আমার বড় চাচা একজন ইসলামবিদ্বেষী । উনি নিজেকে আস্তিক বলেন ঠিকই, কিন্তু ইসলামি আকিদা নিয়ে প্রচুর ঠাট্টা-তামাশা করেন। আলেমদেরকে উনি অনেক অশ্রাব্য ভাষায় হরহামেশা গালাগালি দিয়ে থাকেন। উনি অনেক সময় এমন এমন আকিদাগত বিষয় নিয়ে কটূক্তি করেন যে আমার মনে উনার ইমানের স্থায়িত্ব নিয়ে মনে প্রশ্ন জাগে। উনার এহেন কটূক্তিগুলোকে আমি ভাইপো হিসেবে বিরুদ্ধাচরণ করলে এবং আমার সাধ্যমতো তাকে সহীহ আকিদা বোঝানোর চেষ্টা করলে, উনি আমার সাথে অনেক খারাপ ব্যবহার করেন, নয় তো আমার কথা না শোনার ভান করেন।
আলহামদুলিল্লাহ আমাকে আল্লাহ হেদায়েতের আলোতে আলোকিত করেছেন। আমার ইমান্দীপ্ত জীবনের প্রধান অন্তরায় আমার চাচা। উনার ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক ব্যাবহারের জন্য আমি উনার সাথে বেশি উঠা-বসা করি না। উনি স্বাভাবিকভাবেই কোনো নামাজ আদায় করেন না, তবে আমার সান্নিধ্যে থাকার জন্য উনি গত ২ মাস যাবত শুধু জুম্মাহ এর নামাজ আদায় করছেন। আমিও তাকে দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্য তার সাথে জুম্মা পড়ি এবং দুপুরে একসাথে খাবার খাই।
আমি সাধারণ শিক্ষিত কলেজ পড়ুয়া হলেও আমি মাদ্রাসা পড়ুয়াদের মতো মাদানি-কাট পাঞ্জাবি পরি। গত শুক্রবার চাচু আমার পাঞ্জাবিকে উদ্দেশ্য করে আমাকে জিজ্ঞেস করছিলেন, "তুমি যেই পাঞ্জাবি পরেছ, এইরকম কি কেউ পরে? তুমি যেইভাবে সমাজে চলাফেরা করো, এইভাবে কেউ চলে না......পুরা সমাজ চলে একদিকে, আর আমি তুমি চলো অন্যদিকে"। চাচুর এই প্রশ্নের প্রতিউত্তরে আমি একটি হাদিস উদ্ধৃত করতে আরম্ভ করলেই, চাচু আমার ডান গালে থাপ্পড় দেন, যার ফলে আমার মুখের মাস্ক ছিঁড়ে যায়। এরপর আমার উপর অনেক ঝড় বয়ে গেছে। আমার দ্বীনকে আমার সামনেই ছোট করা হয়েছে অশ্রাব্য গালিগালাজ দিয়ে। আমাকে অনেক ঠ্রেট দেওয়া হয়েছে। আমাকে র‍্যাবের কাছে ধরিয়ে দিবে, আমাকে ঝুলিয়ে পিটাবে, আরো অনেক কিছু যা আমি এখানে বলতে চাচ্ছি না। ওইদিন আমি চুপ করে শুধু চোখের পানিই ফেলেছি। আমার এই পুরো ঘটনা বলার পেছনে, কয়েকটি প্রশ্ন বিদ্যমান।
১) আমি এমন জুলুমের শিকার হলে কি করবো?
২) দ্বীনের জন্য যদি আমার আপন বড় চাচা আমার গায়ে হাত উঠায়, তাহলে আমি কি করবো ?
৩) বড় চাচার কাছে ইসলামের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্যে তার সাথে আমার জুম্মা পড়া এখন কতটুকু যৌক্তিক শরীয়াতের দৃষ্টিতে?
৪) যদি এমন জুলুমের শিকার হওয়ার ভয় থাকে, তাহলে দাওয়াত দেওয়ার প্রয়োজন কতটুকু?