উত্তরঃ
بسم الله الرحمن الرحيم
বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য শর্ত হল মৌলিকভাবে দু’টি। যথা-
১-ইজাব কবুল হওয়া।
২-দুইজন মুসলিম প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন প্রাপ্ত বয়স্ক মহিলা উক্ত ইজাব কবুল স্বকর্ণে শুনা।
ব্যস উক্ত দু’টি শর্ত পাওয়া গেলেই বিয়ে সম্পন্ন হয়ে যায়।
যার পুরোপুরি ব্যাখ্যা হলোঃ-
স্বামী স্ত্রীকে ইজাব তথা প্রস্তাব দিবে বা কোন ব্যক্তিকে উকিল বানিয়ে স্বামীর পরিচয় ও দেনমোহর উল্লেখ করে প্রস্তাব দিবে, আর স্ত্রী সেই প্রস্তাবকে কবুল করবে। কিংবা স্ত্রী নিজে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে, কিংবা স্ত্রীর অনুমতিক্রমে তার উকীল গিয়ে স্বামীকে প্রস্তাব দিবে আর স্বামী তা কবুল করবে। আর উক্ত প্রস্তাব এবং কবুল বলার বিষয়টি উপস্থিত থেকে প্রাপ্ত বয়স্ক দুইজন মুসলিম পুরুষ বা একজন প্রাপ্ত বয়স্ক পুরুষ ও দুইজন মহিলা স্বকর্ণে শুনবে। তাহলেই শরয়ী দৃষ্টিকোণ থেকে বিবাহ শুদ্ধ হয়ে যাবে।
فى الدر المختار- ( و ) شرط ( حضور ) شاهدين ( حرين ) أو حر وحرتين ( مكلفين سامعين قولهما معا ) (الدر المختار ، كتاب النكاح،-3/9
অনুবাদ-বিবাহ সহীহ হওয়ার শর্ত হল শরীয়তের মুকাল্লাফ [যাদের উপর শরীয়তের বিধান আরোপিত হয়] এমন দুইজন আযাদ পুরুষ সাক্ষি বা একজন আযাদ পুরুষ ও দুইজন মহিলা সাক্ষি হতে হবে, যারা প্রস্তাবনা ও কবুল বলার উভয় বক্তব্য স্বকর্ণে উপস্থিত থেকে শুনতে পায়। {আদ দুররুল মুখতার-৩/৯, ফাতওয়ায়ে হিন্দিয়া-১/২৬৮}
,
,
★‘উকিল বাপ’ বাংলাদেশের সুপরিচিত একটি পরিভাষা। এখানে আছে দুটি শব্দ। উকিল ও বাপ। বাংলা একাডেমি ‘উকিল’ শব্দের অর্থ লিখেছে
১. আইন ব্যবসায়ী।
২. প্রতিনিধি, মুখপাত্র।
৩. মুসলমানদের বিয়েতে যে ব্যক্তি কনের সম্মতি নিয়ে বরকে জানায়। (বাংলা একাডেমি ব্যবহারিক বাংলা অভিধান, পৃষ্ঠা-১৪৭)।
আর ‘বাপ’ শব্দের অর্থ বাবা, পিতা, জন্মদাতা ও পিতৃস্থানীয় ব্যক্তি।
ইসলামে পবিত্র বিয়েবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য দুজন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ ও দুজন মহিলা সাক্ষী উপস্থিত থাকা বাধ্যতামূলক। এই সাক্ষীমণ্ডলীর একজনকে দেশীয় পরিভাষায় বলা হয় ‘উকিল বাপ’।
আমাদের দেশে এই ‘উকিল বাপ’ ও তাঁর আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে রক্তের সম্পর্কের মতো আচরণ করা হয়। অবলীলায় তাঁদের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাৎ করা হয়। অথচ ‘উকিল বাপ’ সংস্কৃতি ইসলামসম্মত নয়।
তারা যদি গায়রে মাহরাম হয়,তাহলে তাদের সাথে দেখা সাক্ষাৎ বা বিনা প্রয়োজনে কথা বলা জায়েজ নয়।
,
★উকীল বাপ বলতে ইসলামে কিছু নেই। এগুলো সামাজিক কুপ্রথা। এসব পরিত্যাগ করা উচিত। এসবের কোন ভিত্তি নেই।
,
★★উল্লেখ্যঃ
উকিল দ্বারা যদি ঐ ব্যক্তি বুঝানো হয়,যে মেয়ের কাছ থেকে ইজাবের অনুমতি নিয়ে মেয়ের পক্ষ থেকে বরকে প্রস্তাব পেশ করে,তাহলে শরয়ী দৃষ্টিকোন থেকে এটা কোনো সমস্যা নেই।
এটা যেকোনো ব্যক্তিই হতে পারবে।
তবে মাহরাম ব্যাক্তি হলেই বেশি ভালো হয়।
কারন এতে পর্দার কোনো সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা নেই।