بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
https://ifatwa.info/13649 নং ফাতওয়াতে
আমরা উল্লেখ করেছি যে, সুরা নিসার ২৩ নং আয়াতে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেনঃ
حُرِّمَتۡ عَلَیۡکُمۡ اُمَّهٰتُکُمۡ وَ
بَنٰتُکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ وَ عَمّٰتُکُمۡ وَ خٰلٰتُکُمۡ وَ بَنٰتُ الۡاَخِ وَ
بَنٰتُ الۡاُخۡتِ وَ اُمَّهٰتُکُمُ الّٰتِیۡۤ اَرۡضَعۡنَکُمۡ وَ اَخَوٰتُکُمۡ
مِّنَ الرَّضَاعَۃِ وَ اُمَّهٰتُ نِسَآئِکُمۡ وَ رَبَآئِبُکُمُ الّٰتِیۡ فِیۡ
حُجُوۡرِکُمۡ مِّنۡ نِّسَآئِکُمُ الّٰتِیۡ دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ ۫ فَاِنۡ لَّمۡ
تَکُوۡنُوۡا دَخَلۡتُمۡ بِهِنَّ فَلَا جُنَاحَ عَلَیۡکُمۡ ۫ وَ حَلَآئِلُ
اَبۡنَآئِکُمُ الَّذِیۡنَ مِنۡ اَصۡلَابِکُمۡ ۙ وَ اَنۡ تَجۡمَعُوۡا بَیۡنَ
الۡاُخۡتَیۡنِ اِلَّا مَا قَدۡ سَلَفَ ؕ اِنَّ اللّٰهَ کَانَ غَفُوۡرًا رَّحِیۡمًا
﴿ۙ۲۳﴾
তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে তোমাদের
মাতাদেরকে, তোমাদের মেয়েদেরকে, তোমাদের
বোনদেরকে, তোমাদের ফুফুদেরকে, তোমাদের খালাদেরকে,
ভাতিজীদেরকে, ভাগ্নীদেরকে, তোমাদের সে সব মাতাকে যারা তোমাদেরকে দুধপান করিয়েছে, তোমাদের দুধবোনদেরকে, তোমাদের শ্বাশুড়ীদেরকে,
তোমরা যেসব স্ত্রীর সাথে মিলিত হয়েছ সেসব স্ত্রীর অপর স্বামী থেকে যেসব
কন্যা তোমাদের কোলে রয়েছে তাদেরকে, আর যদি তোমরা তাদের সাথে মিলিত
না হয়ে থাক তবে তোমাদের উপর কোন পাপ নেই এবং তোমাদের ঔরসজাত পুত্রদের স্ত্রীদেরকে এবং
দুই বোনকে একত্র করা(তোমাদের উপর হারাম করা হয়েছে)। তবে অতীতে যা হয়ে গেছে তা ভিন্ন
কথা। নিশ্চয় আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।
এই আয়াতের ব্যখ্যায় বলা হয়েছে যেঃ
যেসব নারীর স্তন্য পান করা হয়, তারা জননী না হলেও বিবাহ হারাম হওয়ার ব্যাপারে জননীর পর্যায়ভুক্ত এবং তাদের
সাথে বিবাহ হারাম। ফেকাহবিদগণের পরিভাষায় একে 'হুরমাতে রেযাআত’
বলা হয়। তবে কেবলমাত্র শিশু অবস্থায় দুধ পান করলেই এই ‘হুরমাত’ কার্যকরী হয়।
★ দুধ পানের সাথে সম্পর্কিত যেসব বোন আছে, তাদেরকে
বিয়ে করা হারাম। এর বিশদ বিবরণ এই যে, দুধ পানের নির্দিষ্ট সময়কালে
কোন বালক অথবা বালিকা কোন স্ত্রীলোকের দুধ পান করলে সে তাদের মা এবং তার স্বামী তাদের
পিতা হয়ে যায়। এছাড়া সে স্ত্রীলোকের আপন পুত্র-কন্যা তাদেরই ভাই-বোন হয়ে যায়।
অনুরূপ সে স্ত্রীলোকের বোন তাদের খালা হয় এবং সে স্ত্রীলোকের দেবর-ভাসুররা তাদের চাচা
হয়ে যায়। তার স্বামীর বোনেরা শিশুদের ফুফু হয়ে যায়। দুধ পানের কারণে তাদের সবার
পরস্পরের বৈবাহিক অবৈধতা স্থাপিত হয়ে যায়। বংশগত সম্পর্কের কারণে পরস্পর যেসব বিয়ে
হারাম হয়, দুধ পানের সম্পর্কের কারণে সেসব সম্পৰ্কীদের সাথে
বিয়ে করা হারাম হয়ে যায়।
তাই একটি বালক ও একটি বালিকা কোন মহিলার
দুধ পান করলে তাদের পরস্পরের মধ্যে বিয়ে হতে পারে না। এমনিভাবে দুধভাই ও বোনের কন্যার
সাথেও বিয়ে হতে পারে না।
উকবা ইবন হারেস বলেন, তিনি আবি ইহাব ইবন আযীযের এক মেয়েকে বিয়ে করেন। এক মহিলা এসে বলল,
আমি উকবাকে এবং যাকে সে বিয়ে করেছে উভয়কে দুধ পান করিয়েছি। উকবা বললেন,
আমি জানি না যে, আপনি আমাকে দুধ পান করিয়েছেন।
এর পূর্বে আপনি আমাকে কখনো বলেননি। তারপর তিনি মদীনায় আসলেন এবং রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লামকে জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেনঃ
কিভাবে এটা সম্ভব অথচ বলা হয়েছে। তখন উকবা তার স্ত্রীকে পৃথক করে দিলেন এবং অন্য একজনকে
বিয়ে করেন। [বুখারীঃ ৮৮]
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
حَدَّثَنَا مُسْلِمُ بْنُ إِبْرَاهِيْمَ
حَدَّثَنَا هَمَّامٌ حَدَّثَنَا قَتَادَةُ عَنْ جَابِرِ بْنِ زَيْدٍ عَنْ ابْنِ
عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم فِيْ
بِنْتِ حَمْزَةَ لَا تَحِلُّ لِيْ يَحْرُمُ مِنْ الرَّضَاعِ مَا يَحْرُمُ مِنْ
النَّسَبِ هِيَ بِنْتُ أَخِيْ مِنْ الرَّضَاعَةِ
ইবনু ‘আববাস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি
বলেন, নাবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) হামযাহর মেয়ে সম্পর্কে
বলেছেন, সে আমার জন্য হালাল নয়। কেননা বংশ কারণে যা হারাম হয়,
দুধ পানের সম্পর্কের কারণেও তা হারাম হয়, আর সে
আমার দুধ ভাইয়ের মেয়ে। (বুখারী শরীফ ২৬৪৫.৫১০০) (মুসলিম ১৭/৩, হাঃ ১৪৪৭, আহমাদ ১৯৫২) (আধুনিক প্রকাশনীঃ ২৪৫৩,
ইসলামিক ফাউন্ডেশনঃ ২৪৬৯)
সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১.জ্বী তারা সবাই আপনার দুধ ভাই ।
২.জ্বী তারা আপনার মাহরাম হবে।
৩. মাহরামদের সামনে মহিলাদের সতর হল, মাথা, চুল, গর্দান, কান, হাত, পা, টাখনু, চেহারা,ঘাড় গর্দান সংশ্লিষ্ট
সিনার উপরের অংশ ছাড়া বাকি পূর্ণ শরীর সতর। {ফাতাওয়া হিন্দিয়া-৫/৩২}
সুতরাং মাহরাম পুরুষ দের সামনে এসব অঙ্গ
প্রকাশ পেলে কোনো গুনাহ হবেনা। তবে তাকওয়ার খাতিরে তাদের সামনে মাথা ঢেকে যাওয়াই ভালো।তবে
তাদের সামনে মাথা ঢেকে না গেলে কোনো গুনাহ হবেনা।হ্যাঁ ফিতনার আশংকা থাকলে পর্দা করতে
হবে।
৪.তাদের বাবা আপনার দুধ বাবা।
৫.অন্যান্য মাহরামদের সাথে যেভাবে পর্দা
করতে হয় সেভাবে তার সামনেও পর্দা করতে হবে।
৬.নিজ ভাইয়ের মত দুধ ভাইও মাহরাম।সুতরাং
নিজ ভাইয়ের সাথে যেমন বৈবাহিক সম্পর্ক জায়েয নেই তেমনি দুধ ভাইয়ের সাথেও বৈবাহিক সম্পর্ক
হারাম।