আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
473 views
in পরিবার,বিবাহ,তালাক (Family Life,Marriage & Divorce) by (12 points)
এক বোনের প্রশ্নঃ আমার জামাই আরেকটা বিয়ে করে আনলে আমি অই জামাইয়ের সাথে সংসার করব না, কিন্তু এইটা উচিত না।
কেন উচিত না? আমি চাইনা আমার জামাই আরেকটা বউ আনুক আমার খারাপ লাগবেই স্বাভাবিক।
............................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................................

1 Answer

0 votes
by (675,300 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।
জবাবঃ-
আলহামদুলিল্লাহ!
(এক)
একজন পুরুষ সর্বোচ্ছ চারজন মহিলা বিবাহ করতে পারবে এটা আল্লাহ তা'আলার বিধান। এটা আপনার বোনের পচন্দ-অপচন্দের বিষয় নয়। আল্লাহর হুকুমের আনুগত্যশীল থাকা উনার একান্ত কর্তব্য। এতে অনেক হেকমত নিহিত রয়েছে। যা আমাদের জন্য বুঝা প্রায় অসম্ভব।সচরাচর যে হেকমতটা আমরা বুঝি,তা হল,
দেখুনঃ
আদীকাল থেকে এখন পর্যন্ত সর্বদা মহিলাদের সংখ্যাই বেশী।এবং কিয়ামত পূর্ব পর্যন্ত এ ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে।এমনকি কিয়ামতের পূর্বে একজন পুরুষের গায়ে ৫০জন মহিলা হবে। অর্থ্যাৎ তখন ৫০ডাবল বেশী হবে নারী। এখন যদি আপনার বোন শুধু নিজের চিন্তা করে নিজ স্বামীর জন্য অন্য মহিলাকে অপচন্দ করে,তাহলে অন্যান্য অসহায় নিরাশ্রয় মহিলাদের কি অবস্থা হবে।বা আল্লাহ না করুক যদি উনার স্বামীর কিছু হয়ে যায় তাহলে অভিবাহিত পুরুষ সহজেই উনাকে বিবাহ করতে আগ্রহী হবে না। এটাই স্বাভাবিক। তখন কোনো বিবাহিত পুরুষের সাথে তাকে বিবাহ দেওয়া হবে।তখনএই বিবাহিত পুরুষের কাছে বিবাহ দেওয়াই উনার ইজ্জত-আব্রু রক্ষার উত্তম মাধ্যম হিসেবে বিবেচিত হয়।তাই শুধু নিজের চিন্তা না করে একজন মহিলার জন্য অপর  এক অসহায় বোনের চিন্তা করা উচিৎ।

ইসলাম পুরুষদেরকে বহু বিবাহের প্রতি নানাভাবে নিরুৎসাহিত করেছে। আল্লাহ তা'আলা বলেনঃ-
ﻭَﺇِﻥْ ﺧِﻔْﺘُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗُﻘْﺴِﻄُﻮﺍْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻴَﺘَﺎﻣَﻰ ﻓَﺎﻧﻜِﺤُﻮﺍْ ﻣَﺎ ﻃَﺎﺏَ ﻟَﻜُﻢ ﻣِّﻦَ ﺍﻟﻨِّﺴَﺎﺀ ﻣَﺜْﻨَﻰ ﻭَﺛُﻼَﺙَ ﻭَﺭُﺑَﺎﻉَ ﻓَﺈِﻥْ ﺧِﻔْﺘُﻢْ ﺃَﻻَّ ﺗَﻌْﺪِﻟُﻮﺍْ ﻓَﻮَﺍﺣِﺪَﺓً ﺃَﻭْ ﻣَﺎ ﻣَﻠَﻜَﺖْ ﺃَﻳْﻤَﺎﻧُﻜُﻢْ ﺫَﻟِﻚَ ﺃَﺩْﻧَﻰ ﺃَﻻَّ ﺗَﻌُﻮﻟُﻮﺍْ
আর যদি তোমরা ভয় কর যে, এতীম মেয়েদের হক যথাথভাবে পুরণ করতে পারবে না, তবে সেসব মেয়েদের মধ্যে থেকে যাদের ভাল লাগে তাদের বিয়ে করে নাও দুই, তিন, কিংবা চারটি পর্যন্ত। আর যদি এরূপ আশঙ্কা কর যে, তাদের মধ্যে ন্যায় সঙ্গত আচরণ বজায় রাখতে পারবে না, তবে, একটিই অথবা তোমাদের অধিকারভুক্ত দাসীদেরকে; এতেই পক্ষপাতিত্বে জড়িত না হওয়ার অধিকতর সম্ভাবনা।
(সূরা নিসা-০৩)

দেখুন উক্ত আয়াতে প্রথমেই বহুবিবাহের কথা বলা হচ্ছেনা। বরং বলা হচ্ছে যে এ'তিম মেয়েদের হক্ব পুরোপুরি ভাবে আদায় না করার ভয় হলে এক,দুই, তিন,চার পর্যন্ত মহিলাদেরকে বিবাহ করতে পারবে।
এবং সর্বশেষে বলা হচ্ছে, ন্যায়সঙ্গতা বজায় না রাখার আশংকা থাকলে, একটাই উত্তম।

হাদীস শরীফে এসেছে, যদি কেউ এক স্ত্রীর প্রতি জুকে যায়,তাহলে ক্বিয়ামতের দিন সে এক সাইট জুকে জুকে হাশরের ময়দানে ঘুড়বে।
একজন পুরুষ চারটা বিবাহ করলে, প্রতি মহিলাকে আলাদা প্লাট বা নিরিবিলি একটি স্বতন্ত্র ঘর দিতে হবে, যেখানে তারা তাদের ইচ্ছামত সময় অতিবাহিত করবে।এবং চারদিন পর একবার ঘুরে তার বারী বা পালা আসবে।সব স্ত্রী আলাদা আলাদা থাকবে।অনেকের স্বামী দশ বছর বিশ বছর বিদেশ থাকে, এখানে তো সে চারদিন পর একদিন পাচ্ছে।তাছাড়া মহিলাদের এমনিতেই প্রতি মাসে ১০দিন  পিরিয়ড চলে এই সময় সহবাস করা ক্ষতিকর, এখন পুরুষের সহবাসের প্রয়োজন হলে সে কোথায় যাবে।যদি দ্বিতীয় আরেকটি বিবি থাকে তাহলে সেখানে যাবে।
আপনার বোনকে বলবেনঃযেখানে মানুষের বিবেক-আকল অচল,সেখান থেকে ওহীর সূচনা।আর পুরুষের জন্য বহু বিবাহ ওহী দ্বারা প্রমাণিত।
পৃথিবীতে যত ধর্ম আছে কোথাও এক বিবাহের কথা নেই বরং যা ইচ্ছা তাই।একমাত্র কোরআন-ই যে এক বিবাহের কথা উত্তম বলা হয়েছে।

(দুই)
শরীয়তের বিধান মতে একাধিক স্ত্রীর মাঝে যদি ইনছাফ করতে পারে,তাহলে প্রয়োজনের স্বার্থে একাধিক বিবাহ করতে পারবে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন
فانكحوا ما طاب لكم من النساء مثنى وثلاث ورباع
তোমরা বিবাহ করবে নারীদের মধ্যে যাকে তোমার ভালো লাগে—দুই, তিন অথবা চার। আর যদি আশঙ্কা করো যে সুবিচার করতে পারবে না, তাহলে একজনকে (বিয়ে করো)।(সুরা : নিসা, আয়াত-৩)

দ্বিতীয় বিয়ে করার ইসলামী শর্ত বেশ কঠিন অনেক কড়া। আগের স্ত্রীর সব ধরনের হক আদায়ের পর নতুন বিয়ের পরেও সমান তালে সব অধিকার পালন করার আত্মবিশ্বাস থাকলেই কেবল যৌক্তিক কারণে দ্বিতীয় বিয়ে করা যায়।
قال اللہ تعالی:فإن خفتم ألا تعدلوا فواحدة الآیة (سورہ نسا، آیت:۳)
আল্লাহতায়ালা বলেন, একাধিক বিয়ের সুবিধা যাদের আছে, তারা যদি সম অধিকার বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভীত হও, তাহলে এক বিয়ে পর্যন্তই সীমাবদ্ধ থাক।
وَعَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ عَنِ النَّبِىِّ ﷺ قَالَ : «إِذَا كَانَتْ عِنْدَ الرَّجُلِ امْرَأَتَانِ فَلَمْ يَعْدِلْ بَيْنَهُمَا جَاءَ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَشِقُّه سَاقِطٌ». رَوَاهُ التِّرْمِذِىُّ وَأَبُوْ دَاودَ وَالنَّسَائِىُّ وَابْنُ مَاجَهْ وَالدَّارِمِىُّ
আবূ হুরায়রাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেনঃ যদি কোনো পুরুষের দু’জন সহধর্মিণী থাকে আর সে তাদের মধ্যে যদি ন্যায়বিচার না করে, তবে সে কিয়ামতের দিন একপাশ ভঙ্গ (অঙ্গহীন) অবস্থায় উঠবে। বিস্তারিত জানতে ভিজিট করুন-https://www.ifatwa.info/6683

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!
যেহেতু বহু বিবাহ করা কুরআন সমর্থিত একটি বিষয় , তাই বহু বিবাহ অস্থিত্বকে অস্বীকার করা বা বহু বিবাহের অস্থিত্বকে খাটো করে দেখা, এর অর্থ হল, কুরআনকে অবমাননা করা। আর কুরআন অবমাননা করলে যে কেউ কাফির হয়ে যায়, সুতরাং এমন বিদ্রুপাত্বক ব্যক্তি অবশ্যই কাফির বলে বিবেচিত হবে। তবে যদি কেউ বহু বিবাহ করার কিছু কিছু কু-ফল কে নিয়ে আলোচনা করে, অর্থা অনেকে বহু বিবাহ করার পর ইনসাফ করে না, এ সম্পর্কে কুরআনও সতর্ক করেছে, তাই ইনসাফ না হওয়ার আলোচনা করলে ঐ ব্যক্তি কাফির হবে না। 


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী ইমদাদুল হক
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

+2 votes
1 answer 6,511 views
...