ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
শরীয়তের বিধান মতে সূদ দেওয়া,গ্রহন করা,তাতে
সহযোগিতা করা সবই হারাম।
কুরআনে কারীমে ইরশাদ হচ্ছে-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَذَرُوا مَا
بَقِيَ مِنَ الرِّبَا إِن كُنتُم مُّؤْمِنِينَ [٢:٢٧٨]
হে ঈমানদারগণ,তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সুদের যে সমস্ত বকেয়া আছে,তা পরিত্যাগ কর,যদি
তোমরা ঈমানদার হয়ে থাক। [সূরা বাকারা-২৭৮]
আল্লাহ তায়ালা
বলেন-
يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لَا تَأْكُلُوا الرِّبَا
أَضْعَافًا مُّضَاعَفَةً ۖ وَاتَّقُوا اللَّهَ لَعَلَّكُمْ تُفْلِحُونَ [٣:١٣٠]
হে ঈমানদারগণ! তোমরা চক্রবৃদ্ধি
হারে সুদ খেয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় করতে থাক, যাতে
তোমরা কল্যাণ অর্জন করতে পারো। [সুরা আলে ইমরান-১৩০]
সুদ হারাম হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন -
واحل
الله البيع و حرم الربوا.
"
আল্লাহ
ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন৷" (সূরা বাকারা, আয়াত:২৭৫)
সুদ কতখানি জঘন্য তা হাদীস শরীফে এসেছে-
عن
أبي هريرة، قال: قال رسول الله صلى الله عليه وسلم : "الربا سبعون
حوبا،أيسرها أن ينكح الرجل أمه."
حكم
الحديث: صحيح
"হযরত আবু
হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিত৷ তিনি বলেন, রাসূল
সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- "সুদের ৭০ টি স্তর রয়েছে৷ সবচেয়ে
নিম্নটি হল নিজ মায়ের সাথে ব্যভিচার করা৷" (ইবনে মাজাহ: অধ্যায়:
ব্যবসা-সুদ:২২৭৪)
হাদিস শরিফে
এসেছে-
لَعَنَ رَسُولُ اللهِ ﷺ آكل الربا وموكله وكاتبه وشاهديه، وقال :
هم سواء.
আল্লাহর রাসূল ﷺ সুদখোর, সুদদাতা, সুদের লেখক
এবং তার উপর সাক্ষীদ্বয়কে অভিশাপ করেছেন, আর
বলেছেন, ওরা সকলেই সমান। (মুসনাদে আহমাদ ৩৮০৯)
ব্যাংকের অবস্থা এই যে, তার পূর্ণ সম্পদ কয়েকটি বিষয়ের সমষ্টি। যথা-
১-মূলধন।
২-সঞ্চয়কারীদের জমাকৃত টাকা।
৩-জায়েজ ব্যবসার আমদানী।
৪-সুদ এবং হারাম ব্যাবসার আমদানী।
এ চারটি বিষয়ের মাঝে কেবল ৪র্থ
সুরতটি হারাম। বাকিগুলো যদি কোন হারাম কাজ না হয় তাহলে মূলত জায়েজ।
যেসব ব্যাংকে প্রথম ৩টি বিষয়ের
লেনদেন অধিক। আর ৪র্থ বিষয়টি তথা হারাম লেনদেনের লভ্যাংশ কম সেসব ব্যাংকে সেসব
ডিপার্টমেন্টে চাকরী করা যাতে হারাম কাজ করতে না হয় তাহলে তা জায়েজ হবে। এবং বেতন
নেওয়াও জায়েজ হবে। তবে উত্তম হল এ চাকরীও ছেড়ে দেয়া।
কিন্তু যদি হারাম আমদানী বেশি হয়
হালালের তুলনায়, বা হারাম কাজে জড়িত হতে হয় তাহলে উক্ত ব্যাংকে চাকরী করা
জায়েজ নয়। এ থেকে বেতন নেওয়াও জায়েজ নয়। বেতন নিলে তা হারাম হিসেবে গণ্য হবে। {ফাতওয়ায়ে উসমানী-৩/৩৯৪-৩৯৬}
ব্যাংকে চাকুরী সংক্রান্ত
বিস্তারিত জানুনঃ
https://www.ifatwa.info/398
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
ব্যাংক থেকে উপার্জিত সব অর্থ যেহেতু হালাল নয় এবং এতে হারাম টাকাও রয়েছে, তাই তারা এই টাকা দিয়ে কুরবানী দিলে
কুরবানী সহীহ হবে না। তবে কুরবানী দেওয়ার ক্ষেত্রে একটা কাজ করতে পারে। আর তা হলো
কারোর কাছ থেকে ঋণ নিয়ে কুরবানী করবে। অত:পর ঐ ঋণ ব্যাংকের টাকা থেকে পরিশোধ করে
দিবে। তাহলে ধরা হবে যে কেমন যেনো সে হালাল টাকা দিয়েই কুরবানী দিয়েছে।