بسم الله الرحمن
الرحيم
জবাব,
জীবিত অবস্থায় সম্পত্তি দিলে সেটাকে হেবা বলে,মৃতবরনের পর সম্পত্তির ভাগকে মিরাছ বলে।
ইসলামের উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী যদিও ছেলে-মেয়ের
প্রাপ্ত সম্পদে বৈষম্যের বিষয়টি স্বীকৃত এবং এই বিধান মহান রব্বুল আলামীনের পক্ষ থেকেই
প্রদত্ত, কিন্তু হেবাসূত্রে সম্পদ বণ্টনের
মাসআলা এর থেকে ভিন্ন। এখানে বৈষম্যের সুযোগ নেই। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি তার জীবদ্দশায়
নিজ সন্তানদের মাঝে সম্পদ বণ্টন করে তাহলে তার জন্য সব ছেলে-মেয়ের মাঝে সমানহারে সম্পদ
বণ্টন করা মুস্তাহাব।
মেয়েকেও ছেলের সমান সম্পদ দিবে। জুমহুর উলামায়ে
কেরাম বলেছেন, সম্পদ বণ্টনে
ছেলে-মেয়ের মাঝে বৈষম্য না করার বিষয়টি শরয়ী দলীলের আলোকে অধিক শক্তিশালী এবং অগ্রগণ্য
এবং এর ওপরই ফতোয়া।(ফাতাওয়া আলমগীরী ৪/৩০১; আলবাহরুর রায়েক ৭/৪৯০;
তাকমেলায়ে ফাতহুল মুলহিম ২/৭৫; কিতাবুন নাওয়াযেল
১২/১৮৫, ১৮৭)
হাদীস শরীফে এসেছেঃ
النُّعمَانِ بنِ بَشِيرٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا : أَنَّ أبَاهُ
أتَى بِهِ رَسُولَ اللهِ صلى الله عليه وسلم فَقَالَ: إِنِّي نَحَلْتُ ابْنِي
هَذَا غُلاَماً كَانَ لِي، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: أَكُلَّ
وَلَدِكَ نَحَلْتَهُ مِثْلَ هَذَا ؟» فَقَالَ: لاَ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى
الله عليه وسلم: فَأَرْجِعهُ وَفي رِوَايةٍ: فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه
وسلم: أَفَعَلْتَ هذَا بِوَلَدِكَ كُلِّهِمْ ؟ قَالَ: لاَ، قَالَ: اِتَّقُوا الله
وَاعْدِلُوا فِي أَوْلاَدِكُمْ فَرَجَعَ أَبِي، فَرَدَّ تِلْكَ الصَّدَقَةَ . وفي
روايةٍ : فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صلى الله عليه وسلم: «يَا بَشيرُ أَلَكَ وَلَدٌ
سِوَى هَذَا ؟» فَقَالَ: نَعَمْ، قَالَ: «أكُلَّهُمْ وَهَبْتَ لَهُ مِثْلَ هذَا ؟»
قَالَ: لاَ، قَالَ: فَلاَ تُشْهِدْنِي إِذاً فَإِنِّي لاَ أَشْهَدُ عَلَى جَوْرٍ
وفي روايةٍ : «لاَ تُشْهِدْنِي عَلَى جَوْرٍ» . وفي رواية : «أَشْهِدْ عَلَى هذَا
غَيْرِي !» ثُمَّ قَالَ: «أَيَسُرُّكَ أَنْ يَكُونُوا إِلَيْكَ فِي البِرِّ
سَواءً؟» قَالَ: بَلَى، قَالَ: «فَلا إِذاً» . متفق عليه
নু’মান
ইবনে বাশীর রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তাঁর পিতা তাঁকে নিয়ে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে
হাজির হয়ে বললেন, ‘আমি আমার এই ছেলেকে একটি গোলাম দান করেছি।
[কিন্তু এর মা আপনাকে সাক্ষী রাখতে বলে।]’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম জিজ্ঞাসা
করলেন, ‘‘তোমার সব ছেলেকেই কি তুমি এরূপ দান করেছ?’’ তিনি বললেন, ‘না।’ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, ‘‘তাহলে তুমি তা ফেরৎ নাও।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘তোমার সব ছেলের সঙ্গেই এরূপ ব্যবহার দেখিয়েছ?’’
তিনি বললেন, ‘না।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমাদের সন্তানদের
মাঝে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা কর। সুতরাং আমার পিতা ফিরে এলেন এবং ঐ সাদকাহ [দান] ফিরিয়ে নিলেন।’’
আর এক বর্ণনায় আছে, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম
বললেন, ‘‘হে বাশীর! তোমার কি এ ছাড়া অন্য সন্তান আছে?’’
তিনি বললেন, ‘জী হ্যাঁ।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাদের সকলকে কি এর মত দান দিয়েছ?’’
তিনি বললেন, ‘জী না।’ [রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি
ওয়াসাল্লাম] বললেন, ‘‘তাহলে এ ব্যাপারে আমাকে সাক্ষী মেনো না।
কারণ আমি অন্যায় কাজে সাক্ষ্য দেব না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘আমাকে অন্যায় কাজে সাক্ষী মেনো না।’’
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এ ব্যাপারে তুমি আমাকে ছাড়া অন্য কাউকে সাক্ষী
মানো।’’ অতঃপর তিনি বললেন, ‘‘তুমি কি এ কথায় খুশী হবে যে,
তারা তোমার সেবায় সমান হোক?’’ বাশীর বললেন,
‘জী অবশ্যই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে এরূপ করো না।’’
(সহীহুল বুখারী ২৫৮৬,
২৫৮৭, ২৬৫০, মুসলিম ১৬২৩,
তিরমিযী ১৩৬৭, নাসায়ী ৩৬৭২-৩৬৮৫, আবূ দাউদ ৩৫৪২,)
অন্য বর্ণনায় এসেছে হযরত নোমান ইবনে বশীর
(রাযি.) বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু
আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা (সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে)
তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করো। তোমাদের সন্তানদের মাঝে ইনসাফ করো।’(সহীহ বুখারী
: ১/৩৫২; সুনানে আবুদাউদ : ৩৫৪৪)
তাই হেবাসূত্রে সন্তানদের মাঝে সম্পদ বণ্টন
করার ক্ষেত্রে ইনসাফ এবং সমতার প্রতি লক্ষ্য রাখা খুবই জরুরী। এ জন্যই ইমাম আবু ইউসুফ
রহ. বলেছেন, স্বাভাবিকভাবে
সন্তানদের মাঝে সমানভাবে সম্পদ বণ্টন করা মুস্তাহাব হলেও যদি পিতার পক্ষ থেকে কোনো
সন্তানের ক্ষতিসাধনের ইচ্ছা থাকে তখন সমানভাবে সম্পদ বণ্টন করা ওয়াজিব।(ফাতাওয়া আলমগীরী
৪/৩৯১; উমদাতুল কারী ৬/১৪৬ বৈরুত)
সুপ্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনি ভাই/বোন!
১.মানুষ তার জীবদ্দশায় সমূহ সম্পত্তি বন্টন
করে দিতে পারবে। তখন সে তার ইচ্ছানুযায়ী বন্টন করবে।সে যাকে যা ইচ্ছা দিতে পারবে।তবে
কাউকে ঠকানোর নিয়ত তার থাকতে পারবে না। এবং সে কারো প্রতি জুলুমও করাতে পারবে না। হ্যা, তার উচিৎ এবং তার জন্য উত্তম যে, মৃত্যুর পর যেভাবে তার সম্পদ বন্টিত হবে,সে তার জীবদ্দশায়
সেভাবেই সম্পদকে বন্টন করে দিবে। জীবদ্দশায় সম্পদ বন্টন কালে ছেলে মেয়ের মাঝে সমতা
রাখাই শ্রেয়।
২. চুলে ফার্মেন্টেড রাইস ওয়াটার দেওয়াতে যদি
কোন শারীরিক ক্ষতি কারক দিক না থাকে বরং এটি যদি চুলের জন্যে খুব উপকারী হয়ে থাকে তবে
তা ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া যেতে পারে। কেননা, চালের পানিকে বদ্ধ কন্টেইনারে ২৪ঘন্টা রাখার কারণে তা মদের হুকুমে হয়ে যায়
না।