আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
229 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (51 points)
reshown by
আসসালামু আলাইকুম
আমি ও আমার কিছু বন্ধু একটি সামরিক আবাসিক প্রতিষ্ঠানে শিক্ষারত আছি৷ মৌলিকভাবে দ্বিন পালনের যথোপযুক্ত পরিবেশ এখানে খুব একটা না থাকলেও আমরা গুরুত্বপূর্ণ হুকুম আহকাম পরিপূর্ণ ভাবে মেনে চলার চেষ্টা করি ও ক্ষুদ্র পরিসরে দাওয়াহ কার্য চালানোর চেষ্টা করি।
কিন্তু বর্তমানে একটি বিষয়ে আমরা বেশ দ্বিধা দ্বন্দে আছি।  আসন্ন কিছু জাতীয় দিবস ও জন্মদিন দিবস উপলক্ষে আমাদের প্রতিষ্ঠানে প্রীতি ফুটবল খেলা আয়োজন করা হয়েছে।  একজন মুসলিম হিসেবে এরকম দিবস পালন করা যথার্থ বিয় বলেই জানি। তবে সমস্যা এই যে,

১। ফুটবল টিম এর মূল খেলোয়াড় দের মধ্যে আমরা বেশ কয়েকজন আছি এবং প্রতিষ্ঠান এর সবাই আমাদের খেলার ব্যাপারে জানে৷ যেহেতু সামরিক প্রতিষ্ঠান,  তাই এরকম হঠাৎ অনুপস্থিতি আমাদের ব্যাপারে সন্দেহের যোগান দিতে পারে।
২। আমরা শুরুতে খেলবো না বলে দেবার পর দলের বাকি সদস্য দের সাথে মনোমালিন্য তৈরি হয়েছে এবং দাওয়াতি কার্যক্রম এ কিছুটা সমস্যা দেখা দিচ্ছে।

এমতাবস্থায় আমাদের পক্ষে করণীয় কি হতে পারে? এবং এরকম কিছু হতে পারে কি, যেঃ

আমরা দুই দলের মোট ৪০ জন সদস্য কে এই নিয়িত করতে বললাম যে আমরা কেবল নিছক শারীরিক উৎকর্শ সাধনের জন্য এই ম্যাচ খেলবো এবং কোনো জন্মদিন পালন আমাদের উদ্দেশ্য নয়।

আশা করি পুরো ব্যাপারটা বোঝাতে পেরেছি।  আপনাদের উত্তর এর ভিত্তিতে আমরা কাজ করবো ইন শা আল্লাহ এবং একটু দ্রুত উত্তর পেলে উপকৃত হবো কেননা দিনটি কাছে ঘনিয়ে এসেছে।

1 Answer

0 votes
by (574,050 points)
জবাব
وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته 
بسم الله الرحمن الرحيم 


খেলা-ধুলা মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী। বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়। 

একদিন দু’জন আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি যে, প্রত্যেক বস্ত্ত যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (لَهْو) … (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)। 
এতে বুঝা যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন, ‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায় ৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)। 

হাদীস শরীফে এসেছে  
عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: من حسن إسلام المرء ترکہ ما لا یعنیہ۔ (سنن الترمذي، أبواب الزہد / باب ما جاء من تکلّم بالکلمۃ لیضحک الناس ۲؍۵۸ رقم: ۲۲۱۷، شعب الإیمان للبیہقي ۴؍۲۵۵، المعجم الکبیر ۳؍۱۲۸ رقم: ۲۸۸۶)

রাসুল সাঃ বলেন যে ইসলামের সৌন্দর্যতা হলো অনর্থক কাজ করা থেকে বিরত থাকা।

قال العلامۃ الحصکفي: کل ما أدی إلی ما لا یجوز؛ لا یجوز۔ (الدر المختار، کتاب الحظر والإباحۃ / فصل في اللبس ۶؍۳۶۰ دار الفکر بیروت) 

যেই কাজ নাজায়েজ দিকে ধাপিত করে,সেটাও নাজায়েজ হয়ে যায়।

আরো জানুনঃ 

★প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই,   
সুতরাং প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে ফুটবল খেলা যদি নামায বা ফরয ইবাদত ও লেখাপড়াকে ক্ষতিগ্রস্ত না করে,তাতে যদি বাদ্য-বাজনা না থাকে,হারাম কিছু (জুয়া,ছতর খোলা) না থাকে, গায়রে মাহরাম মহিলারা যদি সেখানে না থাকে,  তাহলে এ খেলার অনুমোদন দেয়া যেতে পারে। এবং উক্ত খেলাগুলি যদি জুয়া হিসেবে খেলা না হয়, বরং তৃতীয় পক্ষ থেকে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয় যাতে 
 উভয় পক্ষের প্লেয়ার বা তাদের কর্তৃপক্ষের কোনো টাকা ইত্যাদি না দিতে হয়,এবং উপরোক্ত শর্ত গুলো  পুরোপুরি মানা হয়, তাহলে জায়েজ আছে। 

খেলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানুনঃ 

★তাই প্রশ্নে উল্লেখিত ছুরতে উপরোক্ত শর্তসমূহ মেনে আপনারা ফুটবল খেলতে পারবেন। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

------------------------
মুফতী ওলি উল্লাহ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...