আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
130 views
in পবিত্রতা (Purity) by (4 points)
edited by
আসসালামু আলাইকুম।
কোন  একটা ছেলে- মেয়ের শর্তযুক্ত তালাকের মাধ্যমে সহবাসের পূর্বেই এক তালাক  বায়েন হয়ে  যায় প্রায়  এক বছর আগে।
অনেক মাস হয়ে যাওয়ায় মেয়েটার মনের  ভিতর  শয়তান  কর্তৃক বিভিন্ন  ওয়াসওয়াসা  আসতে থাকে, তাই সে  তার পূর্বের স্বামীকে একদিন জিজ্ঞেস  করে  সে তালাকের  শর্তের সাথে
যতবার- ততবার,যখন-তখন এসব উল্লেখ  করেছিলো কিনা ১০০% গ্যারান্টি দিয়ে  বলতে।

"সেই ছেলে উত্তর দিয়েছিল,সে এভাবে  কখনোও বলেছে বলে তার মনে পড়ে না।
তার স্মৃতিতে এমন কিছু   সে কখনোও বলছে এমন ধরা পরতেছে না।সেদিন তাকে দেখে মনে হয়েছিল সে আত্মবিশ্বাসের সাথেই বলেছিল।"

★এর কিছুদিন পর,ঐ মেয়েটা, ছেলেটাকে পুনরায়  ঐ একই প্রশ্ন আবার  মোবাইল  ফোনের মাধ্যমে  করে,এবার ছেলেটা বিরক্তিতে অথবা  রাগে অথবা  স্বাভাবিক  অবস্থায়  বলে আমি ১০০ % গ্যারান্টি না দিলে কি হবে?আমি ১০০% গ্যারান্টি দিতে পারবো না।★

"ঐ দিনই কয়েক ঘন্টা  পর মেয়েটা,ছেলেটাকে ফোন দিয়ে  বলে,তুমি প্রথম  দিন  যা বলেছো,আমি তাই ধরে নিবো,তোমাকে  আর কোনদিন  এসব নিয়ে আর কোন প্রশ্ন  করবো না।

ছেলেটা,মেয়েটার এই কথার প্রেক্ষিতে কোন প্রতিবাদ করে নাই, বরং ছেলেটা  বলেছে আমাকে এসব আর কোনদিন  জিজ্ঞেস  না করলেই  আমি খুশি। "

★★★ এখন  মেয়েটা কি ধরে নিবে??? ছেলেটা যে এমন কথা বললো,এখন মেয়েটা কি ধরে  নিবে????

মেয়েটার ও এমন কোন  কথা ছেলেটা বলেছিলো বলে,মনে পড়ে না।
মেয়েটা এমন কিছুই মনে করতে  পারে না,বেশি ভাবতে গেলে খালি ওয়াসওয়াসা  আসে।মনে হয় বলেছিলো নাকি বলে নাই,এরপর গা ঘেমে যায়,মাথা গরম  হয়ে  যায়, অস্থির  লাগে,কান্না আসে।
মেয়েটা যদি  পূূর্বের ঘটে যাওয়া তালাক  নিয়ে  আর কখনোও কোন আলোচনা,কোনো জিজ্ঞাসা তার  পূর্বের  স্বামীর সাথে না করে এতে কি কোন সমস্যা  হবে?

★★★তাদের  পুনরায়  বিয়ে  হলে,সেই মেয়েটা সেই কাজটা নির্ভয়ে করতে পারবে কি?

কোন  সমস্যা  হবে কি?

1 Answer

0 votes
by (58,830 points)
edited by

 

بسم الله الرحمن الرحيم

জবাবঃ-

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে বর্ণিত,তিনি বলেন,

ﻋﻦ ﺃﺑﻲ ﻫﺮﻳﺮﺓ ﺭﺿﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻨﻪ ﺃﻥ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠّﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠّﻢ ﻗﺎﻝ : ( ﻳَﺄْﺗِﻲ ﺍﻟﺸَّﻴْﻄَﺎﻥُ ﺃَﺣَﺪَﻛُﻢْ ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﻛَﺬَﺍ ﺣَﺘَّﻰ ﻳَﻘُﻮﻝَ ﻣَﻦْ ﺧَﻠَﻖَ ﺭَﺑَّﻚَ ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺑَﻠَﻐَﻪُ ﻓَﻠْﻴَﺴْﺘَﻌِﺬْ ﺑِﺎﻟﻠَّﻪِ ﻭَﻟْﻴَﻨْﺘَﻪِ ﻭﻓﻲ ﺭﻭﺍﻳﺔ ﻣﺴﻠﻢ : ( ﺁﻣﻨﺖ ﺑﺎﻟﻠﻪ ﻭﺭﺳﻠﻪ)

রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন,শয়তান তোমাদের কারো নিকট উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করে, এটা কে বানিয়েছে?ওটা কে বানিয়েছে?শেষ পর্যন্ত জিজ্ঞেস করে, খোদা-কে বানিয়েছে? যখন এমন অবস্থায় কেউ পতিত হবে,সে যেন আল্লাহর নিকট পানাহ চায়।এবং সাথে সাথে সে যেন উক্ত বিষয়ে চিন্তা করা থেকে বিরত থাকে।এক বর্ণনায় এসেছে সে যেন আ'মানতু বিল্লাহি ওয়া রুসুলিহি পড়ে নেয়।(সহীহ বোখারী-৩১০২,সহীহ মুসলিম-১৩৪)

হযরত আবু হুরায়রা রাযি থেকে অন্য এক বর্ণনায় এসেছে,

ﻋَﻦْ ﺃَﺑِﻲ ﻫُﺮَﻳْﺮَﺓَ ﻗَﺎﻝَ ( ﺟَﺎﺀَ ﻧَﺎﺱٌ ﻣِﻦْ ﺃَﺻْﺤَﺎﺏِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ﺻَﻠَّﻰ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﻭَﺳَﻠَّﻢَ ﻓَﺴَﺄَﻟُﻮﻩُ ﺇِﻧَّﺎ ﻧَﺠِﺪُ ﻓِﻲ ﺃَﻧْﻔُﺴِﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻳَﺘَﻌَﺎﻇَﻢُ ﺃَﺣَﺪُﻧَﺎ ﺃَﻥْ ﻳَﺘَﻜَﻠَّﻢَ ﺑِﻪِ ، ﻗَﺎﻝَ : ﻭَﻗَﺪْ ﻭَﺟَﺪْﺗُﻤُﻮﻩُ ؟ ﻗَﺎﻟُﻮﺍ : ﻧَﻌَﻢْ ، ﻗَﺎﻝَ : ﺫَﺍﻙَ ﺻَﺮِﻳﺢُ ﺍﻟْﺈِﻳﻤَﺎﻥِ )

কিছু সংখ্যক সাহাবায়ে কেরাম রাসূলুল্লাহ সাঃ এর নিকট এসে জিজ্ঞেস করলেন,আমাদের অন্তরে অনেক সময় মন্দ চিন্তাভাবনা চলে আসে।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন,এটা কি সম্ভব?তারা বলল, জ্বী হ্যা।রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, মাঝেমধ্যে এমন সন্দেহ মনে উঁকি দেয়াই হল, কামিল ঈমানের পরিচায়ক।(সহীহ মুসলিম-১৩২)

 

ইমাম নববী রাহ উক্ত হাদীসের ব্যখ্যায় লিখেন,

ﻣﻌﻨﺎﻩ ﺃﻥ ﺍﻟﺸﻴﻄﺎﻥ ﺇﻧﻤﺎ ﻳﻮﺳﻮﺱ ﻟﻤﻦ ﺃﻳﺲ ﻣﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻓﻴﻨﻜﺪ ﻋﻠﻴﻪ ﺑﺎﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ؛ ﻟﻌﺠﺰﻩ ﻋﻦ ﺇﻏﻮﺍﺋﻪ ، ﻭﺃﻣﺎ ﺍﻟﻜﺎﻓﺮ : ﻓﺈﻧﻪ ﻳﺄﺗﻴﻪ ﻣﻦ ﺣﻴﺚ ﺷﺎﺀ ، ﻭﻻ ﻳﻘﺘﺼﺮ ﻓﻲ ﺣﻘﻪ ﻋﻠﻰ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ، ﺑﻞ ﻳﺘﻼﻋﺐ ﺑﻪ ﻛﻴﻒ ﺃﺭﺍﺩ ، ﻓﻌﻠﻰ ﻫﺬﺍ ﻣﻌﻨﻰ ﺍﻟﺤﺪﻳﺚ : ﺳﺒﺐ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ : ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﺃﻭ ﺍﻟﻮﺳﻮﺳﺔ ﻋﻼﻣﺔ ﻣﺤﺾ ﺍﻹﻳﻤﺎﻥ ، ﻭﻫﺬﺍ ﺍﻟﻘﻮﻝ ﺍﺧﺘﻴﺎﺭ ﺍﻟﻘﺎﺿﻲ ﻋﻴﺎﺽ ...

অর্থাৎ শয়তান সে ব্যক্তিকেই প্ররোচনা দেয়,যাকে গোমরাহ করতে সে নিরাশ হয়ে যায়।সে কাউকে গোমরাহ করতে নিরাশ হয়ে গেলে সর্বশেষে সে মনে সন্দেহ ঢুকিয়ে দিতে চায়।

আর কাফিরের নিকট শয়তান যেকোনো থেকে যেহেতু আসতে পারে,তাই কাফিরকে প্ররোচনা দেয়ার কোনো প্রয়োজন তার থাকে না।কেননা সে যেকোনো সময় তার ইচ্ছামত কাফিরকে ব্যবহার করতে পারে।সুতরাং হাদীসের অর্থ হলো এই যে,ঈন্তরে ঈমানের দানা থাকার দরুণই শয়তান ঈমানদারদেরকে প্ররোচনা দিয়ে থাকে। এ বিষয়ে এটাই কাযী ঈয়ায রাহ এর পছন্দনীয় ব্যাখ্যা।(আল-মিনহাজ্ব-২/১৫৪)

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী বোন!

প্রশ্নেল্লিখিত বর্ণনানুপাতে যেহেতু আপনার স্বামী শর্তযুক্ত তালাকের ক্ষেত্রে যতবার- ততবার,যখন-তখন ইত্যাদী শব্দ উল্লেখ করেনি বলে স্বীকার করেছে, বিধায় উক্ত শর্তের কারণে পুনরায় তালাক পতিত হবে না । এবং এ সম্পর্কে আপনার মনের ভিতর যেই চিন্তা ভাবনা আসছে তা ওয়াসওয়াসার অন্তর্ভূক্ত। সুতরাং এমন পরিস্থিতিতে বেশী বেশী তওবা ও ইস্তেগফার করতে হবে যাতে অন্তরে কোন ওয়াসওয়াসা না আসে। আর উল্লেখিত বিষয়ে আপনার স্বামীকে পুনরায় প্রশ্ন করা আপনার জন্য উচিত হবে না ।   


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী মুজিবুর রহমান
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...