আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
314 views
in সুন্নাহ-বিদ'আহ (Sunnah and Bid'ah) by (61 points)
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ

১. আমাদের দেশে কেউ মারা গেলে তার জন্য মিলাদ, কুলখানি, চল্লিশা সহ নানান বিদাতের আয়োজন হয়ে থাকে। তো এক্ষেত্রে সেই মৃত ব্যাক্তি কি এসকল কারণে কোন শাস্তি পাবে?

২. রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের রুহানী সম্পর্কে কি পিতা নাকি ভাই। সূরা আহযাবের ৪০ নং আয়াতের প্রেক্ষিতে আমি জানতাম যে উনি কারো পিতা নন। আবার হাদীসেও দেখেছিলাম উনি আমাদের ভাই বলে সম্বোধন করেছেন। আর তাছাড়া কুরআন & হাদীসে যেমন আদম (আঃ) এবং ইবরাহীম (আঃ) আমাদের পিতা এসংক্রান্ত অনেক বর্ণনা রয়েছে কিন্তু রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদের পিতা এমন কোন বর্ণনা থাকলেও আমার জানা নেই। তাই আমার আক্বিদাহ ছিল উনি আমাদের পিতা নন কিন্তু একজন ইসলামী বই এর অনুবাদকের লিখায় পেয়েছি উনি আমাদের পিতা। এই বিষয়টি ক্লিয়ার হতে চাচ্ছিলাম।

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

ইসলামে মিলাদ, কুলখানি, চল্লিশা সহ নানান দিবসের কোন মূল্যই নেই। যদি মূল্য থাকতো, তাহলে রাসূল সাঃ নিজেই তা পালন করতেন। রাসূল সাঃ এর ছেলেগণ নবীজী সাঃ এর জীবদ্দশায় ইন্তেকাল করেছেন। কিন্তু নবীজী সাঃ কোন সন্তানের বেলায়ই উক্ত রুসুমগুলো পালন করেননি।

খলীফায়ে রাশেদীনসহ কোন সাহাবী নবীজী সাঃ এর জন্য উপরোক্ত রুসুমগুলো পালন করেননি। কোন মুহাদ্দিস, কোন মুফাসসির, কোন তাবেয়ী, কোন তাবে তাবেয়ী, কোন মুজতাহিদ ইমামগণ উক্ত রুসুম পালন করেননি।

কুরআন ও হাদীস বা ফিক্বহের কিতাবে এরকম রুসুমের কথা উল্লেখ নেই। তাই এসব পালন করা বিদআত। যে অনুষ্ঠান পালন বিদআত, সে অনুষ্ঠানে দান করাও জায়েজ নেই।

তবে মৃতের জন্য এমনিতে দুআর আয়োজন করা যেতে পারে নির্দিষ্ট দিনের পাবন্দী না করে। যেকোন দিন মৃতের ঈসালে সওয়াবের জন্য গরীবদের খাওয়ানো যায়। দান-সদকা করা যেতে পারে। কুরআন পড়ে ঈসালে সওয়াব করা যেতে পারে। কিন্তু ৩য়, ২১ বা চল্লিশা বা মৃত্যুবার্ষিকী ইত্যাদি তারিখ নির্ধারণ পূর্বক এসব রুসুম পালন বিধর্মীর অনুসরণের কারণে নিষিদ্ধ।

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ»

হযরত ইবনে ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি যে জাতির সাদৃশ্য গ্রহণ করে, সে তাদেরই অন্তর্ভূক্ত। {সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৪০৩১, মুসনাদুল বাজ্জার, হাদীস নং-২৯৬৬, মুসনাদুশ শিহাব, হাদীস নং-৩৯০, মুসনাদুশ শামীন, হাদীস নং-১৮৬২, আলমুজামুল আওসাত, হাদীস নং-৮৩২৭, মুসান্নাফ ইবনে আবী শাইবা, হাদীস নং-৩৩০১৬}

ঈসালে সওয়াব সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন :

https://www.ifatwa.info/3565

https://www.ifatwa.info/1044

* সমস্ত মানুষ হযরত আদম ও হাওয়া আলাহিস সালাম এর সন্তান। সেই হিসেবে সকল ধর্মবর্ণের মানুষ পরস্পর ভাই ভাই।

যেমন ইবরাহিম আলাহিস সালাম তার বিবি সারা এর ব্যাপারে বলেছিলেন, তিনি তার বোন। (বুখারি, হাদিস নং-৩৩৫৮, সহিহ মুসলিম, হাদিস নং-২৩৭১)

আদম আলাহিস সালামের সন্তান হিসেবে মানুষ পরস্পর সবাই ভাই ভাই। নারী পুরুষ সবাই ভাই বোন।কুরআনে কারিমে মুসলমানদের পরস্পর ভাই ভাই বলে সম্বোধন করা হয়েছে,

إِنَّمَا الْمُؤْمِنُونَ إِخْوَةٌ [٤٩:١٠]

মুমিনরা তো পরস্পর ভাই-ভাই। (সূরা হুজুরাত-১০)

সেই সাথে নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উম্মতে মুহাম্মদির রূহানি পিতা। তার বিবিগণ মুমিনদের রুহানী আম্মাজান।

কুরআনে ইরশাদ হয়েছে,

النَّبِيُّ أَوْلَىٰ بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ ۖ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ ۗ [٣٣:٦]

নবি মুমিনদের নিকট তাদের নিজেদের অপেক্ষা অধিক ঘনিষ্ঠ এবং তাঁর স্ত্রীগণ তাদের মাতা। (সূরা আহযাব-৬)

উপরোক্ত আলোচনা দ্বারা একথা পরিস্কার হল যে, প্রতিটি মানুষ পরস্পর ভাই ভাই আদম আলাহিস সালামের সন্তান হিসেবে। পুরুষ নারী পরস্পর ভাই বোন আদম ও হাওয়া আলাইহি সালামের সন্তান হিসেবে।

আর মুসলমানগণ আলাদাভাবে আরো গভীর ভাই ভাই মুসলিম হিসেবে। আর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের উম্মত হিসেবে নবি আমাদের রূহানী পিতা আর তার সম্মানিতা স্ত্রীগণ মুমিনদের আম্মাজান।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

১.যদি মৃত ব্যক্তি তার মৃত্যুর পূর্ব থেকেই উক্ত বিদআত কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকে এবং তার মৃত্যুর পর তিনদিান, চল্লিশা,কুলখানী ইত্যাদী করার অসিয়ত করে যায় তাহলে তার মৃত্যুর পরে উক্ত কুসংস্কার কাজগুলো যারা করবে তারাও গুনাহগার হবে এবং মৃত ব্যক্তি অসিয়ত করার কারণে সেও গওনাহগার হবে। তবে যদি মৃত ব্যক্তি উক্ত কাজগুলি নিজেও অপছন্দ করে থাকে এবং তার মৃত্যুর পর সেগুলি না করার অছিয়ত করে যায় তাহলে পরবর্তিতে যারা উক্ত বেদআতী কাজ করবে তারা গুনাহগার হবে কিন্তু মৃত ব্যক্তির কোন গুনাহ হবে না।

২. নবিজী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আদম আলাইহি সালামের সন্তান এবং মুসলমানদের নবী হিসেবে সমস্ত মুসলমানদের ভাই।আবার তিনি নবী হিসেবে উম্মতের রূহানী পিতাও। তেমনি নবীজীর স্ত্রীগণ মুসলিম হিসেবে সমস্ত মুসলমানদের বোন। আবার নবীজীর স্ত্রী হিসেবে সমস্ত মুমিনদের আম্মাজান।এটা শুধুই দৃষ্টিকোণ হিসেবে পার্থক্য।সুতরাং রাসূলুল্লাহ সাঃ কে রুহানি পিতা বলা অসংগত হবে না।বলা যেতে পারে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...