আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

+1 vote
168 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (64 points)
আসসালামু আলাইকুম।
১)  অনেক পিতা মাতা সন্তান বুঝে বা না বুঝে ভুল করে ফেললে  অভিশাপ দেয়। সন্তান যদি কখন না জানি রাগ করে অভিশাপ দেয় এই ভয়ে পিতা মাতা থেকে দূরে দূরে থাকে তাহলে কি তার গোনাহ হবে?
২) পিতা-মাতার খেদমত করা কি সর্ব অবস্থায় ফরজ নাকি তাদের খেদমতের প্রয়োজন হলে বা তারা খেদমত করতে বললে তখন ফরজ হয়?
৩) ছোট বাচ্চারা মারামারি করলে বা কথা না শুনলে তাদের থামানোর জন্য কি তাদের গায়ে হাত তোলা যাবে?
৪) শিশুদের গায়ে হাত তোলার বিধান কি?
৫) পানির ট্যাপ ছেড়ে ওযু করলে পানি অনেক বেশি লাগে। এতে কি গোনাহ হয়?

1 Answer

0 votes
by (565,890 points)
উত্তর
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 

(০১) পিতামাতার জন্য রাগের অবস্থা সন্তানদের বদ দুয়া,অভিশাপ দেওয়া উচিত নয়। 
কারন কোন সময় যে আল্লাহ তায়ালা সেসব বদ দুয়া কবুল করে নিবেন,তাহা কেহই বলতে পারেনা।
এমনও হতে পারে যে পিতা মাতা বুঝে না বুঝে অযথাই সন্তানের জন্য বদ দুয়া করলো, আল্লাহ তায়ালা তা পুরোপুরি ভাবে কবুল করে নিলো,তখন এটা সন্তানের জন্য শাস্তির কারন হয়ে দাড়াবে।
 বিষয়টি পিতামাতাকে বুঝানো দরকার।
উভয় পক্ষ থেকেই চেষ্টা করা দরকার,যে এই অবস্থায় যেনো পৌছাতে না হয়।
পিতা মাতা সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে এহেন কথা না বলার,আর সন্তান চেষ্টা করবে,এমন কোনো কাজ না করার,যাতে পিতা মাতা কষ্ট পায়।
(কিতাবুল ফাতওয়া ৬/২১৪)


★সুতরাং বুঝানোর পরেও যদি কাজ না হয়,তাহলে হেকমতের সাথে পিতা মাতাকে বুঝিয়ে তাদের অনুমতিক্রমে তাদের থেকে দুরে থাকা যাবে।

খেয়াল রাখতে হবে যে তাদের দেখভাল যেনো পুরোপুরি ভাবে করা যায়।
তাদের হক যেনো নষ্ট না হয়।
তাদের খেদমতের মাঝে যেনো কমতি না থাকে।

(০২) শরীয়তের বিধান হলো পিতা মাতার মধ্য হতে যখন যার খেদমতের প্রয়োজন হবে,তখন তার যথাসাধ্য খেদমত করা সন্তানের উপর ফরজ।
(আপকে মাসায়েল আওর উনকা হল ৭/২১৬)
,

(০৩) 
শিশুদের কে প্রহার করা যাবেনা।
রাগান্বিত অবস্থায় শিশুদেরকে প্রহার করা নাজায়েজ।  
বিশেষ প্রয়োজনে বাবা মা তার সন্তানকে হাত দিয়ে চেহারা লজ্জাস্থান বাদ দিয়ে অন্যত্রে আস্তে মারতে পারেন,তবে  সেক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হবে যে ৩ বারের অধিক মারা যাবেনা,তার সহ্যের বাহিরে মারা যাবেনা।

তবে তাদেরকে প্রহার না করে ধমক দেওয়াই বেশি উত্তম।

(০৪) হযরত থানভী রাহ. বলেন, ‘রাগান্বিত অবস্থায় কখনও শিশুকে প্রহার করবে না (পিতা ও উস্তাদ) উভয়ের জন্যই এই কথা)। রাগ প্রশমিত হওয়ার পর চিন্তা-ভাবনা করে শাস্তি দিবে। উত্তম শাস্তি হল ছুটি মওকুফ করে দেওয়া,বা তাকে তার কোনো পছন্দের খেলা খেলতে দুরে রাখা,কোনো পছন্দের কাজ না করতে দেওয়া। শিশুর উপর এর খুব প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। 

মনে রাখবে, যার অধিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করার কেউ থাকে না তার সম্পর্কে প্রশ্নকারী স্বয়ং আল্লাহ। এমনকি কোনো যিম্মী (মুসলিম দেশের অমুসলিম নাগরিক, যার নিরাপত্তা মুসলিম শাসকের যিম্মায়) কাফিরের উপর যদি কোনো শাসক জুলুম করে তাহলে হাদীস শরীফে এসেছে যে, আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। (আনফাসে ঈসা পৃ. ১৭৩)

শিশুদেরকে প্রহার করা অত্যন্ত ভয়াবহ
শিশুদেরকে প্রহার করা খুবই ভয়াবহ। আমাদের পিতা হযরত মাওলানা মুফতী মুহাম্মাদ শফী রাহ. বলতেন, অন্যান্য গুনাহ তো তওবার মাধ্যমে মাফ হতে পারে, কিন্তু শিশুদের উপর জুলুম করা হলে এর ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা, এটা হচ্ছে বান্দার হক। আর বান্দার হক শুধু তওবার দ্বারা মাফ হয় না, যে পর্যন্ত না যার হক নষ্ট করা হয়েছে সে মাফ করে। এদিকে যার উপর জুলুম করা হয়েছে সে হচ্ছে নাবালেগ। নাবালেগের ক্ষমা শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি শিশু যদি মুখে বলেও যে, আমি মাফ করলাম তবুও তা গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য এই অপরাধের মাফ পাওয়া খুব জটিল। আর তাই শিশুদেরকে প্রহার করা এবং তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করার ব্যাপারে সাবধান হওয়া উচিত।
,
(০৫) পানির ট্যাপ ছেড়ে অযু করলে অনেক পানি নষ্ট হয়ে যায়,তাই অনেক বুযুর্গানে দ্বীন ট্যাপ ছেড়ে অযু না করে বদনা বা কোনো পাত্রে পানি রেখে অযু করে থাকেন।
ট্যাপ আস্তে ছেড়ে সতর্কতা অবলম্বন করে  অযু করা নাজায়েজ নয়। 
তবে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে হবে যাতে করে পানি নষ্ট না হয়। 
বিশেষ করে যখন মাথা মাসেহ করা হবে,তখন ট্যাপ বন্ধ করে দিতে হবে।  
,

হযরত আব্দুল্লাহ ইবন আমর ইবনুল ‘আস (রা) থেকে বর্ণিত:

নবী ﷺ একবার সা’আদ (রা) এর পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন তিনি ওযু  করছিলেন।রাসুল ﷺ বললেন,সা’আদ এ কি অপচয় করছ? তিনি বললেন,ওযুতে কি অপচয় হয়? রাসুল ﷺ বললেন,হ্যা,হয়। এমনকি তুমি প্রবাহমান নদীর পাশে বসে করলেও। [মুসনাদে আহমদ হাদিস নং ৭০৮৩ (ইফা-২১৩)]


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...