আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
307 views
in সালাত(Prayer) by (18 points)
আসসালামুআলাইকুম, আমি যেখানে কাজ করি সেটা অনেক বড় একটা রুম।এই রুমের একটা দিকে আমরা কয়েকজন মিলে জামাত এ নামাজ আদায় করি।কিন্তু এ রুমের বিভিন্ন জায়গায় মানুষ এবং জীবজন্তুর ছবি টাঙানো এবং সাজানো আছে।তবে রুম বড় এবং  মাঝে মাঝে হালকা পার্টিশন থাকায় আমরা যেদিক এ নামাজ আদায় করি সেখান থেকে ছবি বা সাজানো জীবজন্তু গুলো তেমন দেখা যায় না।আর  আমরা যেদিকে নামাজ আদায় করি সেখানে ঈমাম এর সামনে বা পাশে কোন ছবি নাই কিন্তু মুক্তাদির একপাশে হাতে আকা প্রজাপতির ছবি টাঙানো আছে এবং খুবই ছোটো দুটো মাছের ছবি আছে।আমরা যেহেতু এখানে নিয়মিত নামাজ আদায় করি, এমতাবস্থায় আমাদের নামাজ কি হবে?? আমরা নামাজ এর পরিপূর্ণ সওয়াব কি পাব??? নাকি গুনাহ হবে?? বা নামাজ বাতিল হবে??

1 Answer

0 votes
by (59,970 points)

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

মানব বা প্রাণী আকৃতির পুতুল ও শোপিস ঘরে ঢুকানো আর মূর্তি প্রবেশ করানো একই বিধান। এসবই হারাম। 

 

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ রা. বলেনমক্কা বিজয়ের দিন যখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মক্কা নগরীতে প্রবেশ করলেন তখন বাইতুল্লাহর আশে পাশে তিনশ ষাটটি মূর্তি বিদ্যমান ছিল। তিনি প্রত্যেক মূর্তির দিকে হাতের লাঠি দিয়ে আঘাত করছিলেন এবং বলছিলেন:

جاء الحق وزهق الباطل، إن الباطل كان زهوقا، جاء الحق وما يبدئ الباطل وما يعيد.

সত্য এসেছেমিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয়ই মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল। সত্য আগমন করেছে আর মিথ্যা না পারে কোনো কিছু সূচনা করতেনা পারে পুনরাবৃত্তি করতে। (সহীহ বুখারী হা. ২৪৭৮৪২৮৭৪৭২০সহীহ মুসলিম হা. ১৭৮১)

 

আবদুল্লাহ ইবনে আববাস রা. বলেনরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বাইতুল্লাহ্য় প্রবেশ করে ইবরাহীম আ. ও মারইয়াম রা.-এর ছবি দেখলেন। তখন তিনি বললেনএঁরা তো (যাদের চিত্র এই লোকেরা অঙ্কন করেছে) (আল্লাহর এই বিধান) শুনেছেন যেফেরেশতারা সে গৃহে প্রবেশ করেন নাযাতে কোনো চিত্র থাকে। (সহীহ বুখারী হা. ৩৩৫১;সহীহ ইবনে হিববান  হা. ৫৮৫৮)

 

হযরত আমর ইবনে আবাসা রা. থেকে বর্ণিতনবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনআল্লাহ তাআলা আমাকে প্রেরণ করেছেন আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখারমূর্তিসমূহ ভেঙ্গে ফেলার এবং এক আল্লাহর ইবাদত করার ও তাঁর সঙ্গে অন্য কিছুকে শরীক না করার বিধান দিয়ে।’ (সহীহ মুসলিম হা. ৮৩২)

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রা. থেকে বর্ণিতনবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

إن الذين يصنعون هذه الصور يعذبون يوم القيامة يقال لهم : أحيوا ما خلفتم. 

‘যারা এই সব প্রতিকৃতি প্রস্ত্তত করে তাদেরকে কিয়ামতের দিন আযাবে নিক্ষেপ করা হবে। তাদেরকে বলা হবেযা তোমরা সৃষ্টি করেছিলে তাতে প্রাণ সঞ্চার কর।’ (সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫১সহীহ মুসলিম হা. ২১০৭)

 

আবু যুরআ রাহ বলেন-

دخلت مع أبي هريرة في دار مروان، فرأى فيها التصاوير، فقال : سمعت رسول الله صلى الله عليه وسلم يقول : قال الله عز وجل : ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي فليخلقوا ذرة، وليخلقوا حبة، أو ليخلقوا شعيرة.

আমি আবু হুরায়রা রা.-এর সঙ্গে মারওয়ানের গৃহে প্রবেশ করলাম। সেখানে কিছু চিত্র তাঁর দৃষ্টিগোচর হল। তিনি তখন বললেনআমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছিআল্লাহ তাআলা বলেন-

ومن أظلم ممن ذهب يخلق خلقا كخلقي

ওই লোকের চেয়ে বড় জালেম আর কে যে আমার সৃষ্টির মতো কোনো কিছু সৃষ্টি করতে চায়। (তাদের যদি সামর্থ্য থাকে তবে) সৃষ্টি করুক একটি কণাএকটি শষ্য কিংবা একটি যব! (সহীহ মুসলিম হা. ২১১১সহীহ বুখারী হা. ৫৯৫৩)

  

হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে বর্ণিতরাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন-

لا تدخل الملائكة بيتا فيه تماثيل أو تصاوير

ফেরেশতারা ওই ঘরে প্রবেশ করেন না যাতে মূর্তি বা ছবি রয়েছে।’ (সহীহ মুসলিম ২১১২)

আরো বিস্তারিত জানুন - https://ifatwa.info/4001/

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নোক্ত ক্ষেত্রে আপনারা  যদি নামাজের সঠিক নিয়ম-পদ্ধতি অনুসরণ করে নামাজ আদায় করেন,তাহলে তা কবুলও হবে এবং পরিপূর্ণ সওয়াবও পাবেন ইনশাআল্লাহ । তবে উক্ত ছবিগুলো সরিয়ে ফেলা উত্তম।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...