সংকীর্ণমনা লোক আপনি। আমি একজন কওমি মাদরাসার ছাত্র। দারুল উলুম ঢাকা, মিরপুর ১৩ থেকে দাওরা ফারেগ হয়েছি ২০১১ সালে।
নাম আমার হাফেজ মাওলানা আব্দুল হক।ওই মাদরাসায় গিয়ে ছাত্র ওস্তাদ যাকেই জিজ্ঞাসা করবেন সবাই চিনবে আমাকে। (পরিচয় এজন্যই দিলাম, নইলে পরে আহলে হদস বলে ছুঁড়ে ফেলবেন আমার মত। আমাদের হুজুরদের মানসিকতা আমার ভালভাবে জানা আছে। বলে রাখি আহলে হাদীসের অনুসারী আমি নই। কিন্তু আহলে হাদীসকে আহলে হদস বলা এটা নবীর হাদীসের সাথে চরম বেয়াদবি ও দৃষ্টতা। যা আমাদের হুজুররা করে থাকে)
আমি মারেফুল কুরআন পড়েছি। এই মুহুর্তেও মারেফুল কুরআন আমার সামনে। মারেফুল কুরআন অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত একটা তাফসির। এতে অনেক কিছুই নাই। আমি পড়তে গিয়ে বারবার মেজাজ হারিয়েছি। অনুবাদ পড়ার পর যেটারই একটু বিস্তারিত জানতে চাই তার অধিকাংশই পাইনা।
মানুষকে বোকা বানিয়ে রাখতে চান কেন?
মানুষের কাছে সব উম্মুক্ত থাকবে। সব পড়ে দেখবে।
আমার কাছে ইবনে কাসীর মারেফুল কুরআনের চেয়ে অনেক অনেক বেশি উত্তম মনে হয়েছে।
মানুষ সব পড়ুকনা। আপনার অসুবিধা কোথায়? ধর্ম সম্পর্কে আমরা কওমিয়ানরা কিন্তু হিন্দু ঠাকুরদের মত আচরণ করি। তারাও তাদের অনুসারীদের কাছ থেকে ধর্মকে লুকিয়ে রাখে।
হ্যাঁ, আপনার মনে এখন কী উত্তর আসছে সেটাও আমার জানা আছে। কারণ কওমি পড়ুয়া মানুষ তো আমি, তাই বুঝি কি কি ধরনের খোঁড়া যুক্তি আমাদের হুজুররা দেয়।
সেই প্রেক্ষিতে আমি বলবো, আপনি মানুষকে সর্বোচ্চ এটা বলতে পারেন যেটা আমিও বলি। সেটা হলো যে, আপনারা পড়েন, তাফসীর হাদীস সবই পড়েন, তবে নিজের বুঝটাকে চুড়ান্ত মনে করবেননা। যেটা নিয়ে প্রশ্ন জাগবে সেটা আলেমদেরকে জিজ্ঞাসা করবেন।
সর্বোপরি আলেমদের সাথে সম্পর্ক রেখে চলবেন।
তবে অবশ্যই হিংসুটে, একচোখা, সংকীর্ণমনা আলেম পরিহার করে চলতে হবে। নইলে সত্যকে খুঁজে পাওয়া যাবেনা।
সমস্যা হচ্ছে আপরা হানাফী মাজহাবের লোকদের দ্বারা লিখিত কিতাব পড়ে পড়ে বড় হয়েছি। তাই অন্য মতের অনুসারীদেরটা আমাদের কাছে ভুল বা অযৌক্তিক অথবা তুচ্ছ মনে হয়। অন্যদের লেখা মত গুলো পড়লে এরকম হতোনা।
আরেকটা কথা বলে রাখি, নিজেও মানার চেষ্টা করবেন এবং আপনার পরিচিত কওমি হুজুরদের প্রতি আমার এই বার্তাটা পৌঁছে দিবেন। আপনার কারো সাথে দ্বীমত থাকতেই পারে। এটা সাহাবিদের যুগে, তাবেয়ীদের যুগে এক কথায় অতীতের সর্ব যুগেই ছিল। কিন্তু
ওয়াজের মঞ্চে সাধারণ পাবলিকের সামনে বিশ্রীভাবে সমালোচনা করে নিজেদেরকে আর হেয় প্রতিপন্ন করবেননা। সুন্দর ভাষায় দ্বীমত পোষণ করেন। অন্যের মতকে সম্মান জানিয়ে নিজের মতকে প্রকাশ করেন।