আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
149 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (34 points)
আমার বড় চাচা একজন ইসলামবিদ্বেষী । উনি নিজেকে আস্তিক বলেন ঠিকই, কিন্তু ইসলামি আকিদা নিয়ে প্রচুর ঠাট্টা-তামাশা করেন। আলেমদেরকে উনি অনেক অশ্রাব্য ভাষায় হরহামেশা গালাগালি দিয়ে থাকেন। উনি অনেক সময় এমন এমন আকিদাগত বিষয় নিয়ে কটূক্তি করেন যে আমার মনে উনার ইমানের স্থায়িত্ব নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগে। উনার এহেন কটূক্তিগুলোকে আমি ভাইপো হিসেবে বিরুদ্ধাচরণ করলে এবং আমার সাধ্যমতো তাকে সহীহ আকিদা বোঝানোর চেষ্টা করলে, উনি আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন, নয় তো আমার কথা না শোনার ভান করেন।

আলহামদুলিল্লাহ আমাকে আল্লাহ হেদায়েতের আলোতে আলোকিত করেছেন। আমার ইমান্দীপ্ত জীবনের প্রধান অন্তরায় আমার চাচা। উনার ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক ব্যাবহারের জন্য আমি উনার সাথে বেশি উঠা-বসা করি না। উনি স্বাভাবিকভাবেই কোনো নামাজ আদায় করেন না, তবে আমার সান্নিধ্যে থাকার জন্য উনি গত ২ মাস যাবত শুধু জুম্মাহ এর নামাজ আদায় করছেন। আমিও তাকে দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্য তার সাথে জুম্মা পড়ি এবং দুপুরে একসাথে খাবার খাই।

আমি সাধারণ শিক্ষিত কলেজ পড়ুয়া হলেও আমি মাদ্রাসা পড়ুয়াদের মতো মাদানি-কাট পাঞ্জাবি পরি।  গত শুক্রবার চাচু আমার পাঞ্জাবিকে উদ্দেশ্য করে আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, "তুমি যেই পাঞ্জাবি পরেছ, এইরকম কি কেউ পরে? তুমি যেইভাবে সমাজে চলাফেরা করো, এইভাবে কেউ চলে না......পুরা সমাজ চলে একদিকে, আর আমি তুমি চলো অন্যদিকে"। চাচুর এই প্রশ্নের প্রতিউত্তরে আমি একটি হাদিস উদ্ধৃত করতে আরম্ভ করলেই, চাচু আমার ডান গালে থাপ্পড় দেন, যার ফলে আমার মুখের মাস্ক ছিঁড়ে যায়। এরপর আমার উপর অনেক ঝড় বয়ে গেছে। আমার দ্বীনকে আমার সামনেই ছোট করা হয়েছে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়ে। আমাকে অনেক ঠ্রেট দেওয়া হয়েছে। আমাকে র‍্যাবের কাছে ধরিয়ে দিবে, আমাকে ঝুলিয়ে পিটাবে, আরো অনেক কিছু যা আমি এখানে বলতে চাচ্ছি না। ওইদিন আমি চুপ করে শুধু চোখের পানিই ফেলেছি। আমার এই পুরো ঘটনা বলার পেছনে, কয়েকটি প্রশ্ন বিদ্যমান।

১) আমি এমন জুলুমের শিকার হলে কি করবো?

২) দ্বীনের জন্য যদি আমার আপন বড় চাচা আমার গায়ে হাত উঠায়, তাহলে আমি কি করবো ?

৩) বড় চাচার কাছে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার সাথে আমার জুম্মা পড়া এখন কতটুকু যৌক্তিক শরীয়াতের দৃষ্টিতে?

৪) যদি এমন জুলুমের শিকার হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে দাওয়াত দেওয়ার প্রয়োজন কতটুকু?

1 Answer

+1 vote
by (566,160 points)
জবাব
বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম


(০১)
হ্যাঁ এটি জুলুমের অন্তর্ভুক্ত  হবে।
এটি বান্দার হক নষ্টের শামিল।
আপনার চাচা যদি আপনার কাছে মাফ না চায়,তাহলে কিয়ামতের ময়দানে তাকে এর জন্য কঠিন জবাবদিহিতার সম্মুখীন হতে হবে।   

হাদীস শরীফে এসেছেঃ 

حَدَّثَنَا آدَمُ بْنُ أَبِي إِيَاسٍ حَدَّثَنَا ابْنُ أَبِي ذِئْبٍ حَدَّثَنَا سَعِيدٌ الْمَقْبُرِيُّ عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم مَنْ كَانَتْ لَهُ مَظْلَمَةٌ لأَخِيهِ مِنْ عِرْضِهِ أَوْ شَيْءٍ فَلْيَتَحَلَّلْهُ مِنْهُ الْيَوْمَ قَبْلَ أَنْ لاَ يَكُونَ دِينَارٌ وَلاَ دِرْهَمٌ إِنْ كَانَ لَهُ عَمَلٌ صَالِحٌ أُخِذَ مِنْهُ بِقَدْرِ مَظْلَمَتِهِ وَإِنْ لَمْ تَكُنْ لَهُ حَسَنَاتٌ أُخِذَ مِنْ سَيِّئَاتِ صَاحِبِهِ فَحُمِلَ عَلَيْهِ

আবূ হুরাইরাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের সম্ভ্রমহানি বা অন্য কোন বিষয়ে যুলুমের জন্য দায়ী থাকে, সে যেন আজই তার কাছ হতে মাফ করিয়ে নেয়, সে দিন আসার পূর্বে যে দিন তার কোন দ্বীনার বা দিরহাম থাকবে না। সে দিন তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার যুলুমের পরিমাণ তা তার নিকট হতে নেয়া হবে আর তার কোন সৎকর্ম না থাকলে তার প্রতিপক্ষের পাপ হতে নিয়ে তা তার উপর চাপিয়ে দেয়া হবে।
(বুখারী শরীফ ২৪৪৯.৬৫৩৪) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২২৭০, ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২২৮৭)

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই, 
উল্লেখিত ঘটনাটি আপনি আপনার অভিভাবকদের জানাতে পারেন,মুরব্বিদের জানাতে পারেন।
তাদের মাধ্যমে কোনো সমাধানের চেষ্টা করাতে পারেন।
,
(০২)
আপনি নিজে কিছু করবেননা।
আপনার বাবা বা নিকটতম আত্মীয়দের জানিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবেন।
,
(০৩)
আপাতত তার সাথে আর জুম'আর নামাজ আদায়ের প্রয়োজন নেই।
,
(০৪)
দাওয়াত দেওয়ার প্রয়োজন টুকু থাকবেই।
রাসুলুল্লাহ সাঃ সহ সাহাবায়ে কেরামগন অনেক জুলুম স্বীকারের পরেও দাওয়াতের  কাজ চালিয়ে গিয়েছেন।
,
তবে আপনি নিজ থেকে কিছুদিন তাকে দাওয়াত দেওয়া বন্ধ রাখতে পারেন।
যাতে সে বিষয়টি বুঝতে পারে।
অনুতপ্ত যেনো সে হয়।  


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

by (34 points)
reshown by
হুজুর,
আমার চাচা ওইদিনই আমার গায়ে হাত বুলিয়ে আমাকে "দুঃখ কইরো না, চাচু.... কিছু মনে কইরো না" ইত্যাদি বলে সান্তনা দিয়েছিলেন। 

এইটা একপ্রকারের ক্ষমা চাওয়াই হলো না?

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...