ওয়া আলাইকুমুস-সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহাম।
জবাবঃ-
https://www.ifatwa.info/466 নং ফাতাওয়ায় আমরা বলেছি যে,
এখন সহসাই প্রশ্ন জাগতে পারে যে, তাহলে কোন প্রকার/ধরণের পরিবর্তন-পরিবর্ধন হারাম?
কেননা আমরা কিছু পরিবর্তন কে জায়েয বলে জানি ও দেখি।
যেমনঃ- মুছ কাটা,নক কাটা,গোপ্তস্তান পরিস্কার করা,ইত্যাদি ইত্যাদি।
এবং আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন করা হালাল না হারাম?
এ সম্পর্কে মূলনীতি কি?
প্রতি উত্তরে বলা যায় যে,
উলামাগণ এর অনেক কারণ বের করে থাকেন।
আল্লামা কুরতুবী রাহ বলেনঃ
ﻗﺎﻝ ﺍﻟﻘﺮﻃﺒﻲ ﺭﺣﻤﻪ ﺍﻟﻠﻪ : " ﻭﻫﺬﻩ ﺍﻷﻣﻮﺭ ﻛﻠﻬﺎ ﻗﺪ ﺷﻬﺪﺕ ﺍﻷﺣﺎﺩﻳﺚ ﺑﻠﻌﻦ ﻓﺎﻋﻠﻬﺎ ﻭﺃﻧﻬﺎ ﻣﻦ ﺍﻟﻜﺒﺎﺋﺮ ، ﻭﺍﺧﺘﻠﻒ ﻓﻲ ﺍﻟﻤﻌﻨﻰ ﺍﻟﺬﻱ ﻧﻬﻰ ﻷﺟﻠﻬﺎ ، ﻓﻘﻴﻞ : ﻷﻧﻬﺎ ﻣﻦ ﺑﺎﺏ ﺍﻟﺘﺪﻟﻴﺲ ، ﻭﻗﻴﻞ : ﻣﻦ ﺑﺎﺏ ﺗﻐﻴﻴﺮ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ﻛﻤﺎ ﻗﺎﻝ ﺍﺑﻦ ﻣﺴﻌﻮﺩ ، ﻭﻫﻮ ﺃﺻﺢ ، ﻭﻫﻮ ﻳﺘﻀﻤﻦ ﺍﻟﻤﻌﻨﻰ ﺍﻷﻭﻝ ، ﺛﻢ ﻗﻴﻞ : ﻫﺬﺍ ﺍﻟﻤﻨﻬﻲ ﻋﻨﻪ ﺇﻧﻤﺎ ﻫﻮ ﻓﻴﻤﺎ ﻳﻜﻮﻥ ﺑﺎﻗﻴﺎً ؛ ﻷﻧﻪ ﻣﻦ ﺑﺎﺏ ﺗﻐﻴﻴﺮ ﺧﻠﻖ ﺍﻟﻠﻪ ﺗﻌﺎﻟﻰ ، ﻓﺄﻣﺎ ﻣﺎﻻ ﻳﻜﻮﻥ ﺑﺎﻗﻴﺎً ﻛﺎﻟﻜﺤﻞ ﻭﺍﻟﺘﺰﻳﻦ ﺑﻪ ﻟﻠﻨﺴﺎﺀ ﻓﻘﺪ ﺃﺟﺎﺯ ﺍﻟﻌﻠﻤﺎﺀ ﺫﻟﻚ "
এই সমস্ত জিনিষে অভ্যস্ত লোকদেরকে হাদীসে অভিসম্পাত করা হয়েছে এবং তা কবিরা গুনাহ।কোন কারণে নিষেধ করা হয়েছে এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মধ্যে মতবিরোধ পরিলক্ষিত হয়।
কেউ বলেন দোষ গোপন করে ধোকা দেওয়ার কারণে,আবার কেউ বলেন,আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন আনার কারণে যেমনটা ইবনে মসউদ রাযি বলেছেন।ইবনে মাসউদ রাযি এর উল্লিখিত কারণটাই হারাম হওয়ার বিশুদ্ধ কারণ বলে মনে হয়।এবং এই ব্যাখ্যা প্রথমোক্ত অর্থকেও শামিল রাখে।অতঃপর বলা হয়,এই নিষেধাজ্ঞা শুধুমাত্র ঐ সমস্ত বিষয়ে যাতে পরিবর্তনটা স্থায়ীভাবে থাকে, সুতরাং যে সমস্ত পরিবর্তন স্থায়ীভাবে অবশিষ্ট থাকে না,যেমন সুরমা ওমহিলাদের বিভিন্ন প্রকার সৌন্দর্যবর্ধন সামগ্রী তা জায়েয-ই হবে।
(তাফসীরে ক্বুরতুবী৫/৩৯৩)
ইমাম ক্বুরতুবী রাহ এর উপরোল্লিখিত বক্তব্যে হারাম হওয়ার একটি সুনির্দিষ্ট মূলনীতির দিকে ইঙ্গিত পাওয়া যায়।
আর তা হল,স্থায়ী "তাগাইয়ুরে খালক্বিল্লাহ"
(অর্থাৎ আল্লাহর সৃষ্টিতে পরিবর্তন ও পরিবর্ধন যা স্থায়িভাবে থাকবে)
ইমাম ক্বুরতুবী রাহ এর উক্ত আলোচনা থেকে অনুধাবনকৃত মূলনীতি অত্যন্ত সুস্পষ্ট বলেই মনে হচ্ছে।কেননা উনার বর্ণনাকৃত মূলনীতির আলোকে পরস্পর বিরোধী বর্ণনা তথা হাদীসে বর্ণিত(আল্লাহর সৃষ্টিতে)হারাম পরিবর্তন এবং হালাল পরিবর্তন যেমন সুরমা ইত্যাদির মধ্যে একটা সামঞ্জস্যসাধন অদ্য সম্ভবপর হবে।(শেষ)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
যেহেতু চুলের রিবন্ডিংটা স্থায়ী নয়, তাই জায়েযের ফাতাওয়া দেয়া হয়ে থাকে।
তবে আপনি যদি ক্ষতিকর মনে করেন, তাহলে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখবেন।