আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
272 views
in ব্যবসা ও চাকুরী (Business & Job) by (15 points)
আসসালামু আলাইকুম,
উস্তাদ, আমার এক বন্ধুর রেস্তোরা রয়েছে। সেইখানে তারা দুইজন মিলে রেস্তোরাটি প্রতিষ্ঠা করে। সেইখানে ১ম জন শুধু ১০% ইনভেস্ট করেছে কিন্তু কোনো কাজ করে না শুধু মাসে শেষে লাভ বা লসের হিসাব মাফিক টাকা নিয়ে যায়। বাকি ৯০% আমার বন্ধুর। এখন সে আমাকে সেই রেস্তোরার সকল কাজ বুঝিয়ে দিতে চাচ্ছে যেহেতু সে কিছু লসের জন্য বেশ হতাশাগ্রস্থ। বিনিময়ে সে আমাকে ৪৫% দিতে চাচ্ছে। কিন্তু সে আমাকে বিভিন্ন কাজে সাহায্যও করতে চাচ্ছে। এই পদ্ধতি আমার জানামতে জায়েজ হবে না। এখন আমি জানতে চাচ্ছি যে এই অবস্থা কি জায়েজ হবে? যদি না হয় তবে যদি কিছু উপায় বলে দিতেন খুব উপকার হত।
(উল্লেখ্য যে, আমার এইখানে কোনো টাকা ইনভেস্ট করা নাই, আমার বন্ধু আমাকে শুধু সময় আর শ্রমই ইনভেস্ট হিসেবে ধরতে চাচ্ছে।)

1 Answer

0 votes
by (59,730 points)
edited by

ওয়া আলাইকুমুস সালাম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

অর্ধেক বা এর কাছাকাছি পরিমান ফসলের শর্তে ভাগে চাষাবাদ করা। হাদীস শরীফে এসেছেঃ

   

عَنْ نَافِعٍ، أَنَّ عَبْدَ اللَّهِ بْنَ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ أَخْبَرَهُ أَنَّ النَّبِيَّ صلى الله عليه وسلم عَامَلَ خَيْبَرَ بِشَطْرِ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا مِنْ ثَمَرٍ أَوْ زَرْعٍ، فَكَانَ يُعْطِي أَزْوَاجَهُ مِائَةَ وَسْقٍ ثَمَانُونَ وَسْقَ تَمْرٍ وَعِشْرُونَ وَسْقَ شَعِيرٍ، فَقَسَمَ عُمَرُ خَيْبَرَ، فَخَيَّرَ أَزْوَاجَ النَّبِيِّ صلى الله عليه وسلم أَنْ يُقْطِعَ لَهُنَّ مِنَ الْمَاءِ وَالأَرْضِ، أَوْ يُمْضِيَ لَهُنَّ، فَمِنْهُنَّ مَنِ اخْتَارَ الأَرْضَ وَمِنْهُنَّ مَنِ اخْتَارَ الْوَسْقَ، وَكَانَتْ عَائِشَةُ اخْتَارَتِ الأَرْضَ.

 

 আবদুল্লাহ ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেন যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খায়বারবাসীদেরকে উৎপাদিত ফল বা ফসলের অর্ধেক ভাগের শর্তে জমি বর্গা দিয়েছিলেন। তিনি নিজের সহধর্মিণীদেরকে একশ’ ওসক দিতেন, এর মধ্যে ৮০ ওসক খুরমা ও ২০ ওসক যব। উমর (রাঃ) (তাঁর খিলাফতকালে খায়বারের) জমি বণ্টন করেন। তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সহধর্মিণীদের ইখতিয়ার দিলেন যে, তাঁরা জমি ও পানি নিবেন, না কি তাদের জন্য ওটাই চালু থাকবে, যা নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর যামানায় ছিলো। তখন তাদের কেউ জমি নিলেন আর কেউ ওসক নিতে রাযী হলেন, আয়িশা (রাঃ) জমিই নিয়েছিলেন। (বুখারী ২১৭৭)

 

حَدَّثَنَا مُسَدَّدٌ، حَدَّثَنَا يَحْيَى بْنُ سَعِيدٍ، عَنْ عُبَيْدِ اللَّهِ، حَدَّثَنِي نَافِعٌ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ ـ رضى الله عنهما ـ قَالَ عَامَلَ النَّبِيُّ صلى الله عليه وسلم خَيْبَرَ بِشَطْرِ مَا يَخْرُجُ مِنْهَا مِنْ ثَمَرٍ أَوْ زَرْعٍ.

 

মুসাদ্দাদ (রহঃ) ... ইবনু উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উৎপাদিত ফল কিংবা ফসলের অর্ধেক শর্তে খায়বারের জমি বর্গা দিয়েছিলেন। (বুখারী ২১৭৮)

 

وَقَالَ قَيْسُ بْنُ مُسْلِمٍ عَنْ أَبِي جَعْفَرٍ قَالَ مَا بِالْمَدِينَةِ أَهْلُ بَيْتِ هِجْرَةٍ إِلاَّ يَزْرَعُونَ عَلَى الثُّلُثِ وَالرُّبُعِ. وَزَارَعَ عَلِيٌّ وَسَعْدُ بْنُ مَالِكٍ وَعَبْدُ اللَّهِ بْنُ مَسْعُودٍ وَعُمَرُ بْنُ عَبْدِ الْعَزِيزِ وَالْقَاسِمُ وَعُرْوَةُ وَآلُ أَبِي بَكْرٍ وَآلُ عُمَرَ وَآلُ عَلِيٍّ وَابْنُ سِيرِينَ. وَقَالَ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ الأَسْوَدِ كُنْتُ أُشَارِكُ عَبْدَ الرَّحْمَنِ بْنَ يَزِيدَ فِي الزَّرْعِ. وَعَامَلَ عُمَرُ النَّاسَ عَلَى إِنْ جَاءَ عُمَرُ بِالْبَذْرِ مِنْ عِنْدِهِ فَلَهُ الشَّطْرُ، وَإِنْ جَاءُوا بِالْبَذْرِ فَلَهُمْ كَذَا. وَقَالَ الْحَسَنُ لاَ بَأْسَ أَنْ تَكُونَ الأَرْضُ لأَحَدِهِمَا فَيُنْفِقَانِ جَمِيعًا فَمَا خَرَجَ فَهْوَ بَيْنَهُمَا، وَرَأَى ذَلِكَ الزُّهْرِيُّ. وَقَالَ الْحَسَنُ لاَ بَأْسَ أَنْ يُجْتَنَى الْقُطْنُ عَلَى النِّصْفِ. وَقَالَ إِبْرَاهِيمُ وَابْنُ سِيرِينَ وَعَطَاءٌ وَالْحَكَمُ وَالزُّهْرِيُّ وَقَتَادَةُ لاَ بَأْسَ أَنْ يُعْطِيَ الثَّوْبَ بِالثُّلُثِ أَوِ الرُّبُعِ وَنَحْوِهِ. وَقَالَ مَعْمَرٌ لاَ بَأْسَ أَنْ تَكُونَ الْمَاشِيَةُ عَلَى الثُّلُثِ وَالرُّبُعِ إِلَى أَجَلٍ مُسَمًّى

 

কাইস ইব্ন মুসলিম (র.) আবূ জা’ফর (রা.) থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, মদীনাতে মুহাজিরদের এমন কোন পরিবার ছিল না, যারা এক-তৃতীয়াংশ কিংবা এক-চতুর্থাংশ ফসলের শর্তে ভাগে চাষ করতেন না। আলী, সা’দ ইব্ন মালিক, আবদুল্লাহ্ ইব্ন মাসউদ (রা.) উমর ইব্ন আবদুল আযীয, কাসিম, উরওয়াহ (র.) এবং আবূ বকর, উমর ও আলী (রা.)-এর বংশধর এবং ইব্ন সীরীন (র.) ও ভাগে চাষ করেছেন। আবদুর রহমান ইব্ন আসওয়াদ (রা.) বলেন, আমি আবদুর রাহমান ইব্ন ইয়াযীদের ক্ষেতে শরীক ছিলাম। উমর (রা.) লোকদের সাথে এ শর্তে জমি বর্গা দিয়েছেন যে, উমর (রা.) বীজ দিলে তিনি ফসলের অর্ধেক পাবেন। আর যদি তারা বীজ দেয় তবে তাদের জন্য এই পরিমাণ হবে। হাসান (র.) বলেন, যদি ক্ষেত তাদের মধ্যে কোন একজনের হয়, আর দু’জনেই তাতে খরচ করে, তা হলে উৎপন্ন ফসল সমান হারে ভাগ করে নেয়ার মধ্যে কোন দোষ নেই। যুহরী (র.) ও এ মত পোষণ করেন। হাসান (র.) বলেন, আধা-আধি শর্তে তুলা চাষ করতে কোন দোষ নেই। ইবরাহীম, ইব্ন সীরীন, ‘আতা, হাকাম, যুহরী ও কাতাদা (র.) বলেন, তাঁতীকে এক-তৃতীয়াংশ কিংবা এক-চতুর্থাংশের শর্তে কাপড় বুনতে দেয়ায় কোন দোষ নেই। মা’মার (র.) বলেন, (উপার্জিত অর্থের) এক-তৃতীয়াংশ বা এক-চতুর্থাংশের শর্তে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য গবাদী পশু ভাড়া দেয়াতে কোন দোষ নেই।

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

প্রশ্নে উল্লেখিত সূরত জায়েজ আছে। তবে যদি কখনো লস হয় তাহলে লভ্যাংশ থেকে প্রথমে পরিশোধ করা হবে। তবুও যদি থাকে তারপর মূল টাকা থেকে পরিশোধ করা হবে। আর এই ক্ষেত্রে এই লসটা শুধু ইনভেস্টকারী দুজনের উপর পার্সেন হিসেবে যাবে। আর যে শুধু শ্রম দিচ্ছে  (আপনি) তার (ঐ হোটেল থেকে  প্রাপ্ত লভ্যাংশ ছাড়া) নিজের ঘর থেকে দেওয়া লাগবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)
by (15 points)
জাযাকাল্লাহ খইরান।

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...