আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
256 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (2 points)
closed by
আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহ।
.

আমার ইচ্ছা, আমার বিয়ে হবে সুন্নতি পদ্ধতিতে। কিন্তু আত্মীয় স্বজনের কাছে বিষয়টা হাস্যকর আর সেকেলে মনে হয়। অবশ্য আমার পিতা-মাতা আমার পক্ষেই আছেন। তাই ইং শা আল্লাহ, সুন্নতি পদ্ধতিতেই সম্পন্ন করতে চাচ্ছি।
সমস্যা হচ্ছে, মেয়ে পক্ষ তাদের একমাত্র মেয়ের বিয়েতে একেবারে ঘরোয়াভাবে আয়োজন করতে নারাজ। অন্তত আপ্যায়নের ভালো আয়োজন করতে চাচ্ছেন। তো, উনাদের বাড়িতে আয়োজনের তেমন জায়গা নেই তাই কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করতে চাইছেন।

আমার প্রশ্ন হচ্ছে,
১। কমিউনিটি সেন্টারে আয়োজন করা যাবে কিনা? বিশেষ করে পর্দার বিষয়টা নিয়ে আমি শঙ্কায় আছি।
২। আমার পরিবার এখন চাচ্ছে। যেহেতু আমাদের বাড়িতেও তেমন বড় জায়গা নেই। তাই একই দিনে মেয়ে পক্ষের সাথে আমরাও ওলিমাটা সেরে ফেলতে। এটা করা যাবে? এই বিষয়ে শরীয়তের বিধান জানতে চাইছি।
closed

1 Answer

0 votes
by (63,280 points)
selected by
 
Best answer

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

বিবাহের পরদিন (বাসর রাত পর) পাত্রের পক্ষ থেকে  ওলিমা করা সুন্নত। 

,

রাসুলুল্লাহ (সা.) নিজে ওলিমা করেছেন এবং সাহাবিদের করতে বলেছেন। 

 

রাসুলুল্লাহ (সা.) জয়নব বিনতে জাহাশ (রা.)-কে বিয়ে করার পরদিন ওলিমা করেছিলেন।

(বুখারি, হাদিস নম্বর-৫১৭০)

 

হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) আবদুর রহমান ইবনে আওফের গায়ে হলুদ রঙের চিহ্ন দেখে জিজ্ঞেস করলেন, এটা কী? তিনি বললেন, আমি এক খেজুর আঁটির ওজন স্বর্ণ দিয়ে একজন মহিলাকে বিবাহ করেছি। রাসুল (সা.) বললেন, ‘আল্লাহ তোমার বিবাহে বরকত দান করুক। একটি ছাগল দ্বারা হলেও তুমি ওলিমা করো।’ (বুখারি: ৫১৫৫; মুসলিম ও মিশকাত, হাদিস নম্বর-৩২১০)।

 

হজরত আনাস ইবনে মালেক (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) জয়নব (রা.)-কে বিয়ে করার পর যত বড় ওয়ালিমা করেছিলেন, তত বড় ওলিমা তিনি তাঁর অন্য কোনো স্ত্রীর বেলায় করেননি।

 (বুখারি: ৫১৬৮; মুসলিম: ২৫৬৯; মিশকাত, হাদিস নম্বর-৩২১১)। 

 

হজরত আনাস (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন জয়নব বিনতে জাহাশকে বিবাহ করলেন, তখন ওলিমা করলেন এবং মানুষকে রুটি-গোশত দিয়ে তৃপ্তিসহকারে খাওয়ালেন। 

(বুখারি: ৪৭৯৪; মিশকাত, খণ্ড: ২, হাদিস নম্বর-৩২১১)।

,

মেয়ে পক্ষ থেকে কোনো ওলিমা নেই।

হ্যাঁ, তারা যদি কোনো চাপে নয়,বরং সন্তুষ্টি চিত্তে শরয়ী সীমারেখার আওতায় থেকে দাওয়াতের আয়োজন করে,তাহলে তা জায়েজ আছে। 

(কিতাবুন নাওয়াজেল ৮/২৭৫)

,

 তবে মেয়েপক্ষের ওপর আপ্যায়নের যে চাপ সৃষ্টি করা হয়, তা সম্পূর্ণ হারাম।

 সর্বোপরি শর্ত আরোপ করে বরযাত্রীর নামে বরের সঙ্গে অধিকসংখ্যক লোক নিয়ে যাওয়া এবং কনের বাড়িতে মেহমান হয়ে কনের পিতার ওপর বোঝা সৃষ্টি করা আজকের সমাজের একটি জঘন্য কুপ্রথা, যা সম্পূর্ণরূপে পরিত্যাগ করা আবশ্যক। 

 

কনেপক্ষের অনিচ্ছাকৃত বা চাপের মুখে বাধ্যতামূলক আপ্যায়ন ও মেহমানদারি সম্পূর্ণ নাজায়েজ। এতে অংশগ্রহণ করাও হারাম ও পাপ কাজ। কারও ওপর জোর প্রয়োগ করে কোনো খাবার গ্রহণ করা জুলুমের শামিল। 

 

এমনিতেই যদি তারা সন্তুষ্টি চিত্তে দাওয়াতের আয়োজন করে, তাহলে সেই দাওয়াত জায়েজ আছে।

(ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়্যাহ ১৭/৩৬৮.কিতাবুন নাওয়াজেল ৮/২৭৯)

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

 

১. পর্দা মেইনটেইনের শর্তের ভিত্তিতে কমিউনিটি সেন্টারেও বিয়ের আয়োজন করা যাবে তবে কোনো অনৈসলামিক কর্মকান্ড যেনো না হয়,সেই দিক থেকে সতর্ক থাকতে হবে।

২. হ্যাঁ, বিয়ের দিনও ওয়ালিমা খাওয়ানো যাবে। তবে তা যেনো বিয়ে সম্পন্ন হওয়ার পরে হয়। আরেকটি। তবে আমরা হাদীস থেকে জানতে পারি যে, রাসূল সা. ও সাহাবায়ে কেরাম  বিবাহের পরদিন (বাসর রাতের পর) ওয়ালিমা খাওয়ায়েছেন। আর এটাই উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...