ওয়া আলাইকুমুস সালাম
ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহু।
বিসমিল্লাহির রাহমানির
রাহিম।
জবাবঃ
আল্লাহ তায়ালা বলেন-
اَطِيْعُوا
للهَ وَاَطِيْعُوا الرَّسُوْلَ وَاُولِى الْاَمْرِ مِنْكُمْ
অনুবাদঃ আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর
এবং তোমাদের মধ্যে যারা আদেশ প্রদানকারী রয়েছে তাদেরও।
ব্যাখ্যাঃ এ আয়াতে তিনটি সত্বার আনুগত্যের
নির্দেশ দেয়া হয়েছে –
(১) আল্লাহর (কুরআনের) আনুগত্য,
(২) রসুলের (হাদীছের) আনুগত্য এবং
(৩) আদেশ দাতাগণের (ফিকহাবিদ মুজতাহিদ
আলিমগণ) আনুগত্য। اُوْلِى
الْاَمْرِ (উলিল
আমর) হলেন মুজতাহিদ আলিমগণই।মনে রাখতে হবে যে, এ আয়াতে
আনুগত্য বলতে শরীয়তের আনুগত্য বোঝানো হয়েছে।
এ আয়াতে এ বিষয়ের প্রতিও পরোক্ষ ইঙ্গিত রয়েছে
যে অনুশাসন তিন রকমের আছে, কতগুলো সরাসরি কুরআন থেকে সুস্পষ্টরূপে
প্রমাণিত। যেমন, অন্তঃসত্ত্বা নয়, এমন মহিলার
স্বামী মারা গেলে, তাকে ‘ইদ্দত’ পালন করতে হয়, এদের
প্রতি আল্লার নির্দেশ اَطِيْعُوْا اللهَ (আতীউল্লাহ)
থেকে এ অনুশাসন গৃহীত হয়েছে। আর কতগুলো অনুশাসন সরাসরি হাদীছ থেকে স্পষ্টরূপে
প্রমাণিত। উদাহরণ স্বরূপ, সোনা-রূপা নির্মিত অলংকার ব্যবহার পুরুষের
জন্য হারাম। এ ধরনের অনুশাসন মেনে চলার জন্য اَطِيْعُوْا الرَّسُوْلُ (আতীউর রসুল) বলা হয়েছে। আর কতকগুলো অনুশাসন
আছে যেগুলো স্পষ্টভাবে কুরআন বা হাদীছ থেকে প্রতীয়মান হয় না। যেমন স্ত্রীর সঙ্গে
পায়ুকামে লিপ্ত হওয়ার ব্যাপারটি অকাট্যভাবে হারাম হওয়ার বিধান। এ ধরনের অনুশাসন
মেনে চলার জন্য اُوْلِى
الْاَمْرِ مِنْكُمْ (উলীল আমরে মিনকুম) বলা হয়েছে। এ তিন রকম
শরীয়ত বিধির জন্য তিনটি আদেশ দেয়া হয়েছে।
তিনি অন্যত্র বলেন-
فَاسلُوْا اَهْلَ الذِّكْرِ اِنْ كُنْتُمْ لَا تَعْلَمُوْنَ
অনুবাদঃ হে লোক সকল! তোমাদের যদি জ্ঞান না
থাকে জ্ঞানীদেরকে জিজ্ঞাসা কর।
ব্যাখ্যাঃ এ আয়াত থেকে বোঝা গেল, যে যেই
বিষয়ে অবহিত নয়, সে যেন সেই বিষয়ে জ্ঞানীদের নিকট থেকে জেনে
নেয়। যে সব গবেষণালব্ধ মাসাইল বের করার ক্ষমতা আমাদের নেই, ঐগুলো
মুজতাহিদগনের নিকট থেকে জিজ্ঞাসা করে জেনে নিতে হবে। সুতরাং যে বিষয়ে আমরা জানি না, সেটা
সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা একান্ত প্রয়োজন।
★ সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
১. ফিকহের মত মাজহাব অনযায়ী
কুরআনের তাফসীরে তেমন কোনো পার্থক্য নেই , কয়েকটি মাসআলা বা
ব্যাখ্যা ছাড়া। আর এটা হয়েছে তাফসীরকারীর কারণে। কারণ তিনি হয়তো হানাফী মাজহাবের
অনুসারী অথবা অন্য মাজহাবের। তাই তিনি ঐ এক দুইটা মাসআলা বা ব্যাখ্যা নিজের মাজহাব
অনুযায়ী করেছেন।
২. আপনি তাফসীরে মারেফুল কুরআন পড়তে পারেন।
এর বাংলাও আছে। লেখক: মুফতী শফী রহ.। আর তিনি হানাফী মাজহাবের ছিলেন।
৩. একাধিক মুফতীর থেকে ফাতওয়া নেওয়া ঠিক নয়।
বরং প্রশ্নকারীর জন্য আবশ্যক হলো যোগ্য কোনো একজন মুফতীর থেকে ফাতওয়া নিয়ে তার উপর
আমল করা। তবে তার ফাতওয়ার বিষয়ে সন্দেহ হলে তখন অন্য কোনো যোগ্য মুফতীর কাছেও
জিজ্ঞাসা করা যাবে।