আইফতোয়াতে ওয়াসওয়াসা সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হবে না। ওয়াসওয়াসায় আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা ও করণীয় সম্পর্কে জানতে এখানে ক্লিক করুন

0 votes
308 views
in হালাল ও হারাম (Halal & Haram) by (19 points)
edited by
এমন ধরনের লটারি জায়েজ হবে, যেখানে ধরুন 100 জন 10 টাকা করে লটারি কিনলে বিজয়ী ৪০% পেল কিন্তু প্রত্যেকে 10 টাকা দিয়ে লটারি কেনার জন্য 10 টাকার ১০-২০% ক্যাশব্যাক পেল। অতএব সর্বশেষে সবাই কিছু না কিছু পেল।

এক্সাম্পেল হিসেবে ধরুন আমি 10 টাকা দিয়ে একটি লটারি কিনেছি কিন্তু লটারিতে বিজয়ী হয়নি তাই আমার দশ টাকার ১০-২০% আমাকে ক্যাশব্যাক করেছে।
এমন ধরনের লটারি জায়েয হবে?

1 Answer

0 votes
by (62,670 points)

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম।

জবাবঃ

১. প্রচলিত লটারীতে শরিয়তের নিষিদ্ধميسر  (জুয়া)-এর উপস্থিতি৷ জুয়া বলা হয় এমন লেনদেনকে যাতে এক পক্ষের ক্ষতির উপর অপরপক্ষের লাভবান হওয়া নির্ভর করে ৷ লটারীতে ঠিক এমনই ৷ কারণ লটারীতে কয়েকজন টাকা দিয়ে প্রবেশ আর যে কোনো একজন বিজয়ী হওয়ার মাধ্যমে সব টাকাগুলো নিয়ে যায়। আর অন্যরা তা থেকে মাহরুম হয়। সুতরাং এটা জুয়ার অন্তর্ভুক্ত যা নিষিদ্ধ ৷

আর জুয়া হারাম হওয়ার ব্যাপারে মহান আল্লাহ তা'আলা বলেন-

يا ايها الذين امنوا انما الخمر والميسر والانصاب والازلام رجس من عمل الشيطان فاجتنبوه لعلكم تفلحون.

"হে মুমিনগণ! মদ, জুয়া, মূর্তিপূজার বেদী ও ভাগ্য নির্ণায়ক শর ঘৃণ্য বস্তুশয়তানের কাজ৷ সুতরাং তোমরা উহা বর্জন কর- যাহাতে তোমরা সফলকাম হইতে পারো৷" (সূরা মায়িদা, আয়াত: ৯০)

 

২. শরিয়তের নিষিদ্ধ جهالة  ( অজ্ঞতা )- এর উপস্থিতি৷ লটারী মূলত সম্পদ বিনিময়ের এমন এক ধরনের চুক্তি যাতে মারাত্মক ধরনের جهالة  (অজ্ঞতা) রয়েছে৷ কেননা গ্রাহক লটারীতে অংশ গ্রহণ করে সম্ভাব্যের উপর ভিত্তি করে যা ঘটতে পারে, অর্থাৎ বিজয়ী হতেও পারে আবার নাও পারে। ফলে লটারীতে অংশ গ্রহণকারীর পরিমাণটা অজ্ঞাত থেকে যায়৷ আর লেনদেনের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো ان تكون العاقبة معلومة  অর্থাৎ পরিণামটা জ্ঞাত হওয়া৷ আর যে লেনদেনে অজ্ঞতা রয়েছে তা শরীয়তের দৃষ্টিতে অবৈধ৷ যেমন ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে-

...فبيع المجهول جهالة تفضي إليها غير صحيح.

"অতএব অস্পষ্ট বিষয় যাতে বিতর্কের সম্ভাবনা রয়েছে, তার লেনদেন চুক্তি অবৈধ৷"  

  (ফাতাওয়ায়ে হিন্দিয়া: ৩/২)

 

৩. শরীয়তের নিষিদ্ধ غرر (গারার)- এর উপস্থিতি৷

হাদীস শরীফে এসেছে- نهي عن بيع الغرر  অর্থাৎ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল লেনদেনে সব ধরনের غرر কে নিষিদ্ধ করেছেন৷( সহীহ মুসলিম:২/২)

 

ইমাম সারাখসী রহ. غرر এর সংজ্ঞা এভাবে দিয়েছেন যে,

ما يكون مستور العقبة.

অর্থাৎ যার পরিণাম অস্পষ্ট তা-ই গারার৷(আল মাবসূত:১২/১৯৪)

 

শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া রহ. বলেন-

الغرر هو مجهول العاقبة، فإن بيعه من الميسر الذي هو القمار.

"গারার হচ্ছে ঐ কারবার যার পরিণাম অনিশ্চিত৷ কারণ এর দ্বারা সেটা  ميسر  (মাইসির) এর অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায় যা জুয়ারই অপর নাম৷"  

(মাজআতুল ফাতাওয়া ইবনে তাইমিয়া:২৯/২২)

আর আমরা দেখি যে, লটারীতেও পরিণামটা  অস্পষ্ট থাকে৷ অংশগ্রহণকারীরা পাবে না পাবে না এটা অস্পষ্ট ও অনিশ্চিত৷ আর এটাই উল্লেখিত গারারের অন্তর্ভুক্ত যা হাদীস দ্বারা নিষিদ্ধ৷

 

সু-প্রিয় প্রশ্নকারী দ্বীনী ভাই/বোন!

 

না, প্রশ্নে বর্ণিত লটারীও জায়েজ হবে না। কারণ এখানেও শরীয়তের নিষিদ্ধ জুয়া, অজ্ঞতা ও গারার বিদ্যমান রয়েছে।


(আল্লাহ-ই ভালো জানেন)

--------------------------------
মুফতী আব্দুল ওয়াহিদ
ইফতা বিভাগ
Islamic Online Madrasah(IOM)

আই ফতোয়া  ওয়েবসাইট বাংলাদেশের অন্যতম একটি নির্ভরযোগ্য ফতোয়া বিষয়ক সাইট। যেটি IOM এর ইফতা বিভাগ দ্বারা পরিচালিত।  যেকোন প্রশ্ন করার আগে আপনার প্রশ্নটি সার্চ বক্সে লিখে সার্চ করে দেখুন। উত্তর না পেলে প্রশ্ন করতে পারেন। আপনি প্রতিমাসে সর্বোচ্চ ৪ টি প্রশ্ন করতে পারবেন। এই প্রশ্ন ও উত্তরগুলো আমাদের ফেসবুকেও শেয়ার করা হবে। তাই প্রশ্ন করার সময় সুন্দর ও সাবলীল ভাষা ব্যবহার করুন।

বি.দ্র: প্রশ্ন করা ও ইলম অর্জনের সবচেয়ে ভালো মাধ্যম হলো সরাসরি মুফতি সাহেবের কাছে গিয়ে প্রশ্ন করা যেখানে প্রশ্নকারীর প্রশ্ন বিস্তারিত জানার ও বোঝার সুযোগ থাকে। যাদের এই ধরণের সুযোগ কম তাদের জন্য এই সাইট। প্রশ্নকারীর প্রশ্নের অস্পষ্টতার কারনে ও কিছু বিষয়ে কোরআন ও হাদীসের একাধিক বর্ণনার কারনে অনেক সময় কিছু উত্তরে ভিন্নতা আসতে পারে। তাই কোনো বড় সিদ্ধান্ত এই সাইটের উপর ভিত্তি করে না নিয়ে বরং সরাসরি স্থানীয় মুফতি সাহেবদের সাথে যোগাযোগ করতে হবে।

Related questions

...