ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
প্রস্রাব ব্যতীত
যৌনাঙ্গ থেকে যা কিছু বাহির হয় তা তিন প্রকারঃ-
(১) মনি (বীর্য)
وَمَنِيُّ
الرَّجُلِ خَاثِرٌ أَبْيَضُ رَائِحَتُهُ كَرَائِحَةِ الطَّلْعِ فِيهِ لُزُوجَةٌ
يَنْكَسِرُ الذَّكَرُ عِنْدَ خُرُوجِهِ، وَمَنِيُّ الْمَرْأَةِ رَقِيقٌ أَصْفَر
পুরুষের মনি বা
বীর্য হলঃ-যা সাদা গাঢ় একপ্রকার গন্ধমাখা পিচ্ছিল পানি যা উত্তেজনার সাথে আটকিয়ে
আটকিয়ে বের হয়,এবং বের হওয়ার সাথে সাথে পুঃলিঙ্গ নেতিয়ে
পড়ে,আর মহিলার বীর্য হল,পাতলা প্রায় হলুদ বর্ণের ।
(২) মযি
وَالْمَذْيُ
رَقِيقٌ يَضْرِبُ إلَى الْبَيَاضِ يَبْدُو خُرُوجُهُ عِنْدَ الْمُلَاعَبَةِ مَعَ
أَهْلِهِ بِالشَّهْوَةِ
মযিঃ- যা স্ত্রীকে
কামুত্তেজনায় স্পর্শের পূর্বে বাহির হয়,এবং যা দেখতে
প্রায় সাদা রঙ এর।এবং মহিলার ও বের হয় তবে তাকে "কাযয়ুন"বলা হয়।
(৩) ওদী
وَالْوَدْيُ بَوْلٌ غَلِيظٌ وَقِيلَ
مَاءٌ يَخْرُجُ بَعْدَ الِاغْتِسَالِ مِنْ الْجِمَاعِ وَبَعْدَ الْبَوْلِ. كَذَا
فِي التَّبْيِينِ.
ওদীঃ- গাঢ়
প্রস্রাব,কেউ কেউ বলেনঃ ঐ পানি যা সহবাসের পরে
গোপনাঙ্গ ধৌত করা পর বাহির হয় এবং যা প্রস্রাবের পর বাহির হয়।
উপরোক্ত
তিনপ্রকারেরর মধ্যে
শুধুমাত্র মনি বের
হলে গোসল ফরজ হবে। অন্যান্যগুলো বের হলে গোসল ফরজ হবেনা। বরং গোপনাঙ্গ ধৌত করে ওজু
করে নিলেই পবিত্রতা অর্জিত হবে। এক্ষেত্রে গোসলের কোনো প্রয়োজন পড়বেনা।
যেমনঃ- ফাতওয়ায়ে
হিন্দিয়াতে বর্ণিত আছে.............
الْمَذْيُ يَنْقُضُ الْوُضُوءَ
وَكَذَا الْوَدْيُ وَالْمَنِيُّ إذَا خَرَجَ مِنْ غَيْرِ شَهْوَةٍ
মযি অজুকে ভেঙ্গে
দেয় ঠিক তেমনিভাবে ওদী এবং ঐ মনি যা কামুত্তেজনা বতীত বাহির হয় তাও ওজুকে ভেঙ্গে
দেয়। (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া -১/১০)
শরীয়তের বিধান হলো উত্তেজনা ব্যতীত বীর্য বের হলে গোসল ফরজ হয় না। কেননা, গোসল ফরজ হওয়ার জন্য শর্ত হল, বীর্য বের হওয়ার সময় উত্তেজনা থাকতে হবে।
আল্লাহ তাআলা বলেন,
وَإِن كُنتُمْ جُنُبًا فَاطَّهَّرُواْ
তোমরা জুনুবি হও তবে (গোসল করে) সারা দেহ পবিত্র করে নাও। (সূরা মায়েদাহ ৬)
আর জুনুবি বলা হয়, ওই
ব্যক্তিকে যার বীর্য সবেগে ও উত্তেজনার সঙ্গে বের হয়েছে।
যেমন, আল্লাহ
তাআলা বলেন,
فَلْيَنظُرِ الْإِنسَانُ مِمَّ خُلِقَ خُلِقَ مِن مَّاءٍ
دَافِقٍ
অতএব, মানুষের
দেখা উচিত কি বস্তু থেকে সে সৃজিত হয়েছে, সে সৃজিত
হয়েছে সবেগে স্খলিত পানি থেকে। (সূরা আত্ব-তারিক্ব ৫, ৬)
রাসূলুল্লাহ ﷺ আলী
রাযি.-কে বলেছিলেন,
فَإِذَا فَضَخْتَ الْمَاءَ فَاغْتَسِلْ
যদি উত্তেজনা বশতঃ বীর্য নির্গত হয় তবে গোসল করবে। (আবুদাউদ ২০৬) অন্যথায় নয়।
ফাতাওয়া শামীতে আছে
وقال ابن عابدين،
(قوله: بشهوة) متعلق بقوله: منفصل، احترزبه عما لو انفصل بضرب أو حمل ثقيل على
ظهره، فلا غسل عندنا، (رد المحتار–
যার সারমর্ম হলো যদি প্রহার করা,বা ভারি
বোঝা উঠানোর কারনে বীর্য বের হয়,তাহলে গোসল
ফরজ হবেনা।
উত্তেজনার সাথে বীর্যপাত হলেই গোসল করা আবশ্যক। তাই যেকোনোভাবে উত্তেজনের সাথে
বীর্যপাত হলে অবশ্যই গোসল করে নামায পড়তে হবে। শুধু অজু করার দ্বারা পবিত্রতা অর্জিত
হবে না।
إِنَّمَا الْمَاءُ مِنَ الْمَاءِ
তথা পানি [বের হবার দ্বারা] পানি {শরীরে ঢালা
তথা গোসল] আবশ্যক হয়। {সহীহ মুসলিম, হাদীস
নং-৩৪৩}
وفرض الغسل عند خروج المنى منفصل عن مقره بشهوة وإن لم يخرج بها
(الدر المختار)
বীর্য যদি আপন স্থান থেকে উত্তেজনার সাথে বের হয়,যদিও লিঙ্গ থেকে বের হওয়ার সময় উত্তেজনা না
থাকুক,গোসল ফরজ হবে।
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!
যেহেতু শুধু মনির
গন্ধ পাওয়ার মাধ্যমে বীর্যপাত হওয়াটা নিশ্চিত নয়। তাছাড়া অনেক
সময় অন্য কিছুর গন্ধও মনির গন্ধের মত লাগে এবং আপনার বীর্যপাত হওয়ার কথা মনেও নেই, আবার জানেনও না। তাই শুধু সন্দেহের উপর
ভিত্তি করে ফরজ গোসল করে তিন দিনের নামাজ কাযা করা লাগবে না। ধরে নিবেন যে, সেটা মনির গন্ধ নয় বরং অন্য কিছুর। আর যদি
নিশ্চিত হন যে, বীর্যপাত হয়েছেই। তাহলে ফরজ গোসল করে
আনুমানিক কখন থেকে হতে পারে সেটা ধরে তিন দিনের নামাজ কাযা করে নিবেন।