আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
295 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (18 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম হযরত,

রাসুল(স:) কে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ তায়ালা কোনো কিছু সৃষ্টি করতেন না এই হাদিসটা কী সহীহ

1 Answer

0 votes
by (566,280 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته
بسم الله الرحمن الرحيم

 
এ বক্তব্য নির্ভর একাধিক হাদীস প্রসিদ্ধ। যথা-

لولاك لما خلقت الأفلاك
তথা, যদি আপনাকে সৃষ্টি না করা হতো, তাহলে আমি আসমানসমূহ [কোন কিছুই] সৃষ্টি করতাম না।

এ শব্দে হাদীসটি জাল ও বানোয়াট এতে কোন সন্দেহ নেই।

রিসালাতুল মাওযুআত-৯, তাযকিরাতুল মাওযূআত-৮৬, আলমাসনু-১৫০, কাশফুল খাফা-২/১৬৪, আল লাউলউল মারসূ-৬৬, আল ফাওয়ায়েদুল মাজমূআ-২/৪১০, আল বূসীরী মাদেহুর রাসূলিল আযম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-৭৫}

لو لا محمد ما خلقتك
তথা যদি মোহাম্মদ সাঃ না হতো, তাহলে তোমাকে [আদম আঃ] কে সৃষ্টি করা হতো না।

যেসব কিতাবে এ হাদীসটি বর্ণিত
আল মুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৬৫০২, আল মুজামুস সগীর লিত তাবরানী, হাদীস নং-৯৯২,

এছাড়া আরও রয়েছে আবু নুআইম রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, ইমাম বায়হাকী রহঃ এর দালায়েলুন নাবুয়্যাহ, আদ দুরার কিতাবে ইবনে আসাকীর রহঃ, এবং রয়েছে মাযমাউজ যাওয়ায়েদ কিতাবে।

এ বিষয়ে মুহাদ্দিসগণের উক্তিঃ

আল্লামা হাকেম রহঃ বলেন, হাদীসটির সনদ সহীহ। {মুস্তাদরাক আলাস সহীহাইন, বর্ণনা নং-৪২২৮}

ইমাম বায়হাকী রহঃ বলেন, আব্দুর রহমান বিন জায়েদ বিন আসলাম এ বর্ণনায় মুনফারিদ। আর তিনি জঈফ বর্ণনাকারী। {তারীখে দামেশক-৭/৪৩৭, দালায়েলুন নবুয়্যাহ-৫/৪৮৯}

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহঃ বলেন, এটি মারফূ এবং মাওকুফ উভয় হালাতে বর্ণিত। {মাজমূয়ুল ফাতাওয়া-১/২৫৪}

আল্লামা ইবনে তাইমিয়া রহঃ আরো বলেন, হযরত উমর রাঃ এর সূত্রে এটি মারফূ এবং মাওকুফ উভয় সূত্রে বর্ণিত। এ সূত্রে আব্দুর রহমান বিন জায়েজ বিন আসলাম রয়েছেন। যিনি সর্বসম্মতভাবে জঈফ রাবী। আর তিনি প্রচুর ভুল করতেন। {আততাওয়াসসুল ওয়াল ওসীলাহ, বর্ণনা নং-১৬৬}

আল্লামা ইবনে কাসীর রহঃ বলেন, এতে আব্দুর রহমান বিন জায়েদ বিন আসলাম রয়েছে। আর তার ব্যাপারে কালাম রয়েছে।

আল্লামা হায়সামী রহঃ বলেন, এর সূত্রে এমন সব ব্যক্তি রয়েছে যারা মারূফ নন। {মাযমাউজ যাওয়ায়েদ-৮/২৫৬}

আল্লামা সানআনী রহঃ বলেন, এটি কিভাবে সহীহ তা আমার জানা নেই। {আলইনসাফ ফী হাকীকাতিল আওলিয়া-৯৬}

আল্লামা জাহাবী রহঃ বলেছেন, হাদীসটি বাতিল। {মীযানুল ই’তিদাল-২/৫০৪}

আল্লামা কাসতাল্লানী রহঃ দলীলযোগ্য হিসেবে তা উপস্থাপন করেছেন।{আল মাওয়াহেবুল লাদুনিয়্যাহ-২/৫২৫}

১০
আল্লামা সুবকী রহঃ তা দলীলযোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। {শেফাউস সিকাম}


যাইহোক, মোটকথা হল এ হাদীসটির সনদ নিয়েও বিস্তর কালাম রয়েছে। এটি খুবই দুর্বল একটি হাদীস। মুহাদ্দিসীনদের বিশাল জামাত যাকে জাল ও বানোয়াট বলে আখ্যায়িত করেছেন। তবে অনেকেই এটির সনদ সঠিক বলে মত দিয়েছেন। যেমন মুস্তাদরাকে হাকেম প্রণেতা। আবার অনেকে এটি জঈফ বলেছেন কিন্তু জাল বলে মন্তব্য করেননি।

এ বিষয়ে প্রসিদ্ধ মুহাদ্দিস মোল্লা আলী কারী রহঃ লিখেছেন-
لولاك لما خلقت الأفلاك” قال الصغانى انه موضوع كذا فى الخلاصة، لكن معنها صحيح، فقد روى الديلمى عن ابن عباس رضى الله عنهما مرفوعا: اتانى جبريل فقال يا محمد لولاك ما خلقت الجنة ولولاك ما خلقت النار، وفى رواية ابن عساكر لولاك ما خلقت الدنيا، (الموضوعات الكبير، مطبوعة كرتاشى حرف الام-101

অনুবাদ- “যদি তোমাকে সৃষ্টি না করা হতো, তাহলে আসমানসমূহ তথা কোন কিছুই সৃষ্টি করা হতো না”বক্তব্যটির ব্যাপারে আল্লামা সাগানী রহঃ বলেছেন এটি মওজু। যেমনটি রয়েছে খুলাসাতে। কিন্তু এর অর্থটি সহীহ। দায়লামী ইবনে আব্বাস রাঃ থেকে মারফূ সূত্রে বর্ণনা করেছেনঃ আমার কাছে জিবরাঈল আসল, তারপর বলল, হে মুহাম্মদ! যদি আপনাকে সৃষ্টি না করা হতো, তাহলে আমি জান্নাত সৃষ্টি করতাম না, যদি তোমাকে সৃষ্টি না করা হতো, তাহলে জাহান্নাম সৃষ্টি করতাম না। ইবনে আসাকীরের বর্ণনায় এসেছে, যদি তোমাকে সৃষ্টি না করতাম তাহলে দুনিয়া সৃষ্টি করতাম না। {আলমাওযূআতুল কাবীর-১০১}



(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...