بسم الله الرحمن الرحيم
জবাব,
খেলা-ধুলা
মানুষের জন্মগত স্বভাব। এর উদ্দেশ্য সাময়িক শরীর চর্চা। যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
বয়স ভেদে মানুষের শরীর চর্চার ধরনের পরিবর্তন হয়। কিন্তু সাময়িক শরীর চর্চার বদলে যদি
তা কেবল সময়ের অপচয় হয়, স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হয়, যদি ঐ ব্যক্তি দ্বীন থেকে গাফেল হয়, দায়িত্ব বিস্মৃত
হয় বা তাতে জুয়া মিশ্রিত হয়, তখন ঐ খেলা হারামে পরিণত হয়।
একদিন দু’জন
আনছার ছাহাবী তীর নিক্ষেপ প্রতিযোগিতা করছিলেন। হঠাৎ একজন বসে পড়লেন। তখন অপরজন বিস্মিত
হয়ে বললেন, কি ব্যাপার। কষ্ট হয়ে গেল নাকি? জবাবে তিনি বললেন, ‘আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে বলতে শুনেছি
যে, প্রত্যেক বস্ত্ত যা আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়, সেটাই অনর্থক (لَهْو) … (নাসাঈ, ছহীহাহ হা/৩১৫)।
এতে বুঝা
যায় যে, বৈধ খেলাও যদি আল্লাহর স্মরণকে ভুলিয়ে দেয়,
তবে সেটাও জায়েয হবে না। ইমাম বুখারী (রহঃ) অনুচ্ছেদ রচনা করেছেন,
‘প্রত্যেক খেলা-ধুলা (لَهْو) বাতিল, যদি তা আল্লাহর আনুগত্য থেকে উদাসীন করে দেয়’ (ফাৎহুলবারী ‘অনুমতি গ্রহণ’ অধ্যায়
৭৯, অনুচ্ছেদ ৫২; ১১/৯৪ পৃঃ)।
হাদীস শরীফে
এসেছে
عن أبي ہریرۃ رضي اللّٰہ عنہ قال: قال رسول
اللّٰہ صلی اللّٰہ علیہ وسلم: من حسن إسلام المرء ترکہ ما لا یعنیہ۔ (سنن الترمذي،
أبواب الزہد / باب ما جاء من تکلّم بالکلمۃ لیضحک الناس ۲؍۵۸ رقم: ۲۲۱۷، شعب
الإیمان للبیہقي ۴؍۲۵۵، المعجم الکبیر ۳؍۱۲۸ رقم: ۲۸۸۶)
রাসুল সাঃ
বলেন যে ইসলামের সৌন্দর্যতা হলো অনর্থক কাজ করা থেকে বিরত থাকা।
قال العلامۃ الحصکفي: کل ما أدی إلی ما لا یجوز؛
لا یجوز۔ (الدر المختار، کتاب الحظر والإباحۃ / فصل في اللبس ۶؍۳۶۰ دار
الفکر بیروت)
যেই কাজ
নাজায়েজ দিকে ধাপিত করে,সেটাও নাজায়েজ হয়ে যায়।
আরো জানুনঃ
https://ifatwa.info/3102/
https://www.ifatwa.info/673
★ যেই খেলার
সাথে হারাম কিছু মিশ্রিত হয়, অথবা যার ফলাফল হারাম। যেমন কোন
খেলায় পর্দার লংঘন হওয়া , গান বাজনা অন্তর্ভুক্ত হওয়া,
জুয়া অন্তভুক্ত হওয়া ইত্যাদী। অথবা খেলাটি হারামের মাধ্যম হওয়া। অর্থাৎ
ঐ খেলাকে কেন্দ্র করে হারামের প্রচার প্রসার ঘটা। এই সব ক্ষেত্রে ঐ খেলায় অংশগ্রহন
সর্ম্পূন নাজায়েজ।
কিছু খেলা
আছে যা শর্ত সাপেক্ষে হালাল। শর্ত লংঘিত হলে হারাম। এই শ্রেনীর খেলা গুলোর মধ্যে আছে
ফুটবল, ক্রিকেট, টেনিস,
ভলিবল, ইত্যাদী। শর্তগুলো হল :
১. আল্লাহর
স্মরন থেকে গাফেল করতে পারবে না। যেমন খেলায় নির্ধারিত সময়ের কারনে সালাতে বিঘ্ন ঘটা।
খেলোয়াড় বা দর্শক উভয়ই।
২. খেলা
জুয়ামুক্ত হতে হবে।
৩.- এমন
কোন কিছুকে সম্মান করতে বাধ্য করা যার সম্মান ইসলাম করে না।
৪. পর্দা
লংঘন হতে পারবে না, খেলোয়াড়ারদের বা দর্শক উপস্থিতি যেখানে পর্দার
লংঘন নিশ্চিত করে।
৫. এই জাতীয়
খেলা খেলোয়াড়ের সম্মানের বিষয় হতে পারবে না।
৬. খেলোয়াড়ের
জীবিকার উপায় হতে পারবে না। অর্থাঃ খেলাকে পেশা হিসাবে নেওয়া যাবে না, বরং নিছক খেলা হিসাবেই রাখতে হবে।
বস্তুত
শর্তের কোন সীমাবদ্ধতা নেই। প্রকৃত বিষয় হল খেলা এমন কোন বিষয় নয় যার কারনে শরীয়তে
কোন বিধান লংঘনকে বরদাশত করা যেতে পারে, চাই তা খেলোয়াড়দের
মধ্যে হোক, আর আয়োজন কিংবা দর্শকদের মধ্যে হোক। অর্থাৎ ঐ খেলা
যদি নিশ্চিত ভাবে কোন হারামের দিকে মানুষকে প্রভাবিত করে তবে তা জায়েজ হবে না।
সু-প্রিয়
প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন/ভাই!
১.উপরোক্ত
শর্ত সাপেক্ষে টেনিস খেলা জায়েয আছে। তবে যদি তারা
উক্ত খেলাকে পেশা বানিয়ে টাকা উপার্জন করে তবে তা পরিহার করাই শ্রেয়।খেলাকে নিছক খেলা
হিসাবেই রাখতে হবে।
২.পর্দার
বিধান লঙ্ঘন করে উক্ত খেলা জায়েয হবে না।
৩.যদি আপনি
নিশ্চিত হোন যে তারা আপনাকে উক্ত খেলার ইকামের টাকা থেকেই গিফট দিচ্ছে তাহলে তা না নেওয়াই উচিত। তবে
অন্য হালাল টাকা দিয়ে ক্রয় করে কোন গিফট দিলে তা নেওয়া জায়েয আছে।
৪.যদি আপনার
স্বামীর ইনকাম হালাল হয় ও অধিকাংশ যৌথ উপার্জন যা দিয়ে সংসার চলে, হালাল হয় তাহলে সেক্ষেত্রে সবার খাওয়া পরাকে হারাম বলা যাবে না এবং তাদের উপার্জিত
টাকাকে হালাল টাকার সাথে মিশ্রিত না করাই উচিত । তবে আপনার দেবর এবং জা কে বুঝানোর চেষ্টা করতে হবে তারা যেন
উক্ত খেলাকে পেশা হিসেবে বেচে না নেই। আল্লাহ তাদের কে দ্বীনের সহীহ বুঝ দান করুন।