ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
মানুষ স্বভাবতই গুনাহ বা অপরাধপ্রবণ হয়। এটি মানব চরিত্রের সৃষ্টিগত
বৈশিষ্ট্য। আর মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল, তিনি ক্ষমা করতে ভালোবাসেন। তবে শর্ত হলো, গুনাহের পর সেটি গোপন রেখে অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহর কাছে তাওবা করতে হবে। পবিত্র
কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,
أَنَّهُ مَنْ عَمِلَ مِنكُمْ سُوءًا
بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِن بَعْدِهِ وَأَصْلَحَ فَأَنَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ
‘তোমাদের মধ্যে যারা অজ্ঞতাবশত মন্দ কর্ম সম্পাদন করবে, অতঃপর তাওবা করবে এবং সংশোধন করে নেবে, তাহলে তো তিনি ক্ষমাপরায়ণ, দয়াশীল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৪)
ক্ষমার এত সর্বব্যাপী ঘোষণা থাকার পরও মহান আল্লাহ কিছু মানুষকে ক্ষমা করবেন
না। মহানবী (সা.) সেই শ্রেণির মানুষের ব্যাপারে সতর্কতা জারি করেছেন। আবু হুরায়রা
(রা.) বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ
(সা.)-কে বলতে শুনেছি তিনি বলেছেন,
عَنْ سَالِمِ بْنِ عَبْدِ اللَّهِ، قَالَ
سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ، يَقُولُ سَمِعْتُ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم
يَقُولُ " كُلُّ أُمَّتِي مُعَافًى إِلاَّ الْمُجَاهِرِينَ، وَإِنَّ مِنَ
الْمَجَانَةِ أَنْ يَعْمَلَ الرَّجُلُ بِاللَّيْلِ عَمَلاً، ثُمَّ يُصْبِحَ وَقَدْ
سَتَرَهُ اللَّهُ، فَيَقُولَ يَا فُلاَنُ عَمِلْتُ الْبَارِحَةَ كَذَا وَكَذَا،
وَقَدْ بَاتَ يَسْتُرُهُ رَبُّهُ وَيُصْبِحُ يَكْشِفُ سِتْرَ اللَّهِ عَنْهُ
".
‘আমার উম্মতের সবাইকে ক্ষমা করে দেওয়া হবে; তবে ওই সব লোককে ক্ষমা করা হবে না, যারা পাপ করার পর তা অন্যের কাছে প্রকাশ করে
দেয়। অন্যের কাছে প্রকাশ করার একটি দিক হলো কোনো ব্যক্তি রাতের আঁধারে কোনো গুনাহ
করল এবং মহান আল্লাহ ওই ব্যক্তির গুনাহটিকে গোপন রাখলেন। কিন্তু ভোর হলে সে নিজেই
অন্য মানুষের কাছে বলল, হে অমুক! জানো, রাতে আমি এ কাজ করেছি। সারা রাত মহান
আল্লাহ ওই ব্যক্তির পাপটি গোপন রাখলেন আর ভোর হওয়া মাত্রই আল্লাহর ঢেকে রাখা পাপের
বিষয়টি সে ব্যক্তি নিজেই প্রকাশ করে দিল।’ (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)
হাদিসের ঘোষণা থেকে এ কথা পরিষ্কার প্রতীয়মান হয় যে কোনো ব্যক্তি যদি অনিচ্ছায়
কোনো গুনাহ করে বসে আর তা গোপন রাখে; তাহলে আল্লাহ তাআলাও ওই ব্যক্তির পাপ কাজ গোপন রাখেন। অতঃপর
মানুষটি তাওবা করলে তিনি ওই ব্যক্তিকে ক্ষমা করে দিতে পারেন। পবিত্র কোরআনে সুরা
নিসার ১৪৮ নং আয়াতে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ কোনো মন্দ বিষয় প্রকাশ করা পছন্দ করেন না।’
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!
অতীতের গুনাহের কথা না বলে যদি পরামর্শ নেওয়া সম্ভব হয়
তাহলে পিছনের গুনাহের কথা না বলাই উত্তম হবে। এর পরও যদি না হয় তাহলে শোধরানোর নিয়তে কোনো দ্বীনদার
মহিলার নিকট বলে পরামর্শ নিতে পারেন৷ (তবে অনেক ক্ষেত্রে এমন হয় যে, অন্যকে গুনাহের কথা বলে পরে নিজে অনেক
আফসোস করতে হয় যে, কেন তাকে আমার গুনাহের কথা জানাতে গেলাম।
তাই বলার আগে ভালোভাবে চিন্তা ভাবনা করে নিবেন।