আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
278 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (16 points)
আমার ভাই বোন মাঝে মাঝেই আমার সাথে অনেক খারাপ আচরণ করে, যার প্রভাব আমার নিজের পরিবারে পরে এবং আমাদের স্বামী স্ত্রীর মধ্যে তখন এসব নিয়ে ঝগড়া এবং নানা সমস্যা তৈরি হয়। আমার স্বামী আমার ভাই বোনের সাথে কোনরকম সম্পর্ক রাখতে চায় না এবং আমিও যাতে তাদের সাথে বেশি যোগাযোগ না করি সেটার জন্য আমার উপর চাপ প্রয়োগ করে।  এসব নিয়ে আমি খুব মানসিক অশান্তিতে আছি। কারণ আমি তো আমার স্বামী আবার আমার ভাই বোন, সবাইকেই ভালবাসি। আর ভাইবোনের সাথে সুসম্পর্ক রক্ষা না করলে তো আমি গুনাহগার হবো। এক্ষেত্রে আমি কি করতে পারি?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)
edited by

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

সিলাহ রেহমির স্থর

 دَرَجَاتُ الصِّلَةِ: ذَهَبَ فُقَهَاءُ الْحَنَفِيَّةِ وَالشَّافِعِيَّةِ إِلَى أَنَّ دَرَجَاتِ الصِّلَةِ تَتَفَاوَتُ بِالنِّسْبَةِ لِلأَْقَارِبِ، فَهِيَ فِي الْوَالِدَيْنِ أَشَدُّ مِنَ الْمَحَارِمِ، وَفِيهِمْ أَشَدُّ مِنْ غَيْرِهِمْ . وَلَيْسَ الْمُرَادُ بِالصِّلَةِ أَنْ تَصِلَهُمْ إِنْ وَصَلُوكَ؛ لأَِنَّ هَذَا مُكَافَأَةٌ، بَل أَنْ تَصِلَهُمْ وَإِنْ قَطَعُوكَ . فَقَدْ رَوَى الْبُخَارِيُّ وَغَيْرُهُ لَيْسَ الْوَاصِل بِالْمُكَافِئِ وَلَكِنَّ الْوَاصِل الَّذِي إِذَا قُطِعَتْ رَحِمُهُ وَصَلَهَا

হানাফি ফুকাহায়ে কেরাম,এবং শাফেয়ী ফুকাহায়ে কেরাম মনে করেন,সিলাহ রেহমি আত্মীয়তার স্থরভেদে প্রযোজ্য হবে।মাহরামের তুলনায় মাতা-পিতার জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে।আর গায়রে মাহরামের তুলনায় মাহরামের জন্য উচ্ছস্থরের সিলাহ রেহমি প্রযোজ্য হবে। সিলাহ রেহমির অর্থ এটা নয় যে,কেউ আপনার সাথে ভালো ও উত্তম ব্যবহার করল,আর বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন।কেননা এটার নাম তখন সিলাহ রেহমি না হয়ে মুকাফা' বরং আত্মীয় কেউ আপনার সাথে আত্মীয়তার সম্পর্ককে ছিন্ন করার পরও আপনি তার দিকে উত্তম ব্যবহার নিয়ে অগ্রসর হবেন এটাই হলো মূলত সিলাহ রেহমি।যেমন সহীহ বুখারী সহ বিভিন্ন রেওয়াতে এসেছেসিলাহ রেহমি এটা নয় যে,আত্মীয় কারো ভালো ব্যবহারের বিনিময়ে আপনিও তার সাথে ভালো ব্যবহার করলেন,বরং সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করার পরও তার সাথে ভালো ব্যবহার করার নামই হলো সিলাহ রেহমি। (৩/৮৪)

 

 আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ নেই।

হাদীস শরীফে এই ব্যপারে কঠোর হুমকি এসেছেঃ

 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا سُفْيَانُ، عَنِ الزُّهْرِيِّ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ جُبَيْرِ بْنِ مُطْعِمٍ، عَنْ أَبِيهِ، يَبْلُغُ بِهِ النَّبِيَّ صلي الله عليه وسلم قَالَ " لَا يَدْخُلُ الْجَنَّةَ قَاطِعُ رَحِمٍ " . - صحيح

জুবাইর ইবনু মুত্বঈম (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। নাবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্নকারী জান্নাতে প্রবেশ করবে না।

 

(বুখারী ৫৯৮৪, মুসলিম ১৯-(২৫৫৫), আবূ দাঊদ ১৬৯৬, তিরমিযী ১৯০৯, সহীহুল জামি‘ ৭৬৭১, সহীহ আত্ তারগীব ওয়াত্ তারহীব ২৫৪০ সহীহ আল আদাবুল মুফরাদ ৪৫, মুসান্নাফ ‘আবদুর রাযযাক ২০২৩৪, মুসনাদুল বাযযার ৩৪০৫, আহমাদ ১৬৭৩২, মুসনাদে আবূ ইয়া‘লা ৭৩৯২, সহীহ ইবনু হিব্বান ৪৫৪, শু‘আবুল ঈমান ৭৯৫২, ‘ত্ববারানী’র আল মু‘জামুল কাবীর ১৪৯১, আর মু‘জামুল আওসাত্ব ৯২৮৭।)

 

حَدَّثَنَا عَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْلَمَةَ، عَنْ مَالِكٍ، عَنِ ابْنِ شِهَابٍ، عَنْ عَطَاءِ بْنِ يَزِيدَ اللَّيْثِيِّ، عَنْ أَبِي أَيُّوبَ الْأَنْصَارِيِّ، أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: لَا يَحِلُّ لِمُسْلِمٍ أَنْ يَهْجُرَ أَخَاهُ فَوْقَ ثَلَاثَةِ أَيَّامٍ، يَلْتَقِيَانِ فَيُعْرِضُ هَذَا، وَيُعْرِضُ هَذَا، وَخَيْرُهُمَا الَّذِي يَبْدَأُ بِالسَّلَامِ

আবূ আইয়ূব আল-আনসারী (রাঃ) সূত্রে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ কোনো মুসলিমের জন্য তার কোনো ভাইয়ের সঙ্গে (ঝগড়া করে) তিন দিনের বেশী সম্পর্ক ছিন্ন করে থাকা বৈধ নয়। দু’ জন পথিমধ্যে মুখোমুখি হলে একজন এদিকে এবং অপরজন অন্য দিকে মুখ ফিরিয়ে নেয়। এ দু’ জনের মধ্যে যে প্রথমে সালাম দেয় সে-ই উত্তম।

(বুখারী, মুসলিম,আবু দাউদ ৪৯১১)

 

প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন,

 

প্রশ্নে উল্লেখিত সূরতে আপনার ভাই বোনের সাথে একেবারে আত্মীয়তা সম্পর্ক ছিন্ন করা জায়েজ হবেনা।

,

তবে যেহেতু বিয়ের পরে একজন মেয়ের উপর স্বামীর অধিকার বেশী ভাই বোনের তুলনায়। তাই স্বামী স্ত্রীর মাঝে যেনো সম্পর্ক খারাপ না হয় সেই দিকে চিন্তা করে তাদের বাসায় যাওয়া কমিয়ে দিতে পারেন। আবার একেবারে কথা বার্তা বন্ধ না করে মাঝে মাঝে ফোন দিয়ে খবরাখবর নেওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাবেন। সুতরাং তাদের বাসায় যাতায়াত ও তাদের সাথে কথা বার্তা কমিয়ে দেওয়ার কারণে আপনার কোন গুনাহ হবে না ইনশাআল্লাহ। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...