে হারাম ঘোষণা
করেছে।
ব্যবসায়িক পণ্য বিক্রি না করে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে বর্ধিত
মুনাফা আদায়ের প্রচেষ্টা শুধু ইসলাম নিষিদ্ধ করেনি বরং এটি একটি সামাজিক অপরাধ। এসম্পর্কে
আরো একটি হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি
খাদ্যশস্য গুদামজাত করে সে অপরাধী। (আল মু’জামুল কাবির : ১০৮৬)।
তবে গুদামজাত পণ্য যদি মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় বস্তু না হয় কিংবা
মানুষ এর মুখাপেক্ষী না হয় অথবা এসব পণ্য চাহিদার অতিরিক্ত হয় বা গুদামজাতকারী বর্ধিত
মুনাফা অর্জনের অভিলাষী না হয়, তাহলে এসব অবস্থায় পণ্য মজুদ রাখা অবৈধ নয়।
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ইসলামের প্রাথমিক যুকে মুসলিম দারিদ্রতার পরিমাণ বেশী থাকায়
কোন মুসলমানের জন্য দীর্ঘ সময়ের জন্য খাদ্য সামগ্রী জমা করে রাখার ব্যাপারে মুসলমানদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছিল। যাতে মানুষ মাল সম্পদ জমা না করে অন্যান্ন গরীব সাহাবীদের
প্রতি দানের হাত সম্প্রসারিত করেন। তবে পরবর্তিতে মুসলমানদের আর্থিক সচ্ছলতা বৃদ্ধি
পাওয়াই পূর্বের নিষেধাঙ্গা অবশিষ্ট ছিল না। কোন ধনী ব্যক্তি যে যাকাতের নেসাব পরিমান
মালের মালিক সে তার সম্পদের যাকাত আদায় করার পাশাপাশি সম্পদ বা নিত্যপ্রয়োজনীয়
খাদ্যসামগ্রী জমা করলে কোন অসুবিধা নেই। তবে সাহাবীদের মধ্যে কিছু কিছু
সাহাবী পূর্ণ তাক্বওয়া অবলম্বন করার দৃষ্টিকোন থেকে তিন দিনের বেশী কোন খাদ্য সামগ্রী
জমা করাকে অপছন্দ করতেন।