আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
289 views
in বিবিধ মাস’আলা (Miscellaneous Fiqh) by (45 points)
আসসালামু আলাইকুম

১. মুসলমান কিন্তু বেনামাযী খাদেমা। বললেও নামাজ পড়েনা। তার হাতের রান্না খাওয়া যাবে?

২. পরিবার এর আপন লোকজন বিশেষ করে মা, স্বামী সন্তান কে দ্বীনের কথা বললে এবং তারা না মানলে মহিলাদের ক্ষেত্রে কি করণীয়? যদি মন থেকে তাদের প্রতি বিরক্তি ভাব আসে তবুও যদি সবরের সাথে ঐ মহিলা তার কর্তব্য পালন করে যায় তবে কি ঐ মহিলার গুণাহ হবে যেহেতু সে তাদের মন থেকে পছন্দ করছেনা। না কি মন থেকে তাদের কে ভালোবাসা জরুরি?
৩. অনেক দাওয়াত দিলেও যদি পরিবারের লোকজন না মানে,না শুনে,কটু কথা বলে, রাগারাগি করে, দূরত্ব বাড়িয়ে দেয়,যদি বলে আর দাওয়াত দিও না তোমার কাজ তুমি করো, তাহলে কি দাওয়াত বন্ধ করে দিবে?
৪. এক মোবাইল থেকে আরেক মোবাইলে ব্যালেন্স ট্রান্সফার করলে একটা চার্জ কাটে। এটা কি সুদ হয়?

1 Answer

0 votes
by (59,040 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাব,

 হালাল খাবার বা বৈধ খাবার বে-নামাজি বাদ দিয়ে যদি কাফেরও রান্না করে, তাহলে সেটা খাওয়া জায়েজ। খাবারটা যদি হালাল হয় আর সেটা যদি অমুসলিম রান্না করে তাহলেও সেটা খাওয়া জয়েজ রয়েছে। যাঁরা মনে করেন বে-নামাজির হাতে খাওয়া যাবে না তাদের এই বক্তব্য ভিত্তিহীন।

বেনামাজির হাতের রান্নাকৃত খাবার খাওয়া বৈধ। তবে যেহেতু নামাজ ত্যাগ করা কবিরা গুনাহ, তাই তাদের নরম ভাষায়, হেকমতের সঙ্গে নামাজি বানানোর চেষ্টা করা ঈমানি দায়িত্ব। ( হিন্দিয়া : ৫/৩৪৩, ফাতাওয়ায়ে মাহমুদিয়া : ৫/২২৩

শাইখ বিন উছাইমিন (রহ.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়, আমার একজন অমুসলিম প্রতিবেশী আছে। কখনও কখনও বিভিন্ন উপলক্ষে সে আমাকে খাবার ও মিষ্টান্ন পাঠায়। এ খাবার আমি খাওয়া ও আমাদের বাচ্চাদের খাওয়ানো কি জায়েজ হবে?

জবাবে তিনি বলেন, ‘হ্যাঁ। যদি আপনি নিরাপদ মনে করেন, তাহলে কাফেরের দেওয়া হাদিয়া খাওয়া আপনার জন্য জায়েজ। কেননা নবী (সা.)-কে যে ইহুদি নারী ভেড়া হাদিয়া দিয়েছে এবং তিনি সেটা গ্রহণ করেছেন। যে ইহুদি তাকে তার ঘরে দাওয়াত করেছে, তিনি তার দাওয়াত গ্রহণ করেছেন এবং তার খাবার খেয়েছেন।

তাই কাফেরদের উপহার ও তাদের বাসায় খেতে কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু শর্ত হচ্ছে- নিরাপত্তার নিশ্চয়তা। যদি কোনো আশংকা থাকে, তাহলে তাদের দাওয়াত গ্রহণ করা যাবে না। অনুরূপভাবে আরেকটি শর্ত হচ্ছে, খাবার ও উপহারগুলো তাদের ধর্মীয় উপলক্ষ কেন্দ্রিক না হওয়া (যেমন- পূজা ও বড়দিন পালন ইত্যাদি ধরনের কোনো উপলক্ষ)। এই ধরনের অবস্থায় উপলক্ষকেন্দ্রিক তাদের উপহার গ্রহণ জায়েজ নেই। (ফাতাওয়া নুরুন আলাদ দারব: ২৪/২)

তিরমিজ শরীফ এবং আবু দাউদ শরীফে একটি হাদীস এসেছেঃ

 

عن عبداللہ بن مسعود قال قال رسول اللّٰہ ﷺ لما وقعت بنو اسرائیل فی المعاصی نھتھم علماؤھم فلم ینتھو افجالسوھم فی مجالسھم واکلوھم وشاربوھم فضرب اللّٰہ قلوب بعضھم ببعض فلعنھم علی لسان داؤد عیسیٰ بن مریم ذلک بما عصوا وکانوا یعتدون الحدیث رواہ الترمذی وابوداؤد۔

সারমর্মঃ বনী ইসরায়েলের নাফরমানদের সাথে সেই যামানার উলামায়ে কেরামগন খানা পিনা শুরু করেছিলেন,আল্লাহ তায়ালা হযরত দাউদ আঃ এর মাধ্যমে সেই কাজের প্রতি লা'নত করেছেন।

তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন তাদের বাসায় খাওয়াকে অপছন্দ করেননি,তারা বলেছেন যে সব সময় দ্বীনের দাওয়াতের উদ্দেশ্য খাবে।

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই!

১. বেনামাজীর রান্না করা খাবার খাওয়া নাজায়েজ নয়,বরং জায়েজ আছে।তবে কিছু উলামায়ে কেরামগন বলেছেন যে, যদি তাদেরকে নামাজের দাওয়াত দেওয়ার উদ্দেশ্য থাকে,তাহলে তার রান্না করা খাবার খাবে।আর যদি সেই উদ্দেশ্য না হয়,তাহলে তাকওয়ার খাতিরে না খাওয়াই উত্তম।      

,৩. তাদেরকে দাওয়াত দেওয়া তার দায়িত্ব কিন্তু তারা যদি তার কথা না শুনে নামাজ ছেড়ে দেয় বা কোন গোনাহ করে তাহলে এর শাস্তি তারাই ভোগ করবে। উক্ত মহিলাকে তার জিম্মাদারী আদায় করার কারণে তদেরকে দাওয়াত না দেওয়ার শাস্তি পাবে না। তবে তাদের প্রতি নিরাশ হবে না বরং আল্লাহ তায়ালার কাছে তাদের এসলাহের জন্য খূব বেশী দোয়া করবে যাতে আল্লাহ তাদের কে দ্বীনদার বানিয়ে দেন। এবং অত্যন্ত সবর ও হিকমতের সাথে তাদেরকে দ্বীনের দাওয়াত দিতেই থাকবে। এবং এক্ষেত্রে কোন তাড়াহুড়া করা যাবে না।

৪.জ্বী না এটা সুদ হবে না।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...